লন্ডন, ১১ জুন- অবশেষে যুক্তরাজ্যে থাকার অনুমতি পেলেন আবদুল হাসান। যুক্তরাজ্যকে নিজের দেশ হিসেবে জেনে বড় হওয়া আবদুল হাসানকে বাংলাদেশে ফিরে যেতে বলেছিল দেশটির স্বরাষ্ট্র বিভাগ (হোম অফিস)। এরপর তিনি শরণাপন্ন হন আদালতের। আদালত গত বৃহস্পতিবার তাঁকে স্থায়ী বসবাসের অনুমতি দেন। আবদুল হাসান বলেন, গত বৃহস্পতিবার আদালতে শুনানি ছিল। বাস্তবতা ও মানবিক দিক বিবেচনায় নিয়ে আদালত তাঁকে স্থায়ী বসবাসের অনুমতি দিতে স্বরাষ্ট্র বিভাগের প্রতি আদেশ জারি করেছেন। প্রায় ১৪ বছর আগে মাত্র ৫ বছর বয়সী আবদুল হাসানকে তাঁর বাবা-মা লন্ডনে বেড়াতে এসে খালার কাছে রেখে গিয়েছিলেন। বর্তমানে ১৯ বছর বয়সী হাসানের বাংলাদেশের কোনো স্মৃতিই মনে নেই। এর মধ্যে তিনি এ লেভেল শেষ করে বিশ্বখ্যাত হিসাব নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান কেপিএমজিতে শিক্ষানবিশ হিসেবে কাজের সুযোগ পান। চাকরি নিতে গিয়েই হাসান যুক্তরাজ্যে বসবাসের বৈধ কাগজপত্র না থাকার ভোগান্তি টের পান। এরপর তাঁকে বাংলাদেশে ফিরে যেতে বলে যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র বিভাগ (হোম অফিস)। এ সময় তাঁর পাশে এসে দাঁড়ায় তাঁর ব্রিটিশ বন্ধুরা। তাঁরা হাসানকে স্থায়ী বসবাসের অনুমতি পাইয়ে দিতে অনলাইনে গণস্বাক্ষর অভিযান চালান। প্রায় ২৫ হাজার স্বাক্ষর পড়ে এই পিটিশনে; যা তিনি আদালতে উপস্থাপন করেন। এ ঘটনা যুক্তরাজ্যের মূলধারার গণমাধ্যমগুলোতে বেশ সাড়া ফেলে। আবদুল হাসান টেলিফোনে বলেন, যুক্তরাজ্যকে নিজের দেশ মনে করেই তিনি বড় হয়েছেন। তিনি ছোটবেলা থেকে অন্যদের মুখে শুনতেন যে, তাঁর যুক্তরাজ্যে থাকার বৈধ কাগজপত্র নেই। বিষয়টি তিনি তখন বুঝতেন না। এ নিয়ে যে তাঁর ভবিষ্যৎ এতটা অনিশ্চয়তায় পড়বে, সেটা কখনো ভাবতে পারেননি। বাংলাদেশে হাসানের বাড়ি সিলেটে। সেখানে তাঁর মা আছেন। এক বোনও আছেন। কিন্তু তাঁদের সঙ্গে খুব একটা যোগাযোগ হয় না। কারণ মা সিজোফ্রেনিয়া রোগে আক্রান্ত। আর বোনের সঙ্গে কখনো দেখা হয়নি। বাংলাদেশের কোনো স্মৃতি মনে নেই তাঁর। হাসান বলেন, যুক্তরাজ্যে পড়াশোনা করতে গিয়ে তাঁর কোনো সমস্যা হয়নি। ২০১৫ সালে তিনি যুক্তরাজ্যে স্থায়ী বসবাসের বৈধতা চেয়ে আবেদন করেন। ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে সেই আবেদন নাকচ করে দেয় অভিবাসন বিভাগ। ফলে ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতের আশ্রয় নেন তিনি। কেপিএমজিতে হাসান ৬ বছরের জন্য শিক্ষানবিশ হিসেবে সুযোগ পেয়েছেন। সেখানে কাজের পাশাপাশি তিনি চার্টার্ড অ্যাকাউটেন্সি বিষয়ে পড়াশোনা করবেন। ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর থেকে তাঁর কেপিএমজিতে যোগ দেওয়ার কথা ছিল। সেই সুযোগ এখন চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। হাসানের পক্ষে পিটিশন চালু করা বন্ধু হেকটর ওশি সাংবাদিকদের বলেন, সাত বছর ধরে হাসানকে চিনি। সে অত্যন্ত মেধাবী এবং পরিশ্রমী। খ্যাতনামা একটি প্রতিষ্ঠানে সে কাজের সুযোগ পেয়েছে। সে আমার মতোই ব্রিটিশ সমাজের অংশ। তাকে যুক্তরাজ্যে থাকতে না দেওয়াটা হতো চরম লজ্জার। এ আর/১৯:৩৮/১১ জুন
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2sh3i8H
June 12, 2017 at 01:36AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন