কলকাতা, ২৮ জুন- বিশ্বের দরবারে বাজিমাত বাংলার! মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প কন্যাশ্রী রাষ্ট্রপুঞ্জের স্বীকৃতি পাওয়া নিয়ে চলছে হইচই। কিন্তু কোথায় এই প্রকল্পের এই সাফল্য? জনপরিষেবার নজির তৈরি করেছে কন্যাশ্রী। এই কারণেই রাষ্ট্রপুঞ্জের স্বীকৃতি পেল পশ্চিমবঙ্গ। কন্যাশ্রী প্রকল্পের জন্য ইউএন পাবলিক সার্ভিস অ্যাওয়ার্ড পেলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই পুরস্কার পাওয়ার পর ট্যুইটারে মুখ্যমন্ত্রী লেখেন ইউএন পাবলিক সার্ভিস ডে-তে প্রথম পুরস্কার পাওয়ায় দেশবাসী ও বাংলার মানুষের জন্য আমরা আনন্দিত। কন্যাশ্রীর জন্য রাষ্ট্রপুঞ্জের পুরস্কার পাওয়া গর্ব ও স্বীকৃতি। ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে চালু হয় কন্যাশ্রী প্রকল্প। অতীতেই ইউনেস্কোর তরফেও স্বীকৃতি দেওয়া হয় এই প্রকল্পকে। এক নজরে দেখে নেওয়া যাক এখনও পর্যন্ত কত স্কুল ছাত্রী এই প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছেন। সরকারি ওয়েবসাইট বলছে এই প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত মোট সুবিধাভোগী কন্যার সংখ্যা ৪০ লাখ ৪০ হাজার ৯৩৩। ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নারীবিকাশ ও সমাজকল্যাণ দফতর কন্যাশ্রী প্রকল্পের জন্য একটি ওয়েবাসাইট তৈরি করেছে। তাতে এই প্রকল্প সম্পর্কে সব রকমের তথ্য, সাফল্যের খতিয়ান ছাড়াও রয়েছে অনেক কাহিনি। কন্যাশ্রী প্রকল্প চালু হওয়ার পরে কী ভাবে স্কুলছুট, নাবালিকা বিবাহ, নারী পাচার কমেছে, সে সব কথাই নেদারল্যান্ডেসের দ্যা হেগ শহরের অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন মমতা। সে সব কাহিনি বর্ণিত রয়েছে ওই ওয়েবসাইটে। পড়ুয়ারাই জানিয়েছেন তাঁদের অভিজ্ঞতার কথা। এই প্রকল্পের আওতায় দুধরনের আর্থিক সাহায্য পাওয়া যায়। নিয়ম বলছে, ১৩ বছর থেকে ১৮ বছরের মেয়ে স্কুল পড়ুয়ারা বার্ষিক ৭৫০ টাকা করে পেতে পারে। তবে সব মেয়েই এই সুযোগ পাবে না। পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা এমন পরিবারের মেয়েরাই এই সরকারি অনুদান পেতে পারেন যার পরিবারের বার্ষিক আয় ১ লাখ ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত। এ ছাড়াও যে সব মেয়েরা সরকারি হোমে থাকেন বা তাদের বাবা-মা কেউ নেই তারাও পাবে এই সুবিধা । পিতৃমাতৃহীনদের জন্য পরিবারের আয় ১ লাখ ২০ হাজার টাকার বেশি হলেও সুযোগ পাওয়া যায়। এই প্রকল্পের সুবিধা নেওয়ার জন্য সবথেকে জরুরি দুটি বিষয়। এক, তাকে কোনও শিক্ষামূলক সংস্থার ছাত্রী হতে হবে এবং দুই, তাকে অবিবাহিত হতে হবে। কারণ, এই প্রকল্পের অন্যতম লক্ষ্যই হল বাল্যবিবাহ রোধ করা। মনে রাখতে হবে শুধু ১৩ বছর বয়স হলেই হবে না সেই সঙ্গে ওই পড়ুয়াকে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী হতে হবে। সেই সঙ্গে থাকতে হবে নিজস্ব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট। সেখানেই বার্ষিক ৭৫০ টাকা এবং ১৮ বছর পূর্ণ হলে এককালীন ২৫ হাজার টাকা জমা দেয় সরকার। আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, কোনও মেয়ে ক্রীড়া প্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষণরত থাকলে সে বার্ষিক অনুদান না পেলেও এককালীন ২৫ হাজার টাকার জন্য আবেদন করতে পারেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যে ক্ষমতায় আসেন ২০১১ সালে। দুবছর পরে ২০১৩ সালে তিনি এই প্রকল্প চালু করেন। বরাবার নিজের স্বপ্নের ও ভালবাসার প্রকল্প বলে এসেছেন কন্যাশ্রীকে। নিজেই তৈরি করেন প্রকল্পের লোগো। নির্বাচনের প্রচারে সবুজসাথী থেকে দুটাকা কেজি চাল, রাস্তা নির্মাণ থেকে হাসপাতালের শয্যা বৃদ্ধি সব সাফল্যের খতিয়ানই তিনি তুলে ধরেন। তবে আলাদা গুরুত্ব দেন কন্যাশ্রী প্রকল্পকে। একের পর এক সম্মান আদায় সেই সাফল্যের খতিয়ানকে আরও দীর্ঘ করেছে। নিজেই নিজের প্রকল্পকে প্রথম পুরস্কারটি দিয়েছিলেন। এর পরে কেন্দ্রের স্বীকৃতিও মিলেছে। এবার রাষ্ট্রপুঞ্জের বিচারে প্রথম স্থান পেল এই প্রকল্প। দেখুন কন্যাশ্রীর সম্মানের তালিকা বর্তমানে চতুর্থ থেকে অষ্টম শ্রেণিতে স্বাস্থ্য ও শারীরশিক্ষা এবং বাংলা ভাষাচর্চা বইয়ে কন্যাশ্রীর উল্লেখ রয়েছে। ইউএন পাবলিক সার্ভিস অ্যাওয়ার্ড জয়ের পরে পাঠ্যবইতে এবার সংযোজিত হবে কন্যাশ্রীর বিশ্বজয়ের আখ্যান। ইতিমধ্যেই কন্যাশ্রীর একটি মোবাইল অ্যাপও তৈরি হয়েছে। আর/০৭:১৪/২৮ জুন



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2tVQYbx
June 28, 2017 at 02:21PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top