হতে পারেন লিওনেল মেসি এই গ্রহের অন্যতম সেরা ফুটবলার। তার সুবাদে তার মা এবং বউও হয়ে উঠতে পারেন খ্যাতিমান। বিশ্ববাসীর কাছে হতে পারে অন্য রকম সম্মানের পাত্রী। সেই খ্যাতি-সম্মানের অন্তরালে তারা তো পরস্পর বউ-শ্বাশুড়ীই। আর বউ-শ্বাশুড়ীর যুদ্ধটা চিরায়ত। না, পরশু বিয়ের পর আজকেই মেসির মা-বউয়ের যুদ্ধটা শুরু হয়ে যায়নি। মেসির মা চেলিয়া কুচিত্তিনি মেসি ও বউ আন্তোনেল্লা রোকুজ্জোর মধ্যে সম্পর্কটা তিক্ততায় রূপ নিয়েছে দীর্ঘ দিন ধরেই। শুক্রবারের বিয়ে অন্তরের সেই দ্বন্দ্বটা নিয়ে এসেছে প্রকাশ্যে! শুক্রবার বাল্যকালের বান্ধবী আন্তোনেল্লা রোকুজ্জোকে বধুবেশে ঘরে তুলে নিয়েছেন মেসি। আর্জেন্টিনার রোজারিওতে পাঁচ তারা হোটেল সিটি সেন্টার কমপ্লেক্সে ঠিক বিয়ে নয়, যেন মঞ্চস্থ হলো এক মহাযজ্ঞ। সাবেক-বর্তমান মিলিয়ে ক্লাব বার্সেলোনা ও আর্জেন্টিনা জাতীয় দলের অনেক তারকা ফুটবলারই শুধু নন, সিটি সেন্টার কমপ্লেক্সে উপস্থিত ছিলেন আরও অনেক রথী-মহারথী। আর্জেন্টিনার গণ্ডি পেরিয়ে মেসির বিয়ে নিয়ে হইচই পড়ে যায় পুরো বিশ্বেই। আর্জেন্টিনার গণমাধ্যম তাদের সুপার স্টারের বিয়েটাকে আখ্যায়িত করেছেন শতাব্দির সেরা বিয়ে হিসেবে! অতি জমকালো সেই বিয়ের অনুষ্ঠানই মেসির মা ও বউয়ের অন্দরের দ্বন্দ্বটা ফুটিয়ে তুলেছে বিশ্ববাসীর সামনে। সদ্য বিয়ে হলেও মেসি-রোকুজ্জো একসঙ্গে বসবাস করছেন অনেক দিন ধরেই। তাদের ঘরে দুটি ছেলেও এসেছে। জানা গেছে, রোকুজ্জোর সঙ্গে মেসির মায়ের দ্বন্দ্বটাও অনেক আগে থেকেই। তবে সদ্য বউয়ের খেতাব পাওয়া আন্তোনেল্লা রোকুজ্জো নন, আপাতত অভিযোগের কাঠগড়ায় মেসির মা চেলিয়া কুচিত্তিনিই। ভেতরের ঘটনা একবার ফাস হলে পরে অনেক প্রমাণই মেলে। সবচেয়ে বড় গণ্ডগোলটা বাঁধিয়েছে বিয়ের অনুষ্ঠানে পরে আসা মেসির মায়ের পোষাক! আর্জেন্টাইনদের রীতি অনুযায়ী বিয়ের দিন একমাত্র কনেই সাদা পোষাক পরেন। অন্য কেউ কনের সাদা পোষাকের সদৃশ্য কোনো পোষাক পরা মানে কনেকে প্রকারান্তরে অসম্মান করা! মেসির মা করেছেন সেই কাজটাই। বিয়ের অনুষ্ঠানে মেসির দুই সন্তানের জননী রোকুজ্জো পরে ছিলেন ধবধবে সাদা গাউন। যার নিচের দিকের অংশ পায়ের পাতা ছাপিয়ে ফ্লোরে লেপ্টে ছিল। মেসির মা একদম সাদা পোষাক পরেননি বটে। তিনি পরেছিলেন সোনালী সাদা গাউন। কিন্তু তার পোষাকের নিচের অংশে কনে রোকুজ্জোর পোষাকের মতো বাড়তি ফিতা লাগানো। এবং তা রোকুজ্জোর পোষাকের মতোই পায়ের পাতা ছাপিয়ে ফ্লোর লেপ্টে দিচ্ছিল! বরের মা কেন কনের পোষাকের সদৃশ্য পোষাক পরবেন, তা নিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠানেই শুরু হয়ে যায় হইচই। অনেকে অনেক রকম মন্তব্যই করছেন। কেউ বলেছেন এটা হয়তো কাকতালীয়। আবার কেউ মনে করছেন ছেলের বউকে হেয় করতে মেসির মা ইচ্ছা করেই এমন কাণ্ড করেছেন! তাদের মতে, এর মাধ্যমে চেলিয়া বুঝিয়ে দিতে চেয়েছেন, তিনি আসলে ছেলের বউকে ঠিক পছন্দ করেন না। মেয়েদের ফ্যাশনের বিষয় নিয়ে রিপোর্ট করেন, আর্জেন্টিনার এমন এক সাংবাদিক বলেছেন বিয়ের অনুষ্ঠানে বরের মার এমন পোষাক পরা রীতি সম্মত নয়! মেসির মা অবশ্য বলেছেন, তার পোষাকটা কালো হওয়ারই কথা ছিল। কিন্তু এটা বলেও সমালোচনা এড়াতে পারছেন না তিনি। কারণ, পোষাক ডিজাইনার বাছাই করেছিলেন তারাই। বিয়ের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রকাশ, দ্বন্দ্ব আসলে শুধু বউ-শ্বাশুড়ীর মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। বউ-শ্বাশুড়ীর সীমানা পেরিয়ে তা অনেক আগেই ছড়িয়ে পড়েছে দুই পরিবারের মধ্যে। অনেক দিন ধরেই মেসির পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে রোকুজ্জোর পরিবরের সদস্যদের কথা-বার্তা বন্ধ! আসা-যাওয়ার তো প্রশ্নই উঠে না। ঘটনা যে সত্য, তা বুঝিয়ে দিয়েছে বিয়ের অনুষ্ঠান। বিয়ে উপলক্ষে মেসি সিটি সেন্টার কমপ্লেক্সের পুরো একটা ফ্লোর ভাড়া করেছিলেন। মেসির পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা-বার্তা এড়াতে রোকুজ্জোর পরিবার ভাড়া করেছিল অন্য আরেকটা ফ্লোর! চেলিয়া নাকি কখনোই চাননি তার বিখ্যাত ছেলে রোকুজ্জোর মতো একটা মেয়েকে বিয়ে করুক। মেসির এক বন্ধু তুলে ধরেছেন ২০১০ বিশ্বকাপের এক ঘটনা। বলেছেন, বিশ্বকাপ দেখতে মেসির মা-বাবাও দক্ষিণ আফ্রিকা যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তারা যখন শুনতে পান রোকুজ্জো ইতিমধ্যেই দক্ষিণ আফ্রিকায় পৌঁছে গেছে, সঙ্গে সঙ্গে চেচিয়ে উঠেন মেসির মা। উচ্চস্বরে বলে উঠেন, আন্তোনেল্লা, আন্তোনেল্লা, আন্তোনেল্লা কে? ঘটনা শুনে মেসি তার মা-বাবাকে আর্জেন্টিনাতেই থাকতে বলেন! বিয়েতে দাওয়াত পাননি, মেসির এমন এক ফুফুর অভিযোগের তীরও চেলিয়ার দিকেই। আর্জেন্টাইন-আমেরিকান এক টিভি চ্যানেলের এক সরাসরি সম্প্রচার অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, বিয়েতে মেসির বাবার পক্ষের আত্মীয়-সজনের তুলনায় মেসির মায়ের পক্ষের লোকজনই দাওয়াত পেয়েছে বেশি! এতো বড় বিয়ে! ধীরে ধীরে ভেতরের আরও অনেক ঘটনাই হয়তো বেরিয়ে আসবে। তবে অন্য সব ঘটনা বাদ দিয়ে মেসির মা এবং বউয়ের দ্বন্দ্বটা নিয়েই আলোচনা বেশি। বিয়ের আগেই হবু পুত্রবধুর সঙ্গে মেসির মায়ের যুদ্ধটা তুঙ্গে। বিয়ের পর সেই তিক্ততা আরও বাড়ে, নাকি অতীতের সবকিছু ভুলে তারা আদর্শ বউ-শ্বাশুড়ী হয়ে উঠেন, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2sBV7iT
July 03, 2017 at 07:32AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন