কলকাতা, ১৮ জুলাই - একদিকে ভরপুর চ্যালেঞ্জ। অন্যদিকে দুস্তর সীমাবদ্ধতা। দুইয়ে মিলে পুরুলিয়ার নির্যাতিতা শিশুকে নিয়ে রীতিমতো অসহায় ছিলেন পিজি হাসপাতালের চিকিৎসকরা। দুর্ভাবনারও শেষ নেই। কারণ সাড়ে তিন বছরের খুদের শরীরে ঢুকে ছিল সাত-সাতটা সুচ! পাঁজরে, তলপেটে, যৌনাঙ্গের উপরে। শিরা-ধমনি অক্ষত রেখে অপারেশন করাটাই দুঁদে সার্জনদের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। শেষপর্যন্ত অবশ্য বিপদ কাটল। মঙ্গলবার এসএসকেএমে সফল অস্ত্রোপচার হল পুরুলিয়ার সাড়ে তিন বছরের নির্যাতিতা শিশুটির। সফল ভাবেই এদিন অস্ত্রোপচার হয়েছে, জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এদিন সাতটি সূচই শিশুটির দেহ থেকে বের করতে পেরেছেন চিকিৎসকরা। আপাতত সুস্থই রয়েছে সে। তবে ৪৮ ঘণ্টা নজর রাখার রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গত শনিবার সন্ধ্যায় পুরুলিয়া দেবেন মাহাতো হাসপাতাল থেকে শিশুটিকে কলকাতায় এসএসকেএম হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছিল। জানা গিয়েছিল, পুরুলিয়ার ৬২ বছরের এক বৃদ্ধর বিকৃত মানসিকতার শিকার হয়েছিল সে। মায়ের সঙ্গে সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও মেয়েকেও ছাড়েননি অভিযুক্ত সনাতন ঠাকুর। বহুদিন ধরে অসুস্থ শিশুটিকে হাসপাতালে নিয়ে আসার পরই এক্স-রে করানো হয়। তখনই তার শরীরে সাতটি সূচ দেখতে পান চিকিৎসকরা। প্রথমে ঠিক ছিল, সোমবার অপারেশন হবে। কিন্তু হয়নি। কারণ, শিশুটির শারীরিক অবস্থার কথা মাথায় রেখে ডাক্তারবাবুরা ভেবে-বুঝে এগোতে চান। স্বাস্থ্যভবনের নির্দেশে বিভাগীয় প্রধানদের নিয়ে নতুন করে তৈরি হয় আট বিশেষজ্ঞের বোর্ড। যাতে রয়েছেন অ্যানেস্থেশিয়ার শঙ্করী সাঁতরা, ও সি ভট্টাচার্য, অর্থোপেডিকের এ কে পাল। এছাড়াও রয়েছেন গাইনোর পি এস চক্রবর্তী, পেডিয়াট্রিক মেডিসিনের এস দত্ত, গ্যাসট্রোর এস রায়, ইউরোলজির ডি পাল এবং পেডিয়াট্রিকের ঋষভদেব পাত্র। বোর্ডের মাথায় রয়েছেন ডা. পাত্র, আদতে যাঁর অধীনে ভরতি রয়েছে নির্যাতিত শিশুটি। এসএসকেএমের অধিকর্তা অজয় রায় জানান, পুলিশি তদন্তের স্বার্থে শিশুটির অ্যানাল সোয়াব ও ভ্যাজাইনাল সোয়াব সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। সোমবার বিকেল তিনটে নাগাদ শিশুটির বেডের পাশেই বৈঠকে বসেছিলেন নবনিযুক্ত বোর্ডের সদস্যরা। ঠিক হয়, মঙ্গলবার সকালে শিশুটির আরও কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা হবে। রিপোর্ট ঠিক থাকলে বিকেলে অপারেশন করে সূচ বের করার চেষ্টা হবে। অপারেশনের সময় সূচগুলি যাতে ঠিকঠাক চিহ্নিত করা যায়, সে জন্য সিআর্ম নামে অত্যাধুনিক যন্ত্র ব্যবহার করা হবে বলে হাসপাতাল-সূত্র জানায়। মেয়েটির মাথাতেও সুচ বিঁধে আছে কিনা নিশ্চিত হতে মঙ্গলবার সিটি-স্ক্যানও করানো হয়। শেষপর্যন্ত এদিনই সফলভাবে অস্ত্রোপচার হল শিশুটির।এদিকে, এখনও পলাতক সনাতন ঠাকুরের কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। তাকে খুঁজতে সবরকম প্রচেষ্টাই চালাচ্ছে পুলিশ প্রশাসন। বিভিন্ন থানায় পাঠানো হয়েছে সনাতনের ছবিও। ওই এলাকার আশপাশের মানুষকেও কোনও খোঁজ পেলে জানাতে বলা হয়েছে। কেএনপি/০৮:২৭/১৮ জুলাই
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2vegpWp
July 19, 2017 at 02:59AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন