ঢাকা, ২১ জুন- বাংলাদেশ চলচ্চিত্রের এক সময়ের অভিনেত্রী নাজনীন আক্তার হ্যাপি। ২০১৩ সালে কিছু আশা, কিছু ভালোবাসা ছবি দিয়ে রুপালি পর্দায় যাত্রা শুরু হয় তার। কিন্তু অভিনেত্রী হিসেবে নয়, বাংলাদেশে তিনি আলোচিত জাতীয় দলের ক্রিকেটার রুবেল হোসেনের কথিত প্রেমিকা হিসেবে। ২০১৪ সালের শেষের দিকে হ্যাপির করা ধর্ষণ মামলায় কাঠগড়ায় উঠতে হয় রুবেল হোসেনকে। তখনই বাংলাদেশের গণমাধ্যমে আলোচনায় আসেন হ্যাপি। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে হ্যাপির সঙ্গে রুবেল শারীরিক সম্পর্ক করেন, এমন অভিযোগ এনে মামলাটি দায়ের করেন হ্যাপি। দুজনের অন্তরঙ্গ আলাপচারিতার রেকর্ড ইউটিউবে ছেড়েছিলেন। গণমাধ্যমে এ নিয়ে টানা সংবাদ হয়েছে।পরে একটা সময় রুবেলের বিরুদ্ধে করা মামলাটি প্রত্যাহার করে নেন তিনি। তবে এবার হ্যাপি আলোচনায় এসেছেন অন্য কারণে। আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা এএফপি আজ বুধবার হ্যাপির বদলে যাওয়া জীবন নিয়ে লেখা ইসলামি বই হ্যাপি থেকে আমাতুল্লাহ নিয়ে একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে এএফপি। আমাতুল্লাহ হ্যাপির নতুন নাম, যার অর্থ দাঁড়ায় আল্লাহর দাসী। এএফপির খবরে বলা হয়েছে, হ্যাপিকে নিয়ে লেখা বইটি প্রকাশ করা হয়েছে মাকতাবাতুল আজহার প্রকাশনী থেকে। এই প্রকাশনী সংস্থা থেকে ইসলামি বই প্রকাশ করা হয়ে থাকে। প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ ওবায়দুল্লাহ বলেছেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বইয়ের অর্ডার আসছে। সবাই জানতে চান কোন বিষয়টি তাকে (হ্যাপি) তারকা জীবনযাপন ছেড়ে সাধারণ নিবেদিতপ্রাণ মুসলিম হতে অনুপ্রাণিত করেছে। হ্যাপি একজন ঢালিউড তারকা। ২০১৩ সালে কিছু আশা কিছু ভালোবাসা নামের একটি বাংলা সিনেমায় প্রথম অভিনয় করে তিনি খ্যাতি পান।তবে ২০১৪ সালের শেষ দিকে তারকা ক্রিকেটার ফাস্ট বোলার রুবেল হোসেনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ তুলে বিতর্কের সৃষ্টি করেন। হ্যাপি অভিযোগ করেন, ২৫ বছর বয়সী ওই ক্রিকেটারের সঙ্গে তার অন্তরঙ্গ সম্পর্ক ছিল। রুবেল তাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এই কেলেঙ্কারি ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা। মুসলিমপ্রধান বাংলাদেশে বিয়ে ছাড়া যৌন সম্পর্ককে অতি গর্হিত অপরাধ বলে গণ্য করা হয়। এখানে এ ধরনের ঘটনার শিকার হওয়ার পর একজন নারীর সামাজিকভাবে অপদস্থ হওয়ার নজিরও বিরল নয়। রুবেল দাবি করেন, তিনি ব্ল্যাকমেলের শিকার হয়েছেন। তবে আদালত তাকে রিমান্ডে পাঠায়। বিশ্বকাপ শুরুর কয়েক দিন আগে খেলার সুযোগ দিতে তাকে জামিনে মুক্তি দেয়া হয়। পরে তার বিরুদ্ধে অভিযোগের কোনো সাক্ষ্য-প্রমাণ পায়নি আদালত। এ নিয়ে দীর্ঘ গসিপের একপর্যায়ে হ্যাপি রুবেলের বিরুদ্ধে সব অভিযোগ তুলে নেন এবং তিনি রুবেলকে ক্ষমা করে দিয়েছেন বলে জানান। রুবেল স্ক্যান্ডালে জড়িয়ে থাকা হ্যাপি নতুন চলচ্চিত্রের কাজ শুরু করেন এবং দাবি করেন, জীবনকে গুছিয়ে নিতে তার বোধোদয় হয়েছে। রাতারাতি তিনি তাবলিগ জামায়াতে যোগ দেয়ার কথা বলেন এবং অতীত জীবনের সব বন্ধন থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়া শুরু করেন। হ্যাপিকে নিয়ে প্রকাশিত বইয়ের লেখক আবদুল্লাহ আল ফারুক বলেন, ওই রাতে তিনি (হ্যাপি) ফেসবুকে পোস্ট করা হাজার হাজার ছবি মুছে দেয়া শুরু করেন। পরে চলচ্চিত্রজগতের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করেন। আবদুল্লাহ আল ফারুক জানান, তার স্ত্রী সাদেকা সুলতানা বইয়ের সহযোগী লেখক। তিনিই হ্যাপির সাক্ষাৎকার নেয়ার অনুমতি পান। তিনি আরও বলেন, হ্যাপি তার নতুন নাম রাখেন আমাতুল্লাহ। তিনি বোরকা পরা শুরু করেছেন। বইয়ে হ্যাপি বলেছেন, তিনি তার অতীত মুছে ফেলতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। এমনকি তার শেষ করা চলচ্চিত্র রিয়েল মানুষ প্রচার না করতে ওই চলচ্চিত্রের সংশ্লিষ্টদের বন্ধ করার অনুরোধ করেছেন।তবে তিনি তা করতে ব্যর্থ হন। হ্যাপি বলেন, নতুন শিশুর মতো আমার জন্ম হয়েছে। এখন আমার আগের জীবনের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক নেই।
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2tO7J7x
June 22, 2017 at 04:49AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন