ঢাকা, ০৩ জুলাই- ২০১৭ চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে হতাশ করেছেন বাংলাদেশ দলের তরুণ খেলোয়াড়েরা। শুধু কি এই টুর্নামেন্টেই ভালো করতে পারেননি তরুণেরা? ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সাফল্যযাত্রার শুরু মূলত ২০১৫ সাল থেকে। এই সময় থেকে বাংলাদেশের ধারাবাহিক ভালো খেলা শুরু। ২০১৫ সালে বাংলাদেশ সাফল্য পেয়েছিল তরুণ-অভিজ্ঞের ডানায় চড়ে। সিনিয়র-জুনিয়ররা জ্বলে উঠেছিলেন একসঙ্গে। ২০১৯ বিশ্বকাপে এই তরুণেরাই নেতৃত্ব দেবেন বলে প্রত্যাশা। কিন্তু যে তরুণেরা বাংলাদেশের ক্রিকেটে এক পশলা স্বস্তির সুবাতাস নিয়ে এসেছিলেন, তাঁরাই এখন হয়ে উঠছেন দুশ্চিন্তার কারণ। গত দেড় বছরে তরুণ ও অভিজ্ঞের এই কাঁধ মিলিয়ে লড়াইটায় ছন্দপতন ছিল। ২০১৫ সালে যে টানা চারটি ওয়ানডে সিরিজ জিতেছে বাংলাদেশ, প্রতিটি দেশের মাঠে। কিন্তু গত দেড় বছরে বাংলাদেশ বেশির ভাগ খেলেছে বিদেশে। অচেনা কন্ডিশন কিংবা প্রতিপক্ষের মাঠে সিনিয়ররা নিজেদের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে মানিয়ে নিতে পারলেও সেটি পুরোপুরি পারেননি তরুণেরা। এর প্রভাব পড়েছে পারফরম্যান্সে। ব্যাটিংয়ে ২০১৫ বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের গড় ছিল ৩৩.৮৮, গত দেড় বছরে সেটি ৩০.৪৪। অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানদের পারফরম্যান্সে খুব একটা পার্থক্য না থাকলেও তরুণদের কিছুটা ছন্দপতন হয়েছে। ২০১৫ সালে তরুণদের ব্যাটিং গড় যেমন ছিল ২০.২৪, এখন সেটি ১৭। বাংলাদেশের ব্যাটিং ব্যাটিং গড়ে যতটা পার্থক্য দেখা গেছে, সম্মিলিত সেঞ্চুরি কিংবা ফিফটি সংখ্যায় অবশ্য খুব একটা পার্থক্য নেই। তবে ২০১৫ সালে একটি সেঞ্চুরি এসেছিল তরুণদের ব্যাটিং থেকে। পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে সেঞ্চুরি করেছিলেন সৌম্য সরকার। গত দেড় বছরে তিন অঙ্ক ছুঁতে পারেননি কোনো তরুণ ব্যাটসম্যান। অর্থাৎ লম্বা ইনিংস খেলতে ব্যর্থ তরুণেরা। তবে অভিজ্ঞদের পরিসংখ্যানে খুব একটা পরিবর্তন নেই। বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের তারতম্য ২০১৫ অভিজ্ঞ : মুশফিক, তামিম, মাহমুদউল্লাহ, সাকিব, নাসির, ইমরুল, মাশরাফি, রুবেল ও মুমিনুল। তরুণ : সৌম্য, সাব্বির, লিটন, এনামুল, সানি, মোস্তাফিজ, তাসকিন, আল আমিন, জুবায়ের। ২০১৬ জানু-২০১৭ জুন অভিজ্ঞ : তামিম, সাকিব, মাহমুদউল্লাহ, মুশফিক, ইমরুল, মাশরাফি, নাসির, মোশাররফ, রুবেল ও শফিউল। তরুণ : সাব্বির, মোসাদ্দেক, সৌম্য, মিরাজ, নুরুল, তাসকিন, তাইজুল, তানভীর, মোস্তাফিজ, শুভাশিস। ২০১৫ সালের তুলনায় গত দেড় বছরে ব্যাটিংয়ে তরুণদের ছন্দপতন হলেও বোলিংয়ে অভিজ্ঞতরুণ দুইয়ের বেশ অবনতি হয়েছে। বেড়েছে বোলিং গড়, ইকোনমি। ২০১৫ সালে যেখানে চারবার ৫ উইকেট পেয়েছেন বোলাররা, গত দেড় বছরে ৫ উইকেটের দেখাই পাননি মাশরাফিমোস্তাফিজরা। বাংলাদেশের বোলিং ২০১৫ সালে ওয়ানডেতে অভিজ্ঞদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ভালো করেছিলেন তরুণ বোলাররা। বাংলাদেশের বোলাররা যে চারবার ৫ উইকেট পেয়েছিলেন, এর তিনটি তরুণদের অধিকারে। ওই বছর জুনে ভারতের বিপক্ষে টানা দুই ম্যাচে ৫ উইকেট পেয়েছিলেন মোস্তাফিজ। গত দেড় বছরে অভিজ্ঞরা খুব একটা ভালো করতে পারেননি। কিন্তু বেশি খারাপ করেছেন তরুণেরা। ২০১৫ সালে তরুণদের উইকেটপ্রতি খরচ হয়েছে ৩৪.৮৭ রান, এখন সেটি ৪১.৭৩। তাঁদের ইকোনমি যেমন বেড়েছে, বেড়েছে গড়ও। বাংলাদেশের বোলিংয়ের তারতম্য ২০১৫ অভিজ্ঞ : সাকিব, মাশরাফি, রুবেল, নাসির ও মাহমুদউল্লাহ। তরুণ : মোস্তাফিজ, তাসকিন, আরাফাত, আল আমিন ও সাব্বির। ২০১৬ জানু-২০১৭ জুন অভিজ্ঞ : মাশরাফি, সাকিব, রুবেল, শফিউল, নাসির ও মোশাররফ হোসেন। তরুণ : মোস্তাফিজ, তাসকিন, মোসাদ্দেক, মিরাজ, সানজামুল, সাব্বির, শুভাশিস ও তাইজুল। ২০১৫ সালে ঘরের মাঠে দুর্দান্ত খেলায় ম্যাচসেরা ও সিরিজসেরার পুরস্কার হাতে তোলায় তরুণদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হয়েছে অভিজ্ঞদের! কিন্তু গত দেড় বছরে অভিজ্ঞদের চেয়ে যোজন যোজন পার্থক্য তরুণদের। এই সময়ে মোস্তাফিজের একবার ম্যাচসেরার পুরস্কার (গত মে মাসে ডাবলিনে ত্রিদেশীয় সিরিজে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে) পাওয়া বাদে তরুণদের সাফল্যের গল্প খুব একটা নেই। ম্যাচ ও সিরিজসেরার পুরস্কার আর/১২:১৪/০৩ জুলাই
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2t6wrm7
July 03, 2017 at 07:07AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন