ঢাকা, ৩১ জুলাই- নির্মাতা শামীম আহমেদ রনির সঙ্গে সম্পর্কের টানাপড়েন বেশ পুরনো খবর। অপু বিশ্বাস যেদিন নিজ সন্তান আব্রাম খান জয়কে নিয়ে টেলিভিশনে লাইভে হাজির, সে সময়ই রনির স্ত্রী তমা খান অভিযোগ করেছিলেন, শামীম আহমেদ রনি তার সাথে প্রতারণা করেছেন। এবার অভিনেতা শাকিব খানের উদ্দেশ্যে নিজের ফেসবুক ওয়ালে একটি খোলা চিঠি লিখেছেন তমা। চিঠিটা পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো- আজকে আমি অত্যন্ত দুঃখ নিয়ে কিছু কথা ফেসবুকে সবার সঙ্গে শেয়ার করতে যাচ্ছি। যদিও আমার ফ্যামিলি থেকে পরিষ্কার করে বলে দেওয়া হইছে, তারা কোনো ডিসিশনে না আসা পর্যন্ত আমি যেন আমার ব্যক্তিগত বিষয় টিষয়ে ফেসবুকে আর না লিখি....কিন্তু আমার আর চুপ করে থাকার মতন অবস্থা নেই! এভাবে চুপ করে থাকতে থাকতে আমি হয়ত একদিন স্ট্রোক করে মরে যাব! তাই, ফ্যামিলিকে ধরতে গেলে অগ্রাহ্য করেই আমি আমার না বলা কথাগুলো ফেসবুকে বলব! কারণ আমিও তো একজন মানুষ... আমারো কিছু মতামত থাকতে পারে... কথা থাকতে পারে.... যেগুলো অনেকেরই জানা নেই হয়ত। জানান উচিত সবাইকে.... যেখানে জীবনটাই আমার সেখানে কথাগুলোও নিশ্চয়ই আমার। (জানিয়ে রাখা ভাল, আমি কোনো দুধে ধোওয়া তুলসীপাতা না অথবা পীরবাবা না কিংবা নায়িকা শাবানাও না!) যাই হোক আমি এখন কথাগুলো বলবো একটা চিঠির মাধ্যমে। এবং চিঠিটা লিখা হবে একজন সুপারস্টার এর উদ্দেশ্যে ... (বিশ্বাস করুন বন্ধুগণ, সস্তা পাবলিসিটি অথবা আলোচনায় আসবার জন্য আমার এই চিঠি লিখা না। আমি অতি সাধারণ একজন মানুষ। আর পাবলিসিটির জন্য অথবা আলোচনায় এসে আমার লাভটাই বা কি!? এগুলো পাওয়ার জন্য কিছু করতে হলে অনেক আগেই অনেক কিছুই করতে পারতাম!) যাই হোক, এখন আসল কথায় আসি। মানে চিঠিটা লিখা শুরু করি। আশা করি খুব শীঘ্রই কথাগুলো প্রাপকের কাছে পোঁছে যাবে। লিখা শুরু... 5/4/3/2/1/0....একশন! শ্রদ্ধেয় দুই বাংলার সুপারস্টার, ভীষণ ক্ষমতাবান, অত্যন্ত সফল একজন মানুষ এবং আমার এক সময়ের খুব কাছের/প্রিয় বড়ভাই শাকিব খান আমার শুভেচ্ছা নেবেন। পর সমাচার এই যে, আপনার ব্যক্তিগত যে ফোন নম্বরটা আমার কাছে ছিল, ওটা বন্ধ পাচ্ছি কিছুদিন ধরে....তারপর আপনার খুব কাছের একজন মানুষের কাছে আপনার কন্টাক্ট নম্বর চেয়েছিলাম....সে সম্ভবত ইচ্ছা করেই দেয়নি অথবা সত্যি সত্যি খুঁজে পায়নি! বাই দ্য ওয়ে, এই চিঠিটা আপনাকে লেখার পেছনে কয়েকটা কারণ আছে...হয়তো ২-১ টা কারণ আপনি আন্দাজও করতে পারছেন। কিন্তু যে কারণগুলো আপনি আন্দাজ করতে পারছেন না সেগুলো হলো... মেন্টাল সিনেমা থেকে শুরু করে রংবাজ সিনেমা বানানো পর্যন্ত যে লোকটা দীর্ঘ তিন বছর আপনার সার্বক্ষণিক সঙ্গী হিসেবে ছিল...(এখনো আছে সম্ভবত) তিনি গত চার মাস ধরে আমার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ রাখছেন না। আমি কোথায় আছি/ কীভাবে আছি এটা নিয়ে তার কোনো মাথাব্যথা নাই। শুনেছি তিনি নতুন একজন প্রেমিকা জুটিয়েছেন। এবং তার সংগে চুটিয়ে প্রেম করে যাচ্ছেন। (যেখানে আমাদের মধ্যে কোনো ডিভোর্স হয় নাই) সেই প্রেমিকাটিকে নায়িকা বানিয়ে শুনেছি তিনি নতুন সিনেমাও বানাতে যাচ্ছেন। ইতিমধ্যে আবার তার নতুন নায়িকার কিছু স্টিল ছবি/ভিডিও কেউ একজন আমাকে ফেক আইডি থেকে পাঠিয়ে জানিয়েছেন উনিও নাকি বিবাহিত এবং এই সমস্ত নোংরা জিনিসপত্র মিডিয়াতে ছড়িয়ে দিতে ফেইক আইডিধারী রীতিমত আমাকে অনুরোধ করেছেন! আমি সেই ফেইক আইডিধারীকে জানিয়ে দিয়েছি- দু:খিত! (এদের কাছে ভালবাসা ভেঙ্গে যাওয়া মানে ছবি/ ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া। উফফ কি জঘন্য পরিস্থিতি!) এনিওয়ে, প্রেমিকাটির/নতুন নায়িকারটির লুক এক সময়ের অতি জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা ময়ুরীর নিউ ভার্সন! এগুলা অবশ্য আমার নিজের কথা না...তার (পরিচালকটির) কিছু পাগলটাইপ ফ্যানেরা নিয়ম করে আমাকে এসব আপডেট দেয় ইনবক্সে। যদিও এইগুলা জানার আমার তেমন কোনোই আগ্রহ নেই!! (এই সমস্ত কারণে আমার ম্যাসেঞ্জার আনস্টল করে রাখতে হয়) ইভেন তার ফ্যানেরা আমাকে এগুলোও লিখে পাঠায় যে... তাদের প্রিয় পরিচালকের ভাত পুড়ে যাচ্ছে, তাকে নিষিদ্ধ করা হইসে, সে হাসপাতালে ভর্তি ব্লা ব্লা....কিন্তু আমি কেনো তার পাশে নেই!? তাদেরকে আমি কিভাবে জানাই যে...সে নতুন যে বাসাটা ভাড়া নিসে সেটার ঠিকানা পর্যন্ত আমাকে দেওয়া হয় নাই। এগুলো খুব লজ্জার কথা, অপমানের কথা...?। যাইহোক, আপনাকে চিঠি লিখার মূল কারণে ফিরি, বর্তমানে সে তার নিজের ফ্যামিলির সংগেও কোনো প্রকার যোগাযোগ রাখছে না। তার মা- বাবা প্রায় প্রতিদিন আমাকে ফোন দেয়। আমার খোঁজ-খবর নেয়। অনেক কান্নাকাটি করে। আমার নিজের কথা বাদ দিলাম... যেহেতু আপনি আমাকে তার সুবাদেই ছোটবোন বলে ডেকেছেন এমনকি তুই সমোন্ধন করে ডেকেছেন কিছুদিন আগ-পর্যন্তও... এজন্য তাকে দয়া করে আমার হয়ে বলবেন যে আমাকে তার ভালবাসার দরকার নাই যেহেতু আমি পুরনো হয়ে গেসি... ঠিকাছে! সে তার প্রেমিকা (বউ ও হতে পারে) নিয়ে সুখে থাকুক। কিন্তু সে যেনো তার নিজের বাবা-মার একটু খোঁজ-খবর রাখে। তারা তো তাকে জন্ম দিয়েছেন। তারা খুব অসহায়। তারা চায় তাদের একমাত্র ছেলেসন্তান একজন ভাল মনোরোগ চিকিৎসক এর পরামর্শ নিক। সে সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনযাপন করুক। রনি তাদের একমাত্র ছেলেসন্তান। অন্তত এটা তাকে বুঝতে হবে, বোঝা উচিত...! আপনার ছোটবোন হিসেবে আপনার কাছে এটাই আমার প্রথম এবং একমাত্র দাবী। আর আমি কিন্তু অনেক ভেবে-চিন্তেই আপনার কাছে কথাগুলা বলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি... কারণ বিগত তিন বছরে আমি বুঝে গিয়েছি শুধুমাত্র আপনি ছাড়া সে অন্য কারুর কথা শুনতে রাজি না। শুনবেও না। কারণ আমি তাকে খুব ভাল করে চিনি। হাস্যকর হলেও সত্যি, ৪ মাস আগেও আমার সাথে যখন সে স্বাভাবিক কথাবার্তা বলত... তখন সে সেইম আপনার টোনেই এবং আপনার মতন অঙ্গভঙ্গি করেই কথা বলত। মনে হত, একজন জ্বলজ্যান্ত শাকিব খান আমার সাথে সংসার করসে! মোট কথায়, সে আপনাকে ব্যক্তিমানুষ হিসেবে গুরু মানে। এটা আমার গত ৩ বছরের অবজারভেশন। বলাবাহুল্য আজ থেকে ৭-৮ বছর আগে সে ওয়াহিদ তারেক নামক একজন নির্মিতাকেও গুরু মানতো। সে ছিল সেই নির্মাতার ফাস্ট এডি। আমার অভিনীত প্রথম টিভিসি ছিল সেই নির্মাতার নির্দেশনায়। তবে তাকে আমি এখনো গুরু মানি, অনেক শ্রদ্ধা করি। আমার প্রথম শিক্ষক বলে কথা!) যাইহোক, ওই সময়টায় আবার এই মানুষটাই কিন্তু ওয়াহিদ তারেক কে অনুকরণ করতো। আমি খুব হাসতাম তখন এগুলো দেখে। এখন মনে হয়, ওই সময়টাই ছিল আমার স্বর্ণযুগ। অনেক বাড়তি আলাপ করে ফেললাম বড়ভাই! আপনার হয়তো এত বড় চিঠি পড়ার সময় নাই...কেউ হয়তো আপনাকে পড়ে শোনাবে...জানি...! সরি...তাহলে আরেকটু বাড়তি কথা তবে বলেই ফেলি...) আপনার কি মনে পরে বড়ভাই, রাত ২টার দিকে একদিন ফোনে আপনাকে খুব করে ঝেড়েছিলাম একটা বিশেষ কারণে... এইজন্য আপনি পরদিন আমাকে দজ্জাল বলেছিলেন। এমএ/ ১২:০৩/ ৩১ জুলাই



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2vc4o6i
July 31, 2017 at 06:05AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top