ইসলামাবাদ, ২১ জুন- স্পট ফিক্সিং মোহাম্মদ আমিরের জীবনটাকে কলঙ্কজনক অধ্যায়ে প্রবেশ করিয়েছিল। ক্রিকেট থেকে যার জের ধরে নির্বাসিত থাকতে হয়েছে পাঁচটি বছর। এই সময়ে কতকিছুই না পরিবর্তন হয়েছে। তবে এই সময়টাতে আমিরের পরিবার কাটিয়েছে দুঃসময়। প্রতিবেশীরা সময় পেলেই বাঁকা চোখে তাকিয়েছে। আড়ালে আবডালে কেউ ধিক্কারও দিয়েছে। কী যন্ত্রণার সময় ছিল তখন। সম্ভাবনাময় উদীয়মান পেসার আমির তখন চুপসে যাওয়া বেলুন। লজ্জায় মাঝে মধ্যে মরে যেতে ই্চ্ছা করেছিল। কিন্তু সময় বদলেছে। সেই আমির নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে পাকিস্তানের পেস অ্যাটাক শিবিরের মূল দায়িত্বে। সেই আমির চমকেই বলতে গেলে ভারতকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শিরোপা জিতেছে পাকিস্তান। ফাইনালে বল হাতে আমিরের তোপে শুরুতেই বিদায় নেন রোহিত শর্মা, শিখর ধাওয়ান ও বিরাট কোহলি। টপ অর্ডারের এই তিন ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে বিপদে পড়া ভারত আর মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শিরোপা বদলে দিয়েছে আমিরের পারিবারিক জীবন। আমিরের দুই ভাই নাভিদ এবং ইজাজ। তাঁরাই এখন বলছেন, রবিবার ওভালে নতুন বল হাতে আমিরের স্পেলটাই সমস্ত লজ্জা ধুয়ে পরিবারকে সম্ভ্রমের জায়গায় দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। নাভিদ সোমবার ভারতীয় প্রচারমাধ্যমকে বলেন, রাওয়ালপিন্ডিতে চাঙ্গা বুঙ্গিয়াল গ্রামে তখন থাকতাম আমরা। আমির স্পট ফিক্সিংয়ে যখন দোষী সাব্যস্ত হয়, তখন গ্রামে লোকের সঙ্গে মিশতে বা কথা বলতেই লজ্জা করত। তার পর লাহোরে চলে আসি আমরা। কিন্তু আমাদের অনেক আত্মীয়ই রয়ে গিয়েছেন রাওয়ালপিন্ডিতে। এখন গ্রামে গেলে ভাইয়ের জন্যই ফের চোখ তুলে সকলের সঙ্গে কথা বলতে পারব। এখানেই না থেমে পাকিস্তানের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ের আনন্দে তিনি গড়গড় করে বলে চলেন, পাঁচ বছরের নির্বাসন কাটিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার পর আমির চেয়েছিল এমন কিছু পারফরম্যান্স করতে যা ওকে আলাদা ভাবে চিনিয়ে দেবে। রবিবার ওভালে সেটা ও করে দেখিয়ে দিল। আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া পরিবার থেকে উঠে আসা আমিরের। পরিবারে ছয় ভাই এক বোনের মধ্যে তিনি ষষ্ঠ। এক বছর আগে শাস্তি কাটিয়ে আমির যখন টিমে ফেরেন, তখন পাকিস্তানেই অনেকে বলেছে জাতীয় দলে আমিরকে কোচ মিকি আর্থার বাড়তি সুবিধা দিচ্ছেন। কিন্তু গত বছর এশিয়া টি-টোয়েন্টি চ্যাম্পিয়নশিপে ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহালির প্রশংসার পরেই সব বন্ধ হয়ে যায়। আর রবিবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ফাইনালে নতুন বল হাতে ভারতের তিন টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি এবং শিখর ধাওয়ানকে প্যাভিলিয়নের রাস্তা দেখিয়ে আমির এখন পাকিস্তানে জাতীয় বীরের মর্যাদা পাচ্ছেন। আমিরের প্রথম কোচ বাজওয়া বলছেন, পাঁচ বছর নির্বাসনের পর মাঠে ফিরে এ ভাবে পারফর্ম করাটা সহজ কাজ নয়। আমির সেই ফিটনেসটা বজায় রাখতে পেরেছে বলেই আজ সাফল্য পাচ্ছে। আমিরের প্রথম কোচ বাজওয়া বলছেন, পাঁচ বছর নির্বাসনের পর মাঠে ফিরে এ ভাবে পারফর্ম করাটা সহজ কাজ নয়। আমির সেই ফিটনেসটা বজায় রাখতে পেরেছে বলেই আজ সাফল্য পাচ্ছে।
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2sMUHdg
June 21, 2017 at 07:41AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন