সিলেটে টিসিবির পণ্য বিক্রিতে অনিয়ম…।।।

স্টাফ রিপোট‍‍‍‍‌: হচ্ছে। যাদের জন্য এসব পণ্য ক্রয় করতে পারছেন না তারাই। পণ্য কিনতে গেলে কৌশলে ফিরিয়ে দেয়া হয় নিম্ন আয়ের লোকজনদের। নিয়মবহির্ভূত নানা শর্তের কথা বলে পণ্য ক্রয় থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে গরিব-দুস্থদের। বঞ্চিতদের মন্তব্য ‘টিসিবির পণ্য-ধনীদের জন্য’!

নিয়ম অনুযায়ী টিসিবির তালিকাভুক্ত যে পণ্য ক্রেতা চাইবেন সেটাই দেয়ার কথা। কিন্তু ডিলাররা তা মানছেন না। শ্রমিক, দিনমজুররা টিসিবির পণ্য আনতে গেলে তাদের বলা হচ্ছে, প্যাকেজ ছাড়া পণ্য বিক্রি হয় না। নানা শর্ত জুড়ে দিয়ে নিজেদের সুবিধামতো পণ্য বিক্রি করছেন। এদিকে প্যাকেজের মধ্যে থাকা সবগুলো পণ্য একসঙ্গে ক্রয়ের সামর্থ্য নেই গরিব মানুষের। সিলেট নগরী ঘুরে এই চিত্র দেখা গেছে। এসব অভিযোগ স্বীকার করছেন ডিলাররাও। অভিযোগ শুনে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছে সিলেট জেলা প্রশাসন।

সোমবার দুপুরে সিলেটের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে পণ্য বিক্রি করছিলেন টিসিবির এক ডিলার। বিজয় স্টোর নামের ওই ডিলারের বিক্রেতা জানান, তাদের কিছুই করার নেই টিসিবি কার্যালয় থেকে পণ্য দেয়ার সময়ই প্যাকেজের কথা বলে দেয়া হয়েছে। এটা অনিয়ম কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটাই নিয়ম।

বিষয়টি জানতে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবু সাফায়াত মোহাম্মদ সাহেদুল ইসলামের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি বলেন, এরকম কোনো নিয়ম নেই। তিনি ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন।

এদিকে, পণ্যের বাজারজাত প্রসঙ্গে প্রশ্ন করতে শুরু করলে বিজয় স্টোর নামের ডিলার দ্রুত পসরা গুটিয়ে নেয়। কথা বলতে বলতেই জেলা প্রশাসকের প্রধান ফটক দ্রুত ত্যাগ করে চৌহাট্টার দিকে ছুটতে থাকে তাদের পণ্যবাহী ট্রাকটি। পরে তাকে অনুসরণ করে পাওয়া যায় আধা কিলোমিটার দূরে সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের সামনে। এসময় আবারও কথা হয় সেই বিক্রেতার সঙ্গে।

তিনি জানান, সিলেটের ৫টি ডিলারই পণ্য বিক্রি করছে প্যাকেজে। কারণ শুধুমাত্র একটি পণ্য দেয় না টিসিবি। প্রতিদিন সব পণ্য আনতে হয়। তাই বিক্রি না হলে পরদিন সেই পণ্য আর আনা যায় না। তাই বাধ্য হয়েই এভাবে বিক্রি করছেন তারা। অপরদিকে ক্রেতারা বলছেন, শুরুতে এমন ছিল না। দু’একদিন যেতে না যেতেই এমন ব্যবসা শুরু করেছেন টিসিবি’র ডিলাররা।

কামরুল ইসলাম নামের একজন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পিয়ন এসেছিলেন ১ কেজি চিনি কিনতে। তাকে সাফ জানিয়ে দেয়া হল সঙ্গে অন্তত ২ কেজি ডাল নিতে হবে। তিনি বলেন, তার চিনিরই দরকার, ডালের নয়। তাছাড়া একসঙ্গে ডাল-চিনি দুটি পণ্য কেনার সামর্থ্যও নেই তার।

তিনি জানান, এভাবে পণ্য বিক্রি হলে যারা তার মতো নিম্ন আয়ের মানুষ তারা কিনতেই পারবে না। ফলে সরকার যে উদ্দেশে এই ব্যবস্থা চালু করেছে সেই উদ্দেশ্য সফল হবে না। যাদের বেশি টাকা আছে তারাই এই পণ্য কিনতে পারবে। এ তো যেন তেলের মাথায় তেল ঢালা, এভাবেই ক্ষোভ প্রকাশ করলেন তিনি।

এই অনিয়ম সম্পর্কে জানতে চাইলে, টিসিবি সিলেট অঞ্চলের আঞ্চলিক প্রধান ইসমাইল মজুমদার জানান, এ সমস্যা দীর্ঘদিনের। এটা অনিয়মও বলা যাবে না, আবার নিয়মও বলা যাবে না। টিসিবি যখন ১টি পণ্য আনতে যায় তখন ধরিয়ে দেয়া হয় অন্য একটি পণ্য। সে কারণেই ডিলারদেরও সেভাবেই দিতে হয়। এভাবে প্যাকেজ বিক্রির ফলে সাধারণ মানুষের কাছে সরকারের দেয়া সুবিধা সঠিকভাবে পৌঁছাবে কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তাদের কিছুই করার নেই।

এসব অভিযোগ শুনে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. শহিদুল ইসলাম জানান, ডিলারদের ডাকা হয়েছে। কেউ এমন কাজ করলে অবশ্যই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।



from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2rLXpgG

June 07, 2017 at 09:15PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top