নয়া দিল্লী, ১৯ জুন- ভারতজুড়ে এখন ইস! যদির আফসোস। ইস! ওই বলটি যদি নো না হতো! ওই একটি বলই তো নো হয়েছে। চতুর্থ ওভারের প্রথম বলে জসপ্রিত বুমরাহ যদি বলটি ওভার স্টেপিংয়ে নো না দিতেন, তাহলে কী ম্যাচের চিত্র এমন হতে পারতো। এতটা একতরফা ম্যাচ কী হয়ে যেতো! ব্যক্তিগত ৩ রানে থাকা ফাখর জামান যদি ওই সময় আউট হয়ে যেতেন, তাহলে ম্যাচটার ভাগ্য কী হতে পারতো? লন্ডনের কেনিংটন ওভালে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনাল শেষে এখন ভারত জুড়ে গণ আফসোসের মুখে গণ ভিলেনে পরিণত হয়েছে জসপ্রিত বুমরাহ। স্লগ ওভারে দুর্দান্ত বোলিং করে থাকেন। প্রতিপক্ষের রান বেধে রাখতে ওস্তাদ। টস জিতে পাকিস্তানকে ব্যাট করতে পাঠানোর পর কোহলির পরিকল্পনা মতোই কাজ এগুচ্ছিল যেন। কারণ, চতুর্থ ওভারের প্রথম বলেই উইকেটের পেছনে ফাখর জামানকে ক্যাচ দিতে বাধ্য করলেন বুমরাহ। উইকেট পাওয়ার আনন্দে মেতে উঠলো পুরো ভারতীয় দল। গ্যালারিতে তখন উল্লাসে ঢেউ। প্যাভিলিয়নের পথে হাঁটতে শুরু করে দিয়েছেন ফাখর জামানও। আম্পায়ার ডেকে দাঁড় করালেন। নিয়ম অনুযায়ী আউট হওয়া বল চেক করতে হয়, নো হয়েছে কি না। সেই চেক করতে গিয়েই দেখা গেলো পরিস্কার ওভার স্টেপিং করে ফেললেন বুমরাহ। ফলে নো বল। বেঁচে গেলেন ফাখর জামান। বাকিটা তো ইতিহাস। আজহার আলির সঙ্গে রেকর্ড ১২৮ রানের জুটি। ১১৪ রানের বিশাল ইনিংস- ফাইনালটাকে শুধুই নিজের বানিয়ে ফেললেন পাকিস্তানের এই নতুন ব্যাটসম্যান। কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকা তো চেতন শর্মার সঙ্গে তুলনা করে ফেললো বুমরাহর। দুজনই যে হতাশার ইতিহাসের সঙ্গী। আনন্দবাজার জানাচ্ছে, শারজায় শেষ বলে ছক্কা খাওয়া চেতন শর্মার জমে থাকা দুঃখ-যন্ত্রণা ভাগ করার জন্য এতদিনে কারও একটা আবির্ভাব ঘটল। ওভালের জসপ্রিত বুমরাহ! চেতনের বলটা ছিল ফুলটস। পাকিস্তানের জিততে দরকার ছিল ছয় রান। কোমরের উচ্চতায় আসা বল উড়িয়ে দেন মিয়াঁদাদ। আর ওভালে বুমরা এবং ভারতের অভিশপ্ত ডেলিভারি হয়ে থাকল একটি নো বল। ওভালে অবশ্য পাকিস্তান রান তাড়া করছিল না, টস জিতে তাদের প্রথমে ব্যাট করতে পাঠান কোহালি। শুরুতেই সাফল্য এল। বুমরার বলে ধোনির হাতে খোঁচা দিয়ে ফিরে যাচ্ছেন ফখর জমান। কিন্তু জায়ান্ট স্ক্রিন দেখাল বুমরা নো বল করেছেন। জমান তখন ৭ বলে ৩। পাকিস্তান ৩ ওভারে ৭-১ হয়ে যায়। সেই যে বাঁচলেন বাঁ-হাতি ওপেনার, থামলেন ১০৬ বলে ১১৪ রানের দুর্ধর্ষ ইনিংস খেলে। প্রথম আন্তর্জাতিক সেঞ্চুরি। আর সেটা এল কি না ফাইনালে ভারত-পাক ম্যাচে। কী অসাধারণ এক আবির্ভাব! ভারতে এখন নো বলের নাম পাল্টে রাখা হচ্ছে বুমরাহ বল। আনন্দ বাজারই জানাল এমন চাঞ্চল্যকর খবর। পত্রিকাটি লিখেছে, রোববারের পরে কানে এল নো বলের নাম পাল্টে নাকি রাখা হবে বুমরা বল! ক্লাইভ লয়েড পর্যন্ত লাঞ্চের সময় বলেন, বুমরার নো বলটাই টার্নিং পয়েন্ট হয়ে থাকল। তবে ভারতের ম্যাচ হারের পেছনে শুধু বুমরাহর নো বলকেই দুষছেন না বোদ্ধারা। তাদের চোখে পরাজয়ের অন্যতম কারণ টস জিতে ফিল্ডিং নেওয়া। ২০০৩ দক্ষিণ আফ্রিকা বিশ্বকাপ ফাইনালেও টস জিতে অস্ট্রেলিয়াকে ব্যাট করতে পাঠান সৌরভ গাঙ্গুলি। সেখানেই ম্যাচ শেষ হয়ে যায়। টসের হিসেব ওলটপালট করে দিল বিরাটের ভাগ্যও। তবু টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে থেকে যাবে বুমরার নো বল। যেমন ছিল ওয়াংখেড়েতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল। ওয়েস্ট ইন্ডিজের লেন্ডল সিমন্সকে সে দিন শুরুতেই আউট করেছিলেন অশ্বিন। এ দিনের মতোই রিপ্লে দেখিয়েছিল, নো বল হয়েছে। সে দিন সিমন্স ম্যাচ নিয়ে চলে যান। এ দিন নিয়ে গেলেন জমান। ১৯৮৬র শারজায় সেই শেষ বলের ছক্কা নিয়ে আজও কথা শুনতে হয় চেতন শর্মাকে। ১৮ জুন, ২০১৭-ও তাড়া করে ফিরবে জসপ্রিত বুমরাহকে। আর/১০:১৪/১৯ জুন
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2ssyoHD
June 20, 2017 at 04:01AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন