আমেরিকা ::গ্লোবাল ওয়ার্মিং এর আবহে গ্রিন হাউস গ্যাস কমানোর লক্ষ্যে সদ্য গ্রহণ করা আন্তর্জাতিক সমঝোতাপত্র প্যারিস চুক্তি থেকে আমেরিকা বেরিয়ে আসায় বিশ্ব রাজনীতির সমীকরণে বড়সড় পরিবর্তনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে আগামী দিনে। প্যারিস চুক্তির সঙ্গে নিজেদের ছিন্ন করার ঘোষণা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই চুক্তি যেসব দেশ সবচেয়ে বেশি দূষণ করছে সেই চীন ও ভারতের জন্য যথেষ্ট কঠোর ব্যবস্থা নেই এই মন্তব্যও করেছেন ট্রাম্প। আর তারপরই দুনিয়াজুড়ে প্রশ্ন উঠেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র না থাকলে এবার পরিবেশ সুরক্ষায় নেতৃত্বের স্থানটি কে নেবে? আর্থিক ও ভূরাজনৈতিক প্রভাবের জেরে এতদিন আমেরিকাই ছিল এই উদ্যোগের সেনাপতি। স্থির হয়েছিল চীন ও ভারতকে কার্বন দূষণ কমানোর ক্ষেত্রে আর্থিক সহায়তা দেবে উন্নত দেশগুলো। এটা না পসন্দ ট্রাম্পের। পাশাপাশি তিনি শুক্রবার একথাও জানিয়েছেন যদি এই চুক্তিটি নতুন করে খতিয়ে দেখে সংশোধন করা হয় তাহলে তিনি ভেবে দেখবেন আমেরিকা আবার যোগ দেবে কিনা।
কিন্তু ট্রাম্পের এই একতরফা সিদ্ধান্তে ইউরোপসহ গোটা বিশ্ব ক্ষুব্ধ। আমেরিকাকে ছাড়াই এগিয়ে যেতে চাইছে বাকিরা। উন্নত দেশগুলোতে আলোচনা শুরু হয়েছে এবার কী তাহলে নয়া পাওয়ার সেন্টার হতে চলেছে চীন? কারণ ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং চীনের একটি ব্লক যদি তৈরি হয় এই চুক্তি সফল করতে তাহলেই সেটি গ্রহণযোগ্য একটি বিকল্প হতে পারে। আমেরিকার এই না থাকা অবশ্যই ইতিহাসে বেনজির নয়। আমেরিকা গত দশকেও ২০০১ সালের পর কিয়োটো প্রোটোকল থেকেও বেরিয়ে এসেছিল। জর্জ বুশ ওই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু সেই সময় বিশ্ব অর্থনীতি আর কূটনীতি অনেকটাই ছিল একমাত্রিক শক্তির উপর নির্ভরশীল। অর্থাৎ আমেরিকাই ছিল একক ক্ষমতার কেন্দ্র। আজ পরিস্থিতি বদলে গেছে। আমেরিকা ক্রমেই অনেক ক্ষেত্রেই প্রভাব হারাচ্ছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের বহু দেশের মন্দার প্রেক্ষাপটে তাদের আর্থিক সহায়তা দিতে এগিয়ে এসেছে চীন। আফ্রিকা ও দক্ষিণ আমেরিকার নাইজেরিয়া থেকে ভেনিজুয়েলা, কেনিয়া থেকে ইক্যুয়েডর, আর্জেন্টিনা থেকে কঙ্গো প্রত্যেক দেশই চীনের থেকে ঋণ ,লগ্নি অথবা আর্থিক অনুদান পাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে প্যারিস চুক্তিকে সফল করতে এবং আমেরিকাকে একঘরে করতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অনেক দেশ আজ থেকেই চীন ও ইউরোপকে একজোট হতে বলেছে। এখন পর্যন্ত কোনো প্রথম সারির দেশই আমেরিকার সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেনি। সবাই শুক্রবার জানিয়েছে প্যারিস চুক্তির প্রতি ১০০ শতাংশ অনুগত থাকবে তারা। গোটা বিষয়টি একদিকে যেমন আমেরিকার কাছে একটি বড় সড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে, আবার অন্যদিকে আমেরিকা ছাড়া বিশ্ব রাজনীতির অগ্রগতির ক্ষেত্রেও এটি একটি সন্ধিক্ষণ। এবং ডোনাল্ড ট্রাম্প শুধু বাইরে নয়, ঘরেও কোণঠাসা হচ্ছেন।
সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেছেন, আমেরিকার ভবিষ্যৎকেই ট্রাম্প বাজি ধরলেন। আবার ক্যালিফোর্নিয়ার মতো বৃহত্তম অর্থনীতির প্রদেশ শুক্রবার জানিয়েছে তারা প্যারিস চুক্তিই অনুসরণ করবে।
from যুক্তরাজ্য ও ইউরোপ – দ্যা গ্লোবাল নিউজ ২৪ http://ift.tt/2s37lF8
June 03, 2017 at 10:17AM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন