টরোন্টো, ৬ জুন- ইহুদি গণহত্যার উসকানিদাতা এক উগ্রপন্থি তরুণ কানাডীয় পুলিশের পরোয়ানা আর ইন্টারপোলের রেড নোটিস মাথায় নিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আছে বলে খবর দিয়েছে কানাডার ন্যাশনাল পোস্ট। পত্রিকাটি লিখেছে, এক সময় টরোন্টোতে বসবাস করা ৩২ বছর বয়সী সালমান হোসাইনকে ঢাকার গুলশানের একটি কফিশপের সামনে দেখা গেছে গত রোববার। রূপালী রঙের একটি টয়োটা করোলায় চড়ে তিনি ওই কফিশপে গিয়েছিলেন। সেখানে তার একটি ছবিও তুলেছেন এক আলোকচিত্রী। ওই আলোকচিত্রী সালমানের আরও কিছু সাম্প্রতিক ছবি ন্যাশনাল পোস্টকে দিয়েছেন, যেখানে বনানীর একটি অভিজাত হোটেল ও উত্তরার দিয়াবাড়ি এলাকাতেও তাকে দেখা গেছে বলে পত্রিকাটির তথ্য। এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে ঢাকায় পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (গোপনীয়) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, খবরটি আমরাও জেনেছি। এ ব্যাপারে পুলিশ ইতোমধ্যে খোঁজ-খবর নেওয়া শুরু করেছে। কানাডায় সালমানের বিরুদ্ধে গণহত্যায় উসকানির মামলার তদন্ত করেছেন ওন্টারিও প্রাদেশিক পুলিশের স্টাফ সার্জেন্ট পিটার লিওঁ। ন্যাশনাল পোস্টকে তিনি বলেছেন, সালমানের নামে এখনও পরোয়ানা রয়েছে। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সালমানই প্রথম ব্যক্তি, যার বিরুদ্ধে কানাডায় প্রথমবারের মত গণহত্যার উসকানি দিয়ে প্রচার চালানোর অভিযোগ আনা হয়েছে। ২০১০ সালের জুলাই মাসে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের কিছুদিন আগেই সালমান টরোন্টো থেকে লাপাত্তা হয়ে যান। পরে তার বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড কর্নার নোটিস জারি করা হয়। বিচারে দোষী সাব্যস্ত হলে তার ১৬ বছর পর্যন্ত জেল খাটতে হতে পারে বলে ন্যাশনাল পোস্ট জানিয়েছে। সালমানের বাংলাদেশে অবস্থানের বিষয়ে কথা বলতে ন্যাশনাল পোস্ট অটোয়ার একজন বাংলাদেশি কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা পত্রিকাটিকে বলেছেন, এ মামলার বিষয়ে তার কিছু জানা নেই। ওই বাংলাদেশি কর্মকর্তা পত্রিকাটিকে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বর্তমান সরকার সব ধরনের সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ এবং আন্তঃদেশীয় অপরাধের বিপক্ষে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছেন। কানাডা সরকার কোনো সহযোগিতা চাইলে আগে তা বাংলাদেশ সরকারকে জানাতে হবে। সালমানকে ধরিয়ে দিতে ইন্টারপোলের রেড নোটিস জারি থাকলেও বাংলাদেশের সঙ্গ কানাডার কোনো আসামি প্রত্যর্পণ চুক্তি না থাকায় তাকে সেখানে বিচারের মুখোমুখি করার বিষয়টি অনিশ্চিত। রয়্যাল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশের সার্জেন্ট হ্যারল্ড প্লেইদেরার ন্যাশনাল পোস্টকে বলেছেন, ইন্টারপোলের সদস্য দেশগুলো নিজেরাই ঠিক করে- কোন রেড নোটিসের ক্ষেত্রে তারা কতটা গুরুত্ব দেবে। ফলে রেড নোটিস জারি হলেই আসামিকে গ্রেপ্তার করে ফিরিয়ে আনা যাবে- এমন নিশ্চয়তা নেই। ন্যাশনাল পোস্ট লিখেছে, অভিযোগ দায়েরের কিছুদিন আগে সালমান কানাডা ছেড়ে গেলেও ইন্টারনেটে নিজের উপস্থিতির প্রমাণ রেখেছেন তিনি। গত সেপ্টেম্বরে ইউটিউবে পোস্ট একটা করা একটি ভিডিওতে একটি ছাগল জবাই করার সময় তাকে বাংলায় কথা বলতে শোনা যায়। ওই পোস্টে লেখা হয়, বিশ্বের যেখানেই ইহুদি, তাদের সহযোগী বা দাসদের পাওয়া যাবে, সেখানেই তাদের এভাবে নিধন করা দরকার। দায়েশ (আইএস), তোমরা কি ইসরাইল ও ইহুদিদের প্রতি তোমাদের দায়িত্বের কথা ভুলে গেছ? একজন ফেইসবুক ব্যবহারকারীকে উদ্ধৃত করে ন্যাশনাল পোস্ট লিখেছে, তিনি সালমানের বিষযে বিস্তারিত না জেনেই সোশাল মিডিয়ায় তার বন্ধু হয়েছিলেন। তিনি জানান, বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত সালমান ডজনখানেক নামে সোশাল মিডিয়ায় কর্মকাণ্ড চালান এবং তিনি ক্রেডিট কার্ড হ্যাংকিংয়েও জড়িত। সালমানের দেওয়া ঢাকার একটি ফোন নম্বরও ওই ফেইসবুক ব্যবহারকারী ন্যাশনাল পোস্টকে দিয়েছেন। পত্রিকাটির পক্ষে একজন সাংবাদিক ওই নম্বরে ফোন করে নিজের পরিচয় দিলে ওপ্রান্ত থেকে ইংরেজিতে বলা হয় তিনি ভুল লোককে ফোন করেছেন এবং তারপর লাইন কেটে দেওয়া হয়। ন্যাশনাল পোস্ট লিখেছে, ইহুদিদের বিরুদ্ধে ইন্টারনেটে বিদ্বেষ ছড়ানোর ওভিযোগে ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সালমানের ছাত্রত্ব বাতিল করা হয়। তখন তিনি ইহুদিদের গণহারে হত্যার আহ্বান জানিয়ে বক্তব্য প্রচার শুরু করেন। ২০১০ সালের জুলাইয়ে কানাডার পুলিশ মামলা করার কিছুদিন আগে তিনি কানাডা ছেড়ে পালিয়ে যান। এ আর/১৩:৪৮/৬ জুন
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2rZGzxL
June 06, 2017 at 07:48PM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন