লন্ডন, ১৫ জুন- ওয়েস্ট ইন্ডিজে ২০০৭ বিশ্বকাপের সেই আলোচিত জয়ের পর এশিয়া কাপ ছাড়া ভারতের বিপক্ষে বৈশ্বিক কোনো টুর্নামেন্টে শেষ হাসি হাসতে পারেনি বাংলাদেশ। গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও একেবারে শেষ মুহূর্তে তীরে এসে তরী ডুবিয়ে ১ রানে হেরে এসেছে টাইগার বাহিনী। ফের পড়শী পরাশক্তিদের মুখোমুখি মাশরাফি বিন মুর্তজার দল। তবে এবার আরও শক্তি-সামর্থ্যের দল হিসেবে নিজেদের প্রমাণ করে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালে উঠেছে বাংলাদেশ। প্রত্যাশা ভালো খেলে এই ম্যাচেও ফলাফল নিজেদের অনুকূলে আনা। বিরাট কোহলিদের বিপক্ষে ঐতিহাসিক এ ম্যাচে কিভাবে জিততে পারে বাংলাদেশ? টাইগার বাহিনীর জেতার জন্য এমন তিন মন্ত্র দিয়েছে ক্রিকইনফোর ট্যাকটিকস বোর্ড। কী সেই তিন মন্ত্র? তামিম-নির্ভরতা কমিয়ে দাঁড়াতে হবে টপঅর্ডারকে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে গত তিন ম্যাচে বাংলাদেশিদের মধ্যে এখন পর্যন্ত তামিমই ২২৩ রান করে সর্বোচ্চ সংগ্রাহকের তালিকায় রয়েছেন। শেষ ম্যাচে রান না পেলেও তার প্রথম ম্যাচে সেঞ্চুরি এবং পরের ম্যাচেও প্রায় সেঞ্চুরির কাছাকাছি সংগ্রহ বাংলাদেশ দলের স্কোরকার্ডকে এগিয়ে দিয়েছে অনেকখানি। কিন্তু টপঅর্ডারে তিনি ছাড়া বাকিদের অবস্থা টালমাটাল। সৌম্য সরকার, ইমরুল কায়েস ও সাব্বির রহমান- এই তিন টপঅর্ডার ব্যাটসম্যানের মোট ৭ ইনিংসে বাংলাদেশ রান পেয়েছে মাত্র ৬৭, গড়ে ১১.১৭। ঐতিহাসিক ম্যাচটিতে বাংলাদেশের এই টপঅর্ডারকেই কোমর সোজা করে দাঁড়াতে হবে ভারতের শক্তিশালী পেস অ্যাটাকের বিরুদ্ধে, এমন পেস অ্যাটাক যারা কিনা এখন পর্যন্ত পাওয়ার প্লেতে ৪.৩৩ ইকোনমি রেট ধরে রেখে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে রয়েছে। মোস্তাফিজকে জ্বলে উঠতে হবে, আঘাত করতে হবে ভারতের দুর্বল জায়গায় বাংলাদেশের টপঅর্ডার যেখানে টালমাটাল সেখানে ভারতের টপঅর্ডার রীতিমত উড়ছে। গত তিন ম্যাচে তিন টপঅর্ডার ব্যাটসম্যান রোহিত শর্মা, শিখর ধাওয়ান ও বিরাট কোহলি মিলে সংগ্রহ করেছেন ৬০৯ রান। সুতরাং ভারতের রানের ঘোড়ার লাগাম টানতে হলে বাংলাদেশের পেস অ্যাটাককেই সামনে আসতে হবে। এক্ষেত্রে অধিনায়ক মাশরাফির তুরুপের তাস মোস্তাফিজুর রহমানকেই অগ্রভাগে আসতে হবে। তাছাড়া, ভারতই এখন পর্যন্ত মোস্তাফিজের প্রিয় প্রতিপক্ষ বলে প্রমাণ হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বিগত তিন ম্যাচেই তিনি ১৩টি উইকেট নিয়েছেন ১১.৫৩ গড়ে। এছাড়া টাইগার পেস অ্যাটাকের অন্যতম ভরসা রুবেল হোসেন, যিনি বৈশ্বিক টুর্নামেন্টে নিজের সামর্থ্যের প্রমাণ দিয়েছেন বারবার, তাকেও জ্বলে উঠতে হবে। এই রুবেল আবার বিরাট কোহলিকে সামনে পেলেই আগুন ঝরান। দুপক্ষের বিগত চার লড়াইয়ে দুবারই কোহলিকে আউট করেছেন রুবেল। সুতরাং কোহলি যে রানের ঘোড়া ছুটিয়েছেন তার সামনে বোলিংয়ের তলোয়ারনিয়ে রুবেলকে আবারও দাঁড়িয়ে যেতে হবে। জিততে হবে ডেথ ওভারের লড়াইয়ে এবারের টুর্নামেন্টে এ পর্যন্ত বাংলাদেশের বোলিং সাদামাটা দেখালেও গত ২০১৫ বিশ্বকাপের পর ডেথ ওভারে এখনও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আটটি দলের মধ্যে দ্বিতীয় সেরা বাংলাদেশ। সাধারণত ধুমধাড়াক্কা এই ক্রিকেটে শেষ ১০ ওভারকে ডেথ বা স্লগ ওভার ধরা হয়। এই ডেথ ওভারে রান খরচের গড় ১০-১২ ছাড়িয়ে গেলেও বাংলাদেশি বোলাররা ওভারপ্রতি রান দিয়েছেন ৬ দশমিক ৮ করে। অন্যদিকে ব্যাটিং ফর্মের তুঙ্গে থাকা ভারতীয়রা এই সময়ে অন্য দলগুলোর বোলার থেকে রান তুলে নিয়েছেন ওভারপ্রতি ৮.১৮ করে। ভারত যদি প্রথমে ব্যাট করে তবে বাংলাদেশের বোলাররা ডেথ ওভারে তাদের স্বরূপে আবির্ভূত হলে স্বাভাবিক রান সংগ্রহে ধাক্কা খেতে পারে বিরাট কোহলি বাহিনী। আর তাতে রান তাড়া করার ক্ষেত্রে চাপমুক্ত থাকতে পারবে তামিম-সৌম্য-সাব্বির-মুশফিক-সাকিব-মাহমুদউল্লাহদের নিয়ে গড়া ব্যাটিং লাইনআপ। এই তিন মন্ত্র কাজে লাগাতে পারলে বাংলাদেশ যে ১০ বছর পর ভারতের বিপক্ষে বৈশ্বিক কোনো টুর্নামেন্টে শেষ হাসি হাসতে পারবে- সে প্রত্যাশা করতেই পারেন টাইগারসমর্থকরা। আর/১৭:১৪/১৫ জুন
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2t4V94p
June 15, 2017 at 09:05PM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন