ঢাকা, ১৭ জুন- মাশরাফি বিন মুর্তজার বর্তমান দলটিকে বাংলাদেশের ইতিহাসের সেরা দল হিসেবেই আখ্যা দিয়ে থাকেন দেশ ও দেশের বাইরের ক্রিকেট বোদ্ধারা। লাল-সবুজের দলটি শক্তি, অভিজ্ঞতা ও তারুণ্যের দারুণ মিশেল। কিন্তু এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশ নিজেদের ইতিহাসের সেরা সাফল্য অর্জন করতে পারলেও তরুণরা ছিলেন দৃষ্টিকটুভাবে ব্যর্থ। সৌম্য সরকার, সাব্বির রহমান, মোস্তাফিজুর রহমান, মোসাদ্দেক হোসেন, তাসকিন আহমেদরা পারেননি প্রত্যাশার পুরোটা মেটাতে। এই তরুণরা জ্বলে উঠতে পারলে আরো বড় সাফল্য আসতো বলেই ভক্তদের মত। তাই সফল এক চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি শেষেও তারুণদের ব্যর্থতা নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে ঢের। কিন্তু টাইগার দলপতি মাশরাফি বিন মুর্তজা ছোটদের আগলে রাখছেন পরিবারের বড় কর্তার মতোই। তরুণদের এই ব্যর্থতাকে ব্যর্থতা হিসেবে না নিয়ে বিনিয়োগ হিসেবে দেখছেন মাশরাফি। ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠেয় ২০১৯ বিশ্বকাপের জন্য বিনিয়োগ। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি শেষ করে শনিবার দেশে ফিরেছে বাংলাদেশ দল। সকালে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রশ্ন আসে তরুণদের ব্যর্থতাকে তুলে ধরে। কিন্তু মাশরাফি ইতিবাচক দিকগুলোর কথাই মেলে ধরলেন। ম্যাশ বলেন, তরুণদের জন্য এইসব স্টেজ (চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মতো টুর্নামেন্ট) সহজ নয়। একই সঙ্গে বলবো অবশ্যই তাদের উন্নতি করতে হবে। সিনিয়ররা ভালো খেলবে, এটা খুবই জরুরী। একই সঙ্গে তরুণ খেলোয়াড়দেরও ভালো খেলতে হবে। যেটা এবার আশানুরূপ হয়নি। তবে ওদের সামনে গ্রেট ফিউচার। এই ফিউচার অর্থাৎ ভাবিষ্যতের জন্য চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিটা এক অর্থে বিনিয়োগই হয়েছে সৌম্য, সাব্বির, মোস্তাফিজ-তাসকিনদের জন্য। মাশরাফির কথার সারমর্ম সেটাই, এখানকার অভিজ্ঞতা থেকে ২০১৯ বিশ্বকাপে তারা আরও দায়িত্ব নিয়ে খেলতে পারবে। দুই বছর পর আরও পরিণত হবে। যে পর্যায়ে তারা খেলেছে এটা যদি গুরুত্বের সঙ্গে নিতে পারে তবে ২০১৯ বিশ্বকাপে আরও ভালো খেলতে পারবে। ভারতের বিপক্ষে সেমি-ফাইনালে হারা ম্যাচের আগে ও পরেও তরুণদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন মাশরাফি। এবার মাশরাফি সবার চোখে ভাসিয়ে তুললেন আগামী সময়ের কথা। যে সময়টায় এই তরুণরাই হাল ধরবেন বলে মনে করেন টাইগার অধিনায়ক। মাশরাফির কথার সরল অর্থ তাই এরকম, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে একরকম বিনিয়োগ করা হয়েছে তরুণদের ওপর। অভিজ্ঞতা যেখানে অর্জন। এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশের হয়ে আলো ছড়ান অভিজ্ঞ ক্রিকেটাররাই। টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচেই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি (১২৮) করেন তামিম ইকবাল। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পরের ম্যাচে ৯৫ রানসহ ভারতের বিপক্ষে সেমি-ফাইনালে করেন ৭০ রান। ৪ ম্যাচে তার ব্যাট থেকে আসে মোট ২৯৩ রান। এছাড়া সাকিব আল হাসান করেছেন ৪ ম্যাচে ১৬৮ রান। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে যার ব্যাট থেকে আসে ১১৪ রানের ইনিংস। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে শতক (১০২*) হাঁকান আরেক অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ব্যাট হাতে সফল ছিলেন মুশফিকুর রহীমও। কিন্তু বিপরীতে তরুণরা যেন ততটাই মলিন। উদ্বোধনী জুটিতে তামিমের পার্টনার সৌম্য সরকার ৪ ম্যাচে করেছেন মাত্র ৩৪ রান। সাব্বিরের ব্যাট থেকে এসেছে সমান ম্যাচে ৫৯ রান। মোসাদ্দেক যে ৩টি ম্যাচ খেলেছেন সেখানে তার সংগ্রহ মাত্র ২৪ রান। ( অবশ্য দুই ম্যাচে অপরাজিত ছিলেন তিনি)। বোলিংয়ে মোস্তাফিজ পারেন নি প্রত্যাশার ছিটেফোটাও মেটাতে। ৪ ম্যাচে ২৯ ওভার বল করে পেয়েছেন মাত্র ১টি উইকেট। প্রশ্ন তাই ওঠেই। কিন্তু মাশরাফি তার বিশাল ছায়ায় আড়াল করেন ভবিষ্যতের সম্ভাব্য নিয়মিত পারফর্মারদের।
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2sE0XoE
June 18, 2017 at 01:24AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন