যেসব কারনে সাজা কমলো ঐশীর….

সুরমা টাইমস ডেস্ক ঃ

পুলিশ কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমান হত্যা মামলায় পাঁচ বিবেচনায় তাদের একমাত্র মেয়ে ঐশী রহমানের সাজা মৃত্যুদণ্ড থেকে কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে হাইকোর্ট।

বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার এ রায় ঘোষণা করে।

পাঁচটি বিষয় বিবেচনায় ঐশী রহমানের সাজা কমানো হয়েছে।

এক. ঘটনার সময় ঐশী রহমান মাদকাসক্ত ছিলেন।

দুই. ঐশীর নানি ও এক মামা মানসিক রোগী।

তিন. ঘটনার সময় ঐশীর বয়স ছিল ১৯ বছর।

চার. এর আগে তিনি কোনো অপরাধের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না।

পাঁচ. ঘটনার পর ঐশী রহমান থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন।

ঐশী রহমানের আইনজীবী সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী সাংবাদিকদের জানান, এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে। আপিলে ঐশী খালাস পাবেন বলে আশা প্রকাশ করেন এ আইনজীবী।

ঐশীর সাজা আমৃত্যু কারাদণ্ড না যাবজ্জীবন জানতে চাইলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হক জহির জানান, পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হলে বিষয়টি জানা যাবে। সেখানে বিষয়টি নিয়ে ব্যাখ্যা থাকবে।

রাষ্ট্রপক্ষে আপিল করা হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আলাপ-আলোচনা করে পরে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

আদালতে ঐশীর পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আফজাল এইচ খান ও আইনজীবী সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জহিরুল হক জহির ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আতিকুল হক সেলিম।

গত ১২ মার্চ পুলিশ কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমান হত্যা মামলায় মৃত্যদণ্ডপ্রাপ্ত ঐশীর ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি শুরু হয়। গত ১০ এপ্রিল মানসিক অবস্থা পর্যক্ষণ করেন আদালত। বিচারপতিরা খাস কামরায় নিয়ে ২০ মিনিট ঐশী রহমানের সঙ্গে কথা বলেছ।

২০১৫ সালের ১৫ নভেম্বর ঢাকার ৩ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক সাঈদ আহমেদ পুলিশ কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমানকে হত্যার দায়ে তাদের মেয়ে ঐশী রহমানকে দুবার মৃত্যুদণ্ড দেন। রায়ে প্রত্যেক মৃত্যুদণ্ডের সঙ্গে ২০ হাজার টাকা করে মোট ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অনাদায়ে দুই বছর কারাদণ্ড দেয়া হয়। তবে একটি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ার পর অন্যটি সরাসরি বাতিল হয়ে যাবে। একই সঙ্গে ঐশীর বন্ধু মিজানুর রহমান রনিকে দুই বছর কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অনাদায়ে এক মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়। মামলার অপর আসামি আসাদুজ্জামান জনিকে খালাস দেয় আদালত।

২০১৩ সালের ১৬ আগস্ট রাজধানীর মালিবাগের চামেলীবাগের বাসা থেকে পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক মাহফুজুর রহমান ও তার স্ত্রী স্বপ্না রহমানের ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় পরের দিন ১৭ আগস্ট নিহত মাহফুজুর রহমানের ছোট ভাই মো. মশিউর রহমান রুবেল পল্টন থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলার দিন বিকেলে পল্টন থানায় আত্মসমর্পণ করেন ওই দম্পতির মেয়ে ঐশী রহমান। ২০১৪ সালের ৯ মার্চ ঐশীকে প্রধান আসামি করে তিনজনের বিরুদ্ধে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের পরিদর্শক আবুল খায়ের। এ মামলায় ৩৭ জন আদালতে সাক্ষ্য দেন।



from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2rWHpvl

June 05, 2017 at 09:17PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top