অবিশ্বাস্য ঘটনাটি ঘটল দ্বিতীয় সেটে। অল ইংল্যান্ড ক্লাবে দর্শকের তুমুল করতালিতে ভাসলেন মারিন চিলিচ। টেনিসের যেকোনো টুর্নামেন্টে প্রতিপক্ষ যখন রজার ফেদেরার, এমন কোনো ঘটনা অভাবনীয়। উইম্বলডনে তো আরও বেশি। এ টুর্নামেন্ট যে শুধুই ফেদেরারের, এখানে যে সুইস তারকার প্রতিদ্বন্দ্বীর জন্য কোনো অনুকম্পা দেখায় না দর্শক! কিন্তু চোটগ্রস্ত চিলিচের আজ করতালি জুটল ফেদেরারের বিপক্ষেই। ওটুকুই সান্ত্বনা তাঁর, চিলিচকে ৬-৩, ৬-১, ৬-৪ গেমে হারিয়ে প্রত্যাশিতভাবে রেকর্ড আটবারের মতো উইম্বলডন জিতে নিলেন ফেদেরার। শুধু সার্ভ আর ভলিতে ভর করে দ্বিতীয় সেটে একটি গেম জিতেছেন চিলিচ। দর্শকের ক্ষণিক ভালোবাসা আর সমবেদনাও সঙ্গী হলো তাঁর। প্রতিদ্বন্দ্বীর জন্য ফেদেরারের তেমন কিছু মনে হচ্ছিল কি না, সেটা অবশ্য খেলা দেখে বোঝাই গেল না। ক্রোয়েশিয়ান তারকাকে যেকোনো সুযোগই দিলেন না ফেদেরার! চিলিচ যে চোট পেয়েছেন, সেটা দ্বিতীয় সেটের মাঝপথে বোঝা গেছে। কিন্তু তার আগ থেকেই দাপট দেখিয়েছেন ফেদেরার। ম্যাচের প্রথম সার্ভেই পয়েন্ট খুইয়েছিলেন চিলিচ। একটু হলেও যে চাপ অনুভব করছেন, সেটা বুঝিয়ে দিয়ে রিটার্ন করতে গিয়ে পয়েন্ট খুইয়েছেন। সে চাপ সামলে গেমটা জিতে নিলেও পরে আর সামাল দিতে পারেননি। চিলিচের তৃতীয় সার্ভ ব্রেক করে এগিয়ে গেলেন ফেদেরার। এরপর থেকেই শুধু অনুসরণ করে বেড়িয়েছেন চিলিচ, টেনিসের সর্বকালের সেরা খেলোয়াড়কে আর ছোঁয়া হয়নি তাঁর। ৬-৩ গেমে প্রথম সেট জেতার পর দ্বিতীয় সেটে ফেদেরারের জয় এল আরও অনায়াসে, ৬-১। দ্বিতীয় সেট শেষ হতেই মেডিকেল টাইম আউট নিলেন চিলিচ। পায়ে নতুন ব্যান্ডেজ বাঁধলেন, কিছু ওষুধও গিললেন। সেটা দেখে দ্য গার্ডিয়ানের ধারাভাষ্যে হালকা কৌতুকও হয়ে গেল, মারিন চিলিচ শুশ্রূষা নিচ্ছেন। তবে আমি নিশ্চিত নই, পৃথিবীর কোনো ডাক্তারের পক্ষেই ফেদেরারের নিদান দেওয়া সম্ভব কি না! কমেন্টেটরস কার্স যে ক্রিকেটের একক সম্পত্তি নয়, সেটা প্রমাণ করতেই যেন কোর্টে নামলেন চিলিচ। ধারাভাষ্যকারের কথা ভুল প্রমাণ করে লড়লেন সমানে সমান। পায়ের পাতার সমস্যায় কোর্টে নড়াচড়া কমে গিয়েছে। তবু শুধু সার্ভকেই শক্তি করে নিজের সার্ভগুলো জিতে একটু প্রতিরোধ গড়লেন। তাঁর এমন লড়াইয়ে মুগ্ধ হলো অল ইংল্যান্ড ক্লাবের ফেদেরারের জয় কামনা করা দর্শক। তৃতীয় সেটে ৩-৩ সমতার পর শেষ প্রতিরোধ ভাঙল চিলিচের। সার্ভ ব্রেক করে এগিয়ে গেলেন ফেদেরার। ইতিহাস যে গড়ে ফেলছেন, সেটা জানা হয়ে গেল তখনই। এত দিন সাতবার উইম্বলডন জিতে উইলিয়াম রেনশ ও পিট সাম্প্রাসের সঙ্গী ছিলেন। এবার এ দুজনকেও ছাড়িয়ে অল ইংল্যান্ড ক্লাবে সবচেয়ে সফল পুরুষ খেলোয়াড় ফেদেরার। নিজের গ্র্যান্ড স্লামের সংখ্যাও নিয়ে গেলেন ১৯-এ। সেটাও পুরো টুর্নামেন্টে কোনো সেট না হেরে। কে বলবে প্রায় ৩৬ ছুতে চলেছেন ফেদেরার। মাত্রই গড়েছেন উন্মুক্ত যুগে সবচেয়ে বেশি বয়সে উইম্বলডন জেতার রেকর্ড! ৩৬ সংখ্যাটাই আবার ভয় জাগাচ্ছে, রেকর্ড গড়তে গড়তে ক্লান্ত ফেদেরার না কোনো ঘোষণা দিয়ে বসেন! ট্রফিটা হাতে নেওয়ার আগে ফেদেরার চোখ বেয়ে ঝরা অশ্রু তাই তাঁর ভক্তকুলের চোখেও ঝরার কথা! আর/১২:১৪/১৭ জুলাই
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2tuwEwg
July 17, 2017 at 06:54AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন