ঢাকা, ২৯ জুন- চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে এবার বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে তুলনামূলক ভালো বোলিং করেছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। তবু তাঁকে একটা উইকেট পেতে খরচ করতে হয়েছে ৮০ রান। রুবেল হোসেনের সেটি ৯৫.৫০। মোস্তাফিজুর রহমানকে তো তীর্থের কাকের মতো অপেক্ষায় থাকতে হয়েছে উইকেটের জন্য। পুরো টুর্নামেন্টে ২৯ ওভার বোলিং করে ১৮৩ রান দিয়ে বাঁহাতি পেসার পেয়েছেন মাত্র ১ উইকেট। ২ ম্যাচে ২ উইকেট পাওয়া তাসকিন আহমেদের গড় ৪৬। খবর- প্রথম আলো গত দুই বছরে বাংলাদেশের বোলিং আক্রমণ এগিয়েছে পেসারদের ওপর সওয়ার করে। যে পেস বোলিং বাংলাদেশ দলকে এনে দিয়েছে স্মরণীয় সব সাফল্য, সেটিই ইংলিশ কন্ডিশনে ব্যর্থ! এটা ঠিক, প্রথমবারের মতো আইসিসির কোনো টুর্নামেন্টের সেমিফাইনাল খেলেছে বাংলাদেশ। তবে সাফল্যটা এসেছে পুরোপুরি ব্যাটসম্যানদের হাত ধরেই। ২০১৯ বিশ্বকাপ হবে ইংল্যান্ডে। এবারের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিটা তাই ছিল সেই কন্ডিশনে নিজেদের পরখ করে নেওয়ার সুযোগও। তো, কী বার্তা পেল বাংলাদেশ? টুর্নামেন্টের চার ম্যাচে ১২ উইকেট পেয়েছেন বাংলাদেশের বোলাররা। প্রতি উইকেটের জন্য খরচ হয়েছে ৭৬.৭৫ রান। গড়টা এবারের টুর্নামেন্টে সবচেয়ে বাজে। গত ১২ বছরে বোলিংয়ে বাংলাদেশের সবচেয়ে বাজে রেকর্ডও এটি। কমপক্ষে তিন ম্যাচ খেলেছে, এমন সিরিজ বা টুর্নামেন্টে ১৯৮৬ সালে ওয়ানডে অভিষেকের পর বোলিংয়ে বাংলাদেশ এর চেয়ে বাজে সময় কাটিয়েছে আর মাত্র চারটি সিরিজ বা টুর্নামেন্টে। জাতীয় দলের সাবেক কোচ সরওয়ার ইমরান চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে বাংলাদেশের বোলারদের পারফরম্যান্স মূল্যায়ন করছেন এভাবে, মাশরাফি ভালো বোলিং করেছে। রুবেল একটা-দুইটা ম্যাচে ভালো করেছে। দলে যে স্পিনার আছে, সেটা তো টেরই পেলাম না! আমাদের কারও বল ঘোরে না। বেশির ভাগ স্পিনার ফ্লাইট দেয় আর ভেতরে আনে। বড় টার্ন করে ব্যাটসম্যানকে ভড়কে দেওয়ার মতো স্পিনার দেখি না। বোলারদের এই পারফরম্যান্স হতাশ মাশরাফিও। টুর্নামেন্টজুড়ে বোলারদের নির্বিষ বোলিং ভাবিয়ে তুলেছে অধিনায়ককেও, বোলারদের ভালো বোলিং করতে হবে। এ ধরনের ফ্ল্যাট উইকেটে কীভাবে বোলিং করতে হয়, সেটা জানতে হবে। এবার যেটা পারিনি, সেটা পরে কাজে লাগাতে হবে। কিন্তু কেন বোলাররা চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ভালো করতে পারেননি? কিছু কারণ খুঁজে পেয়েছেন সরওয়ার ইমরান, আমরা যে খুব শক্তিশালী বোলিং আক্রমণ নিয়ে গিয়েছিলাম, তা বলা যাবে না। মোস্তাফিজের দিকে আসলে তাকিয়ে ছিলাম। সে ভালো করলে বাংলাদেশ ভালো করবে। তবে ইমরান শুধু এই টুর্নামেন্টে দিয়ে বোলারদের বিচার করতে রাজি নন। তিনি যেতে চান সমস্যার মূলে, একটা সময় পেস বোলারদের একাডেমি ছিল। জাতীয় দলের বাইরে থাকা পেসারদের এখন দেখার কেউ নেই। হঠাৎ একজন মোস্তাফিজ আসবে, সেই অপেক্ষায় থাকতে হবে। ভারতে দেখুন, জাতীয় দলের বাইরে পেসারদের তুলে আনার কত কর্মসূচি। তাদের বিভিন্ন একাডেমিতে সারা বছর কাজ হয়। আগে কিন্তু এতটা সমৃদ্ধ ছিল না ওদের পেস বোলিং। এখন সেটা অনেক শক্তিশালী। গত সেপ্টেম্বর থেকে বাংলাদেশের বোলিং কোচ হিসেবে কাজ করছেন কোর্টনি ওয়ালশ। কিন্তু ক্যারিবীয় কিংবদন্তি যোগ দেওয়ার পর বাংলাদেশের পেসারদের আহামরি সাফল্য এখনো দেখা যায়নি। ২০১৫ সালে ওয়ানডেতে অভিজ্ঞদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ভালো করেছিলেন তরুণ বোলাররা। গত সেপ্টেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত ওয়ানডেতে অভিজ্ঞরা খুব একটা ভালো করতে পারেননি। বেশি খারাপ করেছেন তরুণেরা। ২০১৫ সালে তরুণদের উইকেটপ্রতি খরচ হয়েছে ৩৪.৮৭ রান, এখন সেটি ৪১.৭৩। তাঁদের ইকোনমি যেমন বেড়েছে, বেড়েছে বোলিং গড়ও। বাংলাদেশের বোলাররা যে চারবার ৫ উইকেট পেয়েছিলেন, এর তিনটি তরুণদের অধিকারে। ওই বছর জুনে ভারতের বিপক্ষে টানা দুই ম্যাচে ৫ উইকেট পেয়েছিলেন মোস্তাফিজ। ওয়ালশ যোগ দেওয়ার পর ৫ উইকেটের দেখা পাননি কোনো বোলার। ২০১৭ চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে বাংলাদেশ বড় সাফল্য যেমন পেয়েছে, তেমনি শিক্ষাও পেয়েছে, বিশেষ করে বোলিংয়ে। ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠেয় ২০১৯ বিশ্বকাপে সেটা কাজে লাগাতে পারলে হয়।
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2sV7f20
June 30, 2017 at 02:18AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন