ঢাকা, ২০ জুলাই-তাহসান ও মিথিলার ভালোবাসা শুরুটা হয়েছিল চিঠি আদান-প্রদানের মাধ্যমে। ডিভোর্সের চিঠি আদান-প্রদানের মধ্য দিয়েই সেই ভালোবাসার সমাপ্তি হচ্ছে। অথচ এতদিন তারা শুনিয়ে এসেছেন আনন্দ ভাগাভাগির গল্প। লুকিয়ে রেখেছেন মান-অভিমান ও অমিল। মন থেকে ভালোবাসা হারালে হয়তো তিক্ততা ধরা দেয় বেশি বেশি। সামনে এসে দাঁড়ায় অভিযোগ। বুদ্ধিমানরা সেসব প্রকাশ করেন না কখনোই। চূড়ান্ত বিচ্ছেদ হওয়ার পর সে গল্প তাহসান-মিথিলা শোনাবেন কিনা এখনই বলা যাচ্ছে না। তার আগে শুনে নিন পেছনের কথা। গল্পটি এক যুগ আগের ভালোবাসা দিবস এলেই বাড়ির দরজায় ফুল রেখে এসে মিথিলাকে ফোন করতেন তাহসান। তখন তারা দুজনই ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। সে গল্প এক যুগ আগের। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াকালে কণ্ঠশিল্পী হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেন মেধাবী ছাত্র তাহসান। সে সময় মিথিলার সঙ্গে পরিচয়। মিথিলার এক বন্ধু তার ছোটভাইয়ের জন্য তাহসানের অটোগ্রাফ নিতে যাওয়ার সময় মিথিলাকে সাথে নিয়ে যান তাহসানের বাড়িতে। ওই সময় মিথিলাও তাহসানের কিছু গান শুনেছেন, কিন্তু ভক্ত হননি। তাই প্রথম পরিচয়েই তাহসানের ব্যান্ড ব্ল্যাককে নিয়ে অনেক সমালোচনা করেন মিথিলা। আর বুঝে ওঠার আগেই তাহসানের মনের ঘরে বাঁধা পড়েন। শুরুটা চিঠি বিনিময়ে ২০০৪ সাল, মোবাইল ফোন তখন অনেকটাই সহজলভ্য। ঠিক সেই সময় মিথিলার কাছে তাহসান লিখলেন একটি চিঠি। পরিচয়ের পরদিনই তাহসান চিঠি নিয়ে কলা ভবনের প্রথম গেটের সামনে অপেক্ষা করছিলেন। এক সময় মিথিলার সামনে পড়ে গেলেন। মিথিলা কথা বললেন প্রথম। তাহসান অনুরোধ করলেন, চলো হাঁটতে হাঁটতে কথা বলি। হাঁটতে হাঁটতে অনেক কথা হলো। এক পর্যায়ে তাহসান সাহস করে মিথিলার হাতে গুঁজে দিলেন চিঠি। যাতে লেখা ছিল, Some call it love at first sight, some call it infatution. I just ignore it. মনে মনে তাহসানকে পছন্দ করেছিলেন মিথিলাও। কিন্তু চিঠির উত্তর দিয়েছিলেন ফোনে। যার প্রথম বাক্যটি ছিল এমন, এই এটা কী লিখেছ? এরপর থেকেই দুজনের ঠোঁট থেকেই ঝরতে থাকে কথার ফুলঝুরি। নিয়ম করে রাতভর চলত ফোনালাপ। শুধুই কি ফোনালাপ! চলে রিকশায় চড়ে ঠিকানাহীন ঘোরাঘুরি। মিথিলার জন্য গান চলছে ফোনালাপ, আড্ডাবাজি ও চুপিচুপি ঘোরাঘুরি। এরই মধ্যে মিথিলার জন্য তাহসান লিখে ফেললেন গান। তাহসানের সুরে গান গাইলেন মিথিলা। গানের রেকর্ডিং ও অনুশীলনের মধ্য দিয়ে টানা আট ঘণ্টা সময় পার হয়ে যায়। এই গান গাওয়ার মধ্য দিয়েই তাদের ভালোবাসা আরো ঘনীভূত হয়। গান শুধু তাদের শখ বা প্রফেশন নয়, দুটি জীবনকেও বেঁধে দেয় একই সুতোয়। বাজে বিয়ের সানাই প্রেম করেই ২০০৪-০৬ সাল পর্যন্ত কেটে যায় তাহসান-মিথিলার। সময়গুলো বেশ আনন্দে কেটেছে তাদের। সেই দুই বছর তাদের মধ্যে ঝগড়া কিংবা খুনসুঁটিও তেমন হতো না। ২০০৬ সালের ৩ আগস্ট এক সুতোয় বাঁধা পড়ে তাহসান-মিথিলার জীবন। বিয়ের সময় তাহসানের বয়স ছিল মাত্র ২৬ বছর আর মিথিলার ২৩ বছর। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই সংসার গুছিয়ে নেন তারা। বেশ বিরতি নিয়েই তারা এক কন্যা সন্তানের জনক-জননীও হন। অভিমান, ঝগড়াঝাটি মান-অভিমান ঝগড়া আমাদের জীবনেরই একটি অংশ। সব মিলিয়ে মিলে মিশে থাকাটাই হচ্ছে সুখী জীবন। আমাদের বাবা-মার সঙ্গেও অনেক মান-অভিমান হয়। কিন্তু সে সব আমরা কখনই মনে রাখি না। ঠিক তেমনই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যেও ঝগড়া হয়। আবার আমরা সেসব ভুলেও যাই। এই তো জীবন। এমনই তো হওয়া উচিত। মান-অভিমান, ঝগড়াঝাটি নিয়ে এভাবেই বলতেন তাহসান। মিথিলা বলতেন, আমরা কেউ কারো ওপর বেশিক্ষণ মন খারাপ করে থাকতে পারি না। ওর বেশিক্ষণ অনুপস্থিতি আমার ভাল লাগে না। অফিসের কাজে ব্যস্ত থাকলেও সব সময় ফোনে আমাদের কথা হয়। অতপর বিচ্ছেদ বিয়ের পর টেলিভিশন নাটকের জনপ্রিয় জুটি হয়ে ওঠেন তাহসান-মিথিলা। উৎসব মানেই এ জুটির জনপ্রিয় সব নাটক। হয়ে ওঠেছিলেন রিল ও রিয়েল লাইফের সফল জুটির উদাহরণ। এর মাঝেই লুকিয়ে ছিল দুরত্বের বীজ। কয়েক মাস ধরে তেমন ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছিল। অবশেষে দুজনে একসঙ্গে জানালেন ডিভোর্সে যাচ্ছেন। কারণ হিসেবে ওঠে এসেছে মীমাংসার অযোগ্য দ্বন্দ্ব! তবে তা খোলাসা করেননি তারা। এমএ/ ০৯:৩৩/ ২০ জুলাই
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2uD8vIV
July 21, 2017 at 03:33AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন