লন্ডন, ০৩ জুন- বুধবার ম্যাচ এবং মাশরাফির প্রেস কনফারেন্স শেষ করে স্টেডিয়ামের গেটে আসতেই দেখা হলো বাংলাদেশি এক দল হতাশ সমর্থকের সঙ্গে (তারা এখন ব্রিটিশ নাগরিক)। তারা হারে ব্যথিত। স্বাভাবিকভাবেই বোলিং বিভাগকে দুষছিলেন। কাঠ গড়ায় দাঁড় করালেন টিভি আম্পায়ারকেও। একজন বলছেন, তামিমের ওই ক্যাচটা জেনুইন ছিল। ব্যাটা টাকা খেয়ে ওই কাম করেছে! ওই উইকেটটা পেলেই বাংলাদেশ জিতে যেত। এমন একটা সুযোগ হাত ছাড়া হেয়ে গেল। বোলিং নিয়ে আরেকজন বলছিলেন, এই বোলিং দিয়ে হবে না। মোস্তাফিজের বোলিংয়ে এখন আর আগের মতো ধার নাই। সবাই ওর কৌশল বুঝে ফেলেছে। পুরো ৫০ ওভারে মাত্র দুটো উইকেট নিতে পারলো! আরেকজন বলে উঠলেন, যে যাই বলিস, সাকিবই দলকে ডুবিয়েছেন। দরকারের সময় রানও করতে পারলেন না। এখন তো ওর বোলিংয়ে কোনা কিছুই নেই। সাকিব আসলে শেষ হয়ে গেছে। বিয়ে করার পর সে পুরোটাই শেষ। তার আর খেলায় মন নাই। শুধু টাকা কামাবে কীভাবে সেই চিন্তা। দেখিস, সাকিব তাড়াতাড়িই আমেরিকায় চলে যাবে। তার বাংলাদেশে মন নাই। ওকে বাদ দেওয়া উচিৎ। সে এখন দলের বোঝা। তাকে বাদ না দিয়ে দলের ক্ষতি করছে ক্রিকেট বোর্ড। সমর্থকদের কথা ধরে লাভ নেই। তারা বলেন তাদের মতো করে। তবে সাকিবের যে সাম্প্রতিক সময়ের পারফরম্যান্স তাতে চিন্তার অনেক কারণই আছে। দিন কয়েক আগে সাবেক অধিনায়ক গাজী আশরাফ হোসেন লিপি বলেছেন, দলে সাকিবের বিকল্প চিন্তা করার সময় এসে গেছে। কথাটা তাৎপর্যপূর্ণ। দলে সাকিবের অবস্থান সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ব্যাটে রান ও বোলিংয়ে উইকেট। একসঙ্গে তার কাছ দুটোই আশা করে দল। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে দলের সেই প্রত্যাশা একেবারেই মেটাতে পারছেন না এ অলরাউন্ডার। এর জন্য দলকে খুব বেশি মূল্যও দিতে হচ্ছে। বুধবারের ম্যাচটার কথাই ধরা যাক। ইংল্যান্ডের ইনিংসের মাঝখানে এক দুইটা উইকেট পেলেই বাংলাদেশ জিতে যায়। মেইন স্পিনার হিসেবে সাকিবের দিকেই তাকিয়ে ছিল দল। তিনি যে প্রতি ম্যাচে উইকেট পাবেন সেটাও আশা করা ঠিক নয়। কিন্তু অতটা সাধারণ মানের বোলিংও তার কাছ থেকে আশা করে না দল। ম্যাচের দিন বাসে পরিচয় হয় সাব্বির ভাইয়ের সঙ্গে। এই বয়সও তিনি যথেষ্ট তরুণ উদ্যমী। তিনি এবং তার পুরো পরিবার ব্রিটিশ নাগরিক। এই দেশের নাগরিক হয়েও বাংলাদেশের জার্সি গায়ে মাঠে যান খেলা দেখতে। দলের জন্য গলা ফাটিয়েছেন গ্যালারিতে বসে। ৩০ বছর আগে লন্ডনে পাড়ি জমানো এ উদ্যমী ভদ্রলোক এক সময় ফুটবল খেলতেন বাংলাদেশে। অনূর্ধ্ব-১৬ দলেও খেলেছেন দেশের হয়ে। তিনি আমাকে ইফতারের দাওয়াত করলেন স্থানীয় একটি মসজিদে।ইফতার ও মাগরিবের নামাজের পর অনেক বাঙালির সঙ্গে কথা হলো। সবার মুখে বাংলাদেশ- ইংল্যান্ড ম্যাচের গল্প। দেখলাম, তাদের প্রায় সবার ক্ষোভ সাকিবের উপর। সাকিবের অতিসাধারণ পারফরম্যান্স তারা হতাশ। তারেক নামের একজন বললেন, শুনেছি সাকিব ৪০০ কোটি টাকার মালিক। এই বয়সে এত টাকা পয়সা হলে যা হয় আর কি। অহংকারে পা মাটিতে পড়ে না। এত টাকা পয়সা হয়ে গেলে তার আর কী লাগে। ওর তো এক পা বাংলাদেশে আরেক পা আমেরিকায়।
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2qLB7hL
June 03, 2017 at 04:47PM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন