এক লা ডেসিমা জপে এক দশক কাটিয়ে দিয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। আর আনডেসিমা আর ডুউডেসিমা কিনা টানা দুই বছরেই চলে এল! রহস্যটা লুকিয়ে একটি নামে, ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। পর্তুগিজ যুবরাজ রিয়ালের রাজা হয়ে উঠলেন আজ। আরেকটি রোনালদোময় রাতে জুভেন্টাসকে ৪-১ গোলে হারিয়ে দিয়েছে রিয়াল। টানা দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়নস লিগ জিতল রিয়াল। ইতিহাস হয়ে গেল তাতেই। চ্যাম্পিয়নস লিগ নামকরণের পর যে অভিশাপই লেগে গিয়েছিল। সেরা সেরা সব ক্লাব নিজেদের ইতিহাসের সেরা দল নিয়েও টান দুবার এ শিরোপা জিততে পারেনি। সেটা কাটল জিনেদিন জিদানের হাত ধরে। মাত্র দেড় বছর দলের দায়িত্বে থেকে দুটি চ্যাম্পিয়নস লিগ, নিজেও বোধ হয় এমন চিত্রনাট্য লেখার সাহস করতেন না জিদান! এ ম্যাচ যে গোলশূন্য হবে না সেটা জানাই ছিল। একদিকে টানা ৬৪ ম্যাচ গোল করার রেকর্ড নিয়ে মাঠে নেমেছে রিয়াল মাদ্রিদ। অন্যদিকে তাদের রক্ষণের যে অবস্থা, প্রতিপক্ষ তো গোল করবেই! হিগুয়েইন-দিবালা সমৃদ্ধ আক্রমণভাগ সেটা পারবে না? ম্যাচের আগেই ব্ল্যাক আইড পিজ যে গানে গানে বলে গেল, আই গট এ ফিলিং, দ্যাট টু নাইট গনা বি এ গুড নাইট!-সেটা যে মিথ্যা হতে পারে না! সেটাই হলো। পুরো টুর্নামেন্টে এর আগে মাত্র ৩ গোল খাওয়া জুভেন্টাস ৯০ মিনিটে হজম করল ৪ গোল! তবে প্রথমার্ধটা শেষ হয়েছিল ১-১ সমতায়। ২০ মিনিটে বাঁ প্রান্ত দিয়ে প্রতি আক্রমণে ওঠে রিয়াল। ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর পা হয়ে সে বল দানি কারভাহালের কাছে। কারভাহালের পাস আবার রোনালদোর কাছে। হালকা একটু জায়গা করে জোরালো শট, বোনুচ্চি-বুফনদের ফাঁকি দিয়ে বল জালে। এক গোলেই দুটো রেকর্ড হলো রিয়ালের। এ গোলেই নিশ্চিত হলো, এ মৌসুমে প্রতিটি ম্যাচেই অন্তত একটি গোল করেছে রিয়াল আর এটাই ছিল চ্যাম্পিয়নস লিগে (নাম পরিবর্তনের পর) রিয়ালের ৫০০তম গোল। তবে রিয়ালের সে আনন্দ থেমে গেল ৭ মিনিট পরে। মারিও মানজুকিচের অসাধারণ এক গোলে সমতা ফেরালো জুভেন্টাস। লেখা থাকবে এ গোলে সহায়তা করেছেন গঞ্জালো হিগুয়েইন। কিন্তু সত্যি হলো, গোলবারের উল্টোদিকে দাঁড়িয়ে যেভাবে বুক দিয়ে বল নামিয়ে বাই সাইকেল কিক নিলেন তাতে অন্য কারও অবদান আছে-এটা বলা যাচ্ছিল না। এ এমন এক গোল, যেটা ২০০২ সালে জিনেদিন জিদানের সেই অবিশ্বাস্য গোলকেও প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ফেলে দিতে পারে। এ দুই গোলের আগেই অন্য গোলদাতাকে দেখা যেতে পারত। ৬ মিনিটে রিয়াল বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া পিয়ানিচের শটটা অস্বাভাবিক দক্ষতায় কেইলর নাভাস ঠেকিয়ে না দিলে। প্রথমার্ধের বাকি সময় দুই দল অনেক চেষ্টা করেও ব্যবধান বাড়াতে পারেনি। সুযোগ সৃষ্টিতে এগিয়ে ছিল জুভেন্টাসই। দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য গল্পটা পাল্টে গেল। শুরু থেকেই আক্রমণে আক্রমণে জুভেন্টাসকে ত্রস্ত করে রেখেছে রিয়াল তবে ৬০ মিনিটে কাসেমিরোর গোলে ভাগ্যের সহায়তা ছিল। প্রায় ৩৫ মিটার দূর থেকে তাঁর নেওয়া শটে স্যামি খেদিরার পা ছুঁয়ে যাওয়াও অবদান রেখেছে। তবে কাসেমিরোর সেসব নিয়ে ভাবতে বয়েই গেছে। ৩ মিনিট পরেই ম্যাচটা আদতে শেষ করে দিয়েছেন রোনালদো। ডান প্রান্ত থেকে মডরিচের দুর্দান্ত ক্রসে এর চেয়ে দারুণ প্লেসিং, রিয়ালকে ৩-১ ব্যবধানে এগিয়ে দিলেন রোনালদো। এরপরও দারুণ আনন্দদায়ী ফুটবল খেলেছে দুই দল। যার শেষ হয়েছে মার্কো এসেনসিওর গোলে। এ যেন ভাগ্যেই লেখা ছিল। ইউরোপিয়ান সুপার কাপে তাঁর পা থেকেই মৌসুমের প্রথম গোল পেয়েছিল রিয়াল, মৌসুমের শেষ গোলও এল ৮২ মিনিটে বদলি নামা এই উইঙ্গারের পা থেকে। কিন্তু এ রাতটা যে রোনালদোর, এ রাতটা জিদানের। অসম্ভবকে সম্ভব করার স্বপ্ন দেখা এ দুজনই আজকের নায়ক। আর/০৭:১৪/০৪ জুন



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2rokfMB
June 04, 2017 at 01:51PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top