ঢাকা, ২৪ জুলাই- বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় আসর বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল)। প্রায় আন্তর্জাতিক ঘরানার এই টুর্নামেন্টে ক্রিকেটাররা সর্বোচ্চ মানের ক্রিকেটের ছোঁয়া পান। ফলে জাতীয় দলে না খেলেও তার আমেজটা অনুভব করতে পারেন তরুণ এবং দেশের ভালো ক্রিকেটাররা। অভিজ্ঞতাটার মূল্যও কম নয়। অথচ সেই বিপিএলে এবার স্থানীয় ক্রিকেটারদের সুযোগ কমছে। ম্যাচে প্রতিটি দলের একাদশে এবারের আসরে ৫ জন করে বিদেশি খেলোয়াড় খেলানোর নিয়ম করা হয়েছে। বাড়তি একজন বিদেশি খেলায় স্থানীয় ক্রিকেটারদের গুরুত্বও কমছে। ক্রিকেট সংশ্লিষ্টদের অনেকেই মানছেন, এটা বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য ভালো কিছু নয় অথচ এই বিপিএল দিয়ে উঠে এসেছেন অনেক তরুণ। কেউ কেউ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন এই টুর্নামেন্ট থেকেই। এনামুল হক বিজয় কিংবা আবু হায়দার রনি- এ তরুণ তুর্কিদের উত্থান বিপিএল দিয়ে। সাব্বির রহমান, তাসকিন আহমেদের মতো তরুণরা বিপিএল দিয়েই নজরে এসেছিলেন। আজ তারা বাংলাদেশ জাতীয় দলের অপরিহার্য খেলোয়াড়। এমনকি আফিফ হোসেন ধ্রুবর মতো আনকোরা তরুণও ঝলক দেখিয়েছেন এ বিপিএলে। হঠাৎ করে কেন এ পরিবর্তন? চারজনের জায়গায় পাঁচজন বিদেশি খেলোয়াড় কি খুব জরুরি ছিল? বিপিএলের পঞ্চম আসরকে লক্ষ্য রেখে গত ২৫ মে শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলন কক্ষে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব ইসমাইল হায়দার মল্লিক জানিয়েছিলেন, নতুন দল বাড়ায় খেলোয়াড়ের সংকটের কারণেই বিদেশি খেলোয়াড়ের কোটা বাড়াচ্ছেন। পাশাপাশি বলেছিলেন, ফ্র্যাঞ্চাইজি দলগুলোর দাবিও এটা। তখন এটা প্রস্তাব আকারে থাকলেও সোমবার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয় বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল। অধিকাংশ সাবেক ক্রিকেটারই এটাকে দেশের ক্রিকেটারদের জন্য ভালো মনে করছেন না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেকেই বলেছেন নির্দিষ্ট কিছু দলকে সুবিধা দিতেই এমনটা করেছে বিপিএল। আবার কেউবা মনে করছেন গ্ল্যামারের কারণেই বিদেশিদের বাড়িয়েছে তারা। গত আসরের রংপুর রাইডার্সের কোচ সাবেক ওপেনিং ব্যাটসম্যান জাভেদ ওমর বেলিমের মতামত এমনটাই, আমার মনে হয় গ্ল্যামারকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে এমনটা করেছে তারা। এতে কিন্তু আমাদের সবদিক থেকেই লোকসান হলো। চারজন খেলোয়াড় খেললে প্রতিটা দল ভালো মানের বিদেশি আনার তাগিদ থাকতো। এখন দেখা যাবে একজন বেশি খেলানোর কারণে সাধারণ বিদেশিরাও খেলবে। দেখা যাবে তাদের চেয়ে আমাদের স্থানীয় খেলোয়াড়রা মোটেও খারাপ না। আমাদের খেলোয়াড়দের নিজেদের প্রমাণ করার সুযোগটা এতে একটু হলেও কমে গেলো। শুধু সাবেক ক্রিকেটার নয়, বিদেশি খেলোয়াড় বাড়ানোর এই সিদ্ধান্ত দেশের ক্রিকেটের জন্য অমঙ্গল মনে করেছেন অনেক ফ্র্যাঞ্চাইজিও। রংপুর রাইডার্স ও রাজশাহী কিংস সরাসরি বিরোধিতা করেছে এ সিদ্ধান্তে। প্রথমে চারজন চেয়ে আবেদন করলেও পরে নিজেদের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। রংপুরের প্রধান নির্বাহী ইশতিয়াক সাদেক এ বিষয়ে বলেছেন, এটা দেশীয় ক্রিকেটের জন্য বিশাল ক্ষতি। এর ফলে দেশের কম খেলোয়াড় সুযোগ পাচ্ছে, ওদের একটা উপার্জনের রাস্তা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। সবকিছু মিলে এটা বাংলাদেশের জন্য ভালো কিছু নয়। ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট লিগের সবচেয়ে বড় টুর্নামেন্ট ধরা হয় ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগকে (আইপিএল)। সেখানেও একাদশে চারজন করে বিদেশি খেলোয়াড় খেলে। চারজন করে খেলে পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল) ও ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগেও (সিপিএল)। দক্ষিণ আফ্রিকায় এবারই প্রথম শুরু হতে যাওয়া গ্লোবাল টি-টুয়েন্টিতেও চারজন। আবার অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডে ঘরোয়া ক্রিকেটারদের আরও বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয়। বিগ ব্যাশ ও ন্যাটওয়েস্ট টি-টুয়েন্টিতেও খেলেন মাত্র দুইজন বিদেশি। সব দেশের ঘরোয়া টি-টুয়েন্টিতে বিদেশির সংখ্যা সীমিত করার দিকে জোর। কেবল বাংলাদেশেই কি না ঘটছে উল্টোটা! আর/১০:১৪/২৪ জুলাই
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2tE08wM
July 25, 2017 at 05:09AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন