লন্ডন, ১৪ জুন- বৃহস্পতিবার বাংলাদেশই জিতবেভারতের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সেমিফাইনাল নিয়ে লন্ডনের বিখ্যাত বাংলাটাউনের রেস্তোরাঁ ব্যবস্থাপক শাফায়াত রহমানের আশা এমনই। শাফায়াতের একার নয়, এমন প্রত্যাশা ইংল্যান্ডে বসবাসকারী প্রায় ৮০ হাজার বাংলাদেশিরই। প্রিম নামে শাফায়াতের ব্যবস্থাপনাধীন রেস্তোরাঁটি কাল বৃহস্পতিবার ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের ম্যাচের সময় জমজমাট থাকবেএটা বলে দেওয়াই যায়। তবে শাফায়াত নিজে পেশাগত ব্যস্ততার কারণে খেলাটা দেখতে বার্মিংহামে যেত পারছেন না। ম্যাচ চলাকালে তাঁর সহায় হাতের স্মার্ট ফোনটি। সেখানে লাইভ স্ট্রিমিং করেই হোক কিংবা বিভিন্ন ক্রিকেট ওয়েবসাইটে গিয়েই হোক, তিনি খেলাটা নিজের মতো করেই উপভোগ করবেন। অধীর হয়ে থাকবেন বাংলাদেশের জয়ের আশায়। শাফায়াতের ভাষ্য, যেভাবেই হোক ম্যাচের সঙ্গেই থাকতে হবে। বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ম্যাচ এটি। মিস করলে চলে! শাফায়াতের জন্ম অবশ্য ইংল্যান্ড নয়, সিলেটে। তবে ইংল্যান্ডে জন্ম নেওয়া ও বেড়ে ওঠা বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ইসলাম উদ্দিন ক্রিকেটের খুব যে বড় ভক্ত, তা বলা যাবে না। সেভাবে তাঁর খেলা দেখাও হয় না। কিন্তু বাংলাদেশের ম্যাচের ব্যাপারই আলাদা। পৃথিবীর যেখানেই মাশরাফি-সাকিব-তামিমরা খেলেন, ইসলাম উদ্দিন তার খোঁজ-খবর রাখেন। বাংলাদেশের ক্রিকেট ম্যাচ তাঁর কাছে বাঙালিত্বের প্রশ্ন। নিজের অস্তিত্ব জানান দেওয়ার প্রশ্ন। তিনি বলেন, এটা আমার কাছে গর্বের বিষয়। আত্মমর্যাদা তুলে ধরার বিষয়। আমাদের অনেকেই ছোট করে দেখে। ক্রিকেট দিয়েই আমরা এসবের জবাব দিতে চাই। আমরা যদি কালকের ম্যাচটা জিততে পারি, তাহলে আমরা যে কারও চেয়ে কম নই, সেটি বুক ফুলিয়ে বলতে পারব। বাংলাটাউন নামটি কিন্তু লন্ডন সিটি কাউন্সিলেরই দেওয়া। বাংলাদেশি জনসংখ্যার আধিক্যের কারণে মুখে মুখে ঘুরে ফেরা এই নামই এখন আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃত। সেখানে গেলে নাকে আসবে কাবাবের গন্ধ। চোখে পড়বে রাস্তার পাশে বিক্রির জন্য সাজিয়ে রাখা শিঙাড়া কিংবা সমুচা। রেস্তোরাঁগুলোর সাইনবোর্ডে শোভা পাচ্ছে বিভিন্ন ধরনের ভর্তা-ভাজি বিক্রির কথা। ১৫ বছর আগে থেকেই লন্ডন সিটি কাউন্সিল সড়কের বিভিন্ন সংকেতে ইংরেজির পাশাপাশি বাংলার ব্যবহার শুরু হয়। ইংল্যান্ডে বসবাসরত বাংলাদেশিদের কাছে সেটিও ছিল একধরনের বিজয়। একটা সময় ছিল, যখন বাংলাদেশ ক্রিকেট দল ইংল্যান্ড সফরে এলেই দলের খেলোয়াড়েরা ব্রিকলেনের বাংলাটাউনে ঢুঁ মারতেন দেশি খাবারের স্বাদ আস্বাদনে। কিন্তু এবারের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে নিরাপত্তার কারণেই হয়তো-বা মাশরাফিরা এখানে পাত রাখেননি। তবে রুবেল হোসেন ও তাসকিন আহমেদকে এলাকার নজরুল রেস্তোরাঁয় সম্প্রতি দেখেছেন বলে জানালেন প্রিম রেস্তোরাঁর ব্যবস্থাপক শাফায়াত। নজরুল রেস্তোরাঁ হচ্ছে ব্রিকলেনের সবচেয়ে পুরোনো খাবারের দোকান। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পরপরই রেস্তোরাঁটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এই রেস্তোরাঁর স্বত্বাধিকারী রমজ শেহেলও কালকের সেমিফাইনালের জন্য মুখিয়ে আছেন। ১৯৯৯ সালের ৩১ মে নর্দাম্পটনে বিশ্বকাপে পাকিস্তানকে হারানোর সেই দিনটি ভুলতে পারেন না শেহেল। তিনি বলেন, সেদিন পাকিস্তানের বিপক্ষে জয়ের পর ব্রিকলেনে গাড়ি চলার মতো অবস্থা ছিল না। বাংলাদেশের লাল-সবুজ পতাকায় ছেয়ে গিয়েছিল চারদিক। সবাই নেচে-গেয়ে উৎসব করেছিল। ১৫ জুন ভারতের বিপক্ষে ম্যাচটি জিতলে তেমন দৃশ্য আবার দেখা যাবে এই এলাকায়। শেহেলের মতে, কাল বাংলাদেশ জয় পেলে তা কেবল ক্রিকেট মাঠের একটি জয়ই হবে না, এর সঙ্গে ব্রিটেনে বসবাসরত বাংলাদেশিদের কাছে দেশকে অন্য উচ্চতায় দেখার বিষয়ও কাজ করবে। এ আর/১৬:২০/১৪ জুন
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2szwrvv
June 14, 2017 at 10:18PM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন