কলকাতা, ২৭ জুন- ভূমিকা আবার পাল্টে ফেলেছেন ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়! ফের জেগে উঠেছেন, এসেছেন সংবাদশিরোনামে। একটি টেলিভিশন চ্যানেলের প্রাক্তন কর্ত্রী, নিজের মেয়েকে খুনের ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত তথা মুম্বইয়ের ভায়খ্লা মহিলা সংশোধনাগারের এই অতি বিশিষ্ট বন্দির বিরুদ্ধে এবার সহবন্দিদের বিদ্রোহে প্ররোচিত করার অভিযোগ উঠল! গত শনিবার সকালে সেই বিদ্রোহের নেত্রীকে দেখেছে ভায়খ্লা। দেখেছে জেলের ছাদের পাঁচিল ঘেঁষে একদল বন্দির সঙ্গে ইন্দ্রাণীকে সামিল হতে। যাঁর মুঠো করা ডানহাত প্রতিবাদের ভঙ্গিতে উদ্ধত! অভিযোগ, সেই প্রতিবাদ অহিংস ছিল না! ঘটনার সূত্রপাত শুক্রবার রাতে, মঞ্জু গোবিন্দ শেট্টে নামে বছর পঁয়তাল্লিশের এক বন্দির মৃত্যুতে। অভিযোগ, এক কারারক্ষীর পিটুনিতে গুরুতর আহত হয়েছিল মঞ্জু। জে জে হাসপাতালে ওই রাতেই তার মৃত্যু হয়। ননদকে খুন করায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছিল মঞ্জু ও তার শাশুড়ির। মঞ্জুর মৃত্যুর খবর ভায়খ্লায় পৌঁছনোর পরেই ক্ষোভ ছড়ায় সেখানকার আড়াই শতাধিক বন্দির মধ্যে। দাবি ওঠে, ঘটনাটি সংবাদমাধ্যমকে জানাতে হবে। তা আইনত সম্ভব নয় বলে কারা কর্তৃপক্ষ জানালেও বন্দিদের ক্ষোভ কমেনি। জেলেই কার্যত আন্দোলন শুরু করে তারা। পোড়ানো হয় খবরের কাগজ, ভাঙা হয় আসবাব-সহ জেলের বেশ কিছু জিনিসপত্র। এই অশান্তির মধ্যেই মাথায় চোট পান জেলের এক কর্মী। তারপরেই প্রায় ২০০ জন বন্দি উঠে পড়েন জেলের ছাদে। জেলকর্মী ও পুলিশ বাধা দিতে গেলে বন্দিরা তাদের শিশুসন্তানদের সামনে ঠেলে দেয়। এক জেলকর্মীর দাবি, এটা হয় ইন্দ্রাণীর নির্দেশেই। ছাদ থেকে চিৎকার করে স্লোগান দিতে শুরু করে বন্দিরা। বেশ কিছুক্ষণ পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। ওইদিনই মঞ্জুর ময়না তদন্তের রিপোর্টে জানা যায়, ফুসফুসে চোট ছিল তার। ভারী বস্তুর আঘাতে তার শরীরে ১১ থেকে ১৩টি ক্ষতচিহ্নও পাওয়া গিয়েছে। এরপরেই ওই ঘটনায় ছজন জেলকর্মীকে সাসপেন্ড করা হয়। তাঁদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় (খুনের শাস্তি) মামলা করেছে পুলিশ। ওই ঘটনায় ইন্দ্রাণী-সহ ভায়খ্লার ২০০ জন বন্দির বিরুদ্ধে হিংসা, বেআইনি জমায়েত, সরকারি কর্মীকে নিগ্রহ, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করার মতো বিভিন্ন অভিযোগে মামলা করেছে পুলিশ। মুম্বই থেকে প্রকাশিত একটি দৈনিকের দাবি, সহবন্দিদের প্ররোচনা ও নেতৃত্ব দেওয়ার অভিযোগে ইন্দ্রাণীকে আলাদাভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। নাগপদা থানার এক আধিকারিকের কথায়, তদন্ত চলছে, ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়-সহ বাকি অভিযুক্তদের বয়ান নেওয়া হবে। ইন্দ্রাণীর আইনজীবী গুঞ্জন মঙ্গলা এক ইংরেজি টেলিভিশন চ্যানেলকে বলেন, এক বন্দির মৃত্যুতে বাকিরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন। তার পরে যে ঘটনা ঘটেছে, ইন্দ্রাণী যদি তাতে যুক্ত থাকেন তাহলে আইন আইনের পথেই ব্যবস্থা নেবে। শিনা হত্যা মামলায় ইন্দ্রাণীর গ্রেফতার হওয়ার পরে কাটতে চলেছে প্রায় দুবছর। কারাগারের অন্তরালেই সাদা হয়ে গিয়েছে চুল, চোখে-মুখে বসেছে কঠিন, ক্লান্তির ছাপ। শোনা গিয়েছে, জেলে কখনও তিনি শ্রীমদ্ভগবত গীতার তর্জমায় ব্যস্ত, কখনও বা দিস্তে দিস্তে কাগজে চার্জশিটের বক্তব্য খণ্ডনে। তবে, সেসবই ঘটে জনচক্ষুর আড়ালে। এবার প্রতিবাদী নেত্রী হিসাবে কি সেই আড়ালই ভাঙতে চাইছেন প্রাক্তন সেলিব্রিটি!



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2sbiLYk
June 27, 2017 at 05:46PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top