কলকাতা, ১৪ জুন- রাজ্য ভাঙনের জল্পনা উস্কে গোর্খা জনমুক্তির মোর্চার ডাকা পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিকে পূর্ণ সমর্থন জানালো বিজেপি৷ আজ পাহাড়ে সর্বদল বৈঠকে বিজেপির পক্ষ থেকে একটি মৌ স্বাক্ষর করা হয় বলে জানা গিয়েছে৷ বিজেপির পাহাড় জেলা কমিটির সম্পাদক সুমন শর্মার উপস্থিতে গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা ও গোর্খা ন্যাশনাল লিবারেশন ফন্টের নেতারা এই চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন বলে সূত্রের খবর৷ যদিও, পাহাড়ে গোর্খাল্যান্ডের দাবিকে সমর্থন প্রসঙ্গে রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে মন্তব্য করেন, পাহাড়ে বৈঠক ছিল৷ আমরা গিয়েছিলাম৷ পাশাপাশি, রাজ্যের উপর চাপ বাড়েতে এদিনের এই সর্বদল বৈঠকে মোর্চাকে জিএনএলএফের পক্ষ থেকে জিটিএ ছাড়ারও দাবি তোলা হয়৷ বিধায়কদের ইস্তফা দাবি তোলা হয়৷ এমনকি, সমস্ত পুরসভার চেয়ারম্যান, কাউন্সিলর পদ থেকে ইস্তফা দিতে হবে বলেও দাবি তোলা হয়৷ জিটিএ নির্বাচনের আগে নতুন করে পাহাড়ে অশান্তির পরিস্থিতি তৈরি হতেই গোর্খাল্যান্ডের দাবি নয়া মাত্রা পেতে শুরু করে৷ রাজ্যকে বিপাকে ফেলতে গোর্খাল্যান্ডের দাবিকে ঢাল করে আগুন জ্বলছে পাহাড়ে৷ ডাকা হয় লাগাতার বনধ৷ গোর্খাল্যান্ড দাবিকে নতুন মাত্রা দিতে আজ দার্জিলিংয়ে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকা হয়৷ বৈঠকে হাজির ছিল সিপিআরএম, গোর্খা রাষ্ট্রীয় নির্মাণ মোর্চা, ভারতীয় গোর্খা পরিসংঘ, জিএনএলএফ, জিজেএম ও বিজেপি৷ বৈঠকে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হয়েছে৷ আগামী দিনে গোর্খাল্যান্ড দাবিকে সামনে রেখে আন্দোলন এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কর্মসূচি রূপায়ান করা হয়৷ পরবর্তী কর্মসূচি ও বনধ নিয়ে আগামী ২০ জুন বৈঠকে ডাকা হয়েছে৷ গণতান্ত্রিক ভাবে নিজেদের দাবি তুলে ধরা হবে বলেও এদিন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়৷ গোর্খাল্যান্ডের দাবিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে এবার থেকে যুব-ছাত্র ও বুদ্ধিজীবীদের সামনে রেখে আন্দোলন করা হবে বলেও জানা গিয়েছে৷ এদিনের এই বৈঠকের পর মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি মন্তব্য করেন, আমরা সর্বসম্মতিক্রমে আজ গোর্খাল্যান্ডের আন্দোলন এগিয়ে নিয়ে যেতে ঐক্যমত্যে এসেছি৷ আগামী দিলে আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে একাধিক সিদ্ধান্ত নিয়েছি৷ রোশন গিরির মন্তব্যের পর গোর্খাল্যান্ডের আন্দোলনকে সমর্থন করে বিজেপির হিল ড্রিস্ট্রিক কমিটির সম্পাদক সুমন শর্মা বলেন, আমি গোর্খাল্যান্ডের দাবিকে সমর্থন করে বৈঠকে স্বাক্ষর করেছি৷ বিজেপির গোর্খাল্যান্ডের সমর্থনের খবর প্রকাশ হতেই রাজ্য রাজনৈতিক মহলে রাজ্য ভাগের জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে৷ কেননা, বিজেপির সমর্থন নিয়ে পাহাড়ে ক্ষমতার অলিন্দে রয়েছে গোর্খা৷ বিজেপি সাংসদ এসএস আলুআলিয়াও সম্প্রতি গোর্খাল্যান্ডের দাবিকে একপ্রকার সমর্থন জানিয়ে বিষয়ে বিষয়টি দিল্লির দরবারে তুলে ধরবেন বলে জানিয়েছিলেন৷ দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপির এই সাংসদের সমর্থন বেশ খানিকটা অক্সিজেন পেয়েছিল মোর্চা শিবির৷ পাহাড়ে লাগাতার বনধ ও আন্দোলন কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার জন্য কলকাতার বেলেঘাটায় বিজেপির রাজ্য বিজেপির সভাপতির বাড়িতে রুদ্ধদ্বার বৈঠকও করেছিলেন মোর্চার নেতারা৷ মূলত, তখন থেকেই শুরু হয়েছে জল্পনা৷ প্রশ্ন উঠতে শুরু করে, তাহলে কি গোর্খাল্যান্ডের দাবিকে সমর্থন করছে বিজেপি? পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে পাল্টা বিজেপির পক্ষ থেকে গোর্খাল্যান্ডের দাবিকে সমর্থন করা হবে না বলেও মন্তব্য করেন দিলীপ ঘোষ৷ তবে, সমর্থন করা বা না করা নিয়ে বেশ দ্বিধায় ছিল বঙ্গের গেরুয়ার শিবির৷ কেননা, পাহাড়ে শক্তি বাড়েতে মরিয়া বিজেপির সমর্থন প্রযোজন ছিল বিজেপির৷ বিজেপির সমর্থনও প্রযোজন ছিল মোর্চার৷ পাহাড়ে চার পুরসভা ভোটের তার প্রতিফলও লক্ষ্য করা গিয়েছিল৷ তবে, নতুন করে বিজেপির গোর্খাল্যান্ডের সমর্থন নিয়ে রাজ্য রাজনৈতিক মহলে তীব্র জল্পনা শুরু হয়েছে৷ কেননা, বিজেপি বাড়াবর রাজ্য ভাঙনের প্রস্তাবে সায় দিয়ে এসেছে৷ বছর দুআগে তেলেঙ্গা ভাগ হয়েছে৷ ভোট বাক্সে তার সুফল পেয়েছে বিজেপি৷ এক্ষেত্রেও পৃথক গোর্খাল্যান্ডের সমর্থন জানিয়ে পাহাড়ে নিজেদের ভোট বাক্স মজবুত করার নয়া কৌশল নিচ্ছে বিজেপি? প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে৷ আর/০৭:১৪/১৪ জুন
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2rYPkHc
June 14, 2017 at 01:31PM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন