শিলিগুড়ি, ১৮ জুন- ঘটনাটা আজ থেকে ৪১ বছর আগের। সালটা ১৯৭৬। গোর্খা কাপ খেলতে ইস্টবেঙ্গলের হয়ে আমার প্রথমবার দার্জিলিঙে যাওয়া। তার আগে দার্জিলিং সম্পর্কে না জানি কত গল্প শুনেছি। আরাধনা ছবিতে রাজেশ খন্নার লিপে সেই গানটা মেরে সপ্নো কি রানি কব আয়েগি তু...। প্রথমবার দার্জিলিং যাওয়ার আগে আমি রীতিমতো রোমাঞ্চিত ছিলাম। দার্জিলিঙে হিমালয় একেবারে আলাদা। বলতে পারেন, নিজে হিমালয়ের ছেলে হয়েও দার্জিলিঙের সৌন্দর্যে আমি বাক্যহারা হয়ে পড়েছিলাম। সবচেয়ে বেশি অভিভূত হয়েছিলাম, ওখানকার মানুষের আন্তরিকতায়। আমার স্পষ্ট মনে আছে, ৪১ বছর আগে দার্জিলিং আমাকে যেভাবে স্বাগত জানিয়েছিল, সেটা কোনও প্রধানমন্ত্রীর চেয়ে কম নয়। আমার টিমের সতীর্থেরা আমাকে মজা করে দার্জিলিঙের হিরো বলতে শুরু করেছিল। তারপর বারবার আমি গিয়েছি সেই শৈলশহরে। আর বারবার প্রেমে পড়েছি দার্জিলিঙের। ওখানকার সঙ্গে যেন আত্মার বাঁধনে আমি আটকে পড়েছি। এখন টিভি খুলে যখন দেখছি দার্জিলিঙে আগুন জ্বলছে, আমার নিজের ভিতরটাও জ্বলেপুড়ে যাচ্ছে। বাড়িতে টিভির সামনে বসে দার্জিলিঙের খবরই দেখছি। নিজের অজান্তেই কখন চোখ দিয়ে জল গড়িয়ে পড়ছে। আমি রাজনীতি বুঝি না। বুঝতে চাইও না। আমি নিজে নেপালি। তাই জানি, ওরা (দার্জিলিঙের বাসিন্দারা) কতটা সাদাসিধে, সরল মনের। হিংসা কেউ চায় না। ওরাও চায়না। ওরা অত্যন্ত অতিথিপরায়ণ। আবার বাঙালিদেরও তো আমি কাছ থেকে দেখেছি। এই শহর, সমতলের মানুষ আমাকে এত ভালবাসা দিয়েছে। আমি তাই নেপাল ছেড়ে পড়ে আছি বাংলাতেই। সমতল, পাহাড় দুটোই যে আমার বড় প্রিয়! একটা সামান্য বিষয় থেকে যেভাবে পাহাড়ে আগুন জ্বলছে, মানতে পারছি না। কারা, কী স্বার্থে এসব করছে বা করাচ্ছে, এত যুক্তি তর্কে আমি যাব না। তবে এতে ক্ষতি হচ্ছে পাহাড়ের। আমার মতো ওখানকার সাধারণ মানুষের চোখেও কিন্তু জলের ধারা। তাঁদের কথা কি আদৌ কেউ ভাবছে?



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2so3TCU
June 18, 2017 at 08:18PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top