ঢাকা, ৩১ জুলাই- ঢাকাই ছবির শিল্পীরা এখন কলকাতার ছবিতে ঝুঁকছেন। এই তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন শম্পা, রোশন ও আমান। চলচ্চিত্রকারদের কথায়, দেশীয় চলচ্চিত্রের অবস্থা নাজুক হয়ে পড়ায় বাধ্য হয়েই ঢাকাই ছবির শিল্পীরা টালিগঞ্জে পাড়ি জমাচ্ছেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই ঢাকাই ছবির তারকারা কলকাতার ছবিতে অভিনয় শুরু করেন। তখনকার প্রেক্ষাপট ছিল ভিন্ন। তখন প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে ভ্রাতৃত্ব আর সাংস্কৃতির বন্ধনকে অটুট রাখতেই এক দেশের শিল্পী অন্য দেশে কাজ করতেন। ১৯৭৩ সালে কলকাতায় সত্যজিৎ রায় নির্মিত অশনি সংকেত ছবিতে অভিনয় করেন ববিতা। এরপর ১৯৭৬ সালে টালিগঞ্জে নির্মিত রাজেন তরফদার পরিচালিত পালংক ছবিতে অভিনয় করেন আনোয়ার হোসেন। শাবানা, অঞ্জু ঘোষ, নূতন, ফেরদৌসসহ অনেকে অভিনয় করেছেন টালিগঞ্জের ছবিতে। এখনো ঢাকাই ছবির তারকাদের কলকাতা মিশন চলছে এবং এর পরিমাণ বেড়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে যারা কলকাতার ছবিতে অভিনয় করেছেন বা করতে যাচ্ছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন শাকিব খান, জয়া আহসান, দিলরুবা ইয়াসমিন রুহি, নিপুণ, মিশা সওদাগর, জলি, নুসরাত ফারিয়া, সোহানা সাবা, আহমেদ রুবেল, মাহিয়া মাহি, ববি, পরীমণি, আমান, রোশন, শম্পাসহ অনেকে। বর্তমানে টালিগঞ্জের ছবিতে ঢাকাই ছবির তারকাদের অভিনয় নিয়ে চলচ্চিত্রকারা বলছেন অন্য কথা। প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার ছটকু আহমেদের কথায়, আমাদের দেশে চলচ্চিত্র নির্মাণের সংখ্যা ক্রমেই কমছে। সরকারের আন্তরিকতা সত্ত্বেও নানা অজানা কারণে আমাদের চলচ্চিত্র শিল্পে চলছে দৈন্যদশা। আসলে যার যেটি পেশা তাকে তা করতেই হবে। বর্তমানে আমাদের শিল্পের অবস্থা মন্দ হওয়ায় এ দেশের শিল্পীরা বাইরের দেশের ছবিতে কাজের সন্ধান করছেন। এটিকে মন্দ বলা যাবে না। চলচ্চিত্রকার আজিজুর রহমান বলেন, দেশীয় চলচ্চিত্রের দৈন্যদশায় স্থানীয় নির্মাতা, শিল্পী,কলাকুশলীদের মধ্যে বেকারত্বের হার বাড়ছে। অনেকে মানবেতর জীবনযাপন করছে। তাই বাধ্য হয়ে অনেকে পার্শ্ববর্তী দেশের ছবিতে অভিনয় করছে। অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখাই এখন মুখ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। চলচ্চিত্রকার কাজী হায়াৎ বলেন, বর্তমানে অন্য দেশে আমাদের দেশের শিল্পীদের অভিনয় করা নিয়ে কারণ খোঁজার প্রয়োজন নেই। আমরা আমাদের শিল্পীদের কাজ দিতে পারছি না। তাই তারা জীবিকার তাগিদে যেখানে কাজ পাবে সেখানে যাবে এটিই স্বাভাবিক। তাছাড়া শিল্পীরা হচ্ছে স্বাধীন, তাদের নির্দিষ্ট কোনো সীমানায় সীমিত করা যাবে না। এক দেশের শিল্পী অন্য দেশে কাজ করবে এবং তাতে দেশ, শিল্পী এবং শিল্পের পরিচিতি বাড়বে। এটিকে অবশ্যই অ্যাপ্রিসিয়েট করা দরকার। চলচ্চিত্রকার সুচন্দা বলেন, আমাদের দেশের শিল্পীদের অন্য দেশ বিশেষ করে ভারতে কাজ করা নতুন কিছু নয়। বর্তমানে এখানে কাজ কম হচ্ছে বলে এ দেশের শিল্পীরা বেশি পরিমাণে কলকাতার ছবিতে অভিনয় করছেন। এটিকে মন্দ বলা যায় না। ওই দেশের শিল্পীও আমাদের ছবিতে কাজ করছেন। দুই দেশের ভ্রাতৃত্বের বন্ধনের জন্য এটির দরকার আছে। আমি চাই আমাদের দেশের চলচ্চিত্রের সুদিন ফিরে আসুক। নিজ দেশে বেশি পরিমাণে কাজ করুক স্থানীয় শিল্পীরা। বিডি প্রতিদিন। এমএ/ ১২:০৪/ ৩১ জুলাই
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2vaoz4P
July 31, 2017 at 06:05PM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন