কলকাতা, ২৯ জুলাই- ভারতের পশ্চিমবঙ্গে সাম্প্রতিক বন্যায় ২৮ জন নিহত হয়েছে। এছাড়া ২০ লাখেরও বেশি মানুষ বানভাসী হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে অধিকাংশই বাজ পড়ে, সাপের কামড়ে, পানিতে ডুবে, দেয়াল চাপা পড়ে ও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছেন।পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া, হুগলি, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, পুরুলিয়া, বীরভূম ও বাঁকুড়ায় হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে রয়েছেন। ঝাড়খণ্ডের তেনুঘাট, পাঞ্চেত, মাইথন জলাধার থেকে পানি ছাড়ার ফলে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলোর বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। আজ (শুক্রবার) পশ্চিম মেদিনীপুরে আটকে পড়া বন্যা দুর্গতদের উদ্ধারে বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারকে কাজে লাগাতে হয়। এখানে একতলা বাড়ির সমান বন্যার পানি উঠেছে। আজ ঘাটালের প্রতাপপুর গ্রামের কিছু বাসিন্দাকে হেলিকপ্টারে করে উদ্ধার করা হয়। ঘাটালে শিলাবতীর বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় ভেসে গেছে হরিসিংহপুর ও প্রতাপপুর গ্রাম। অন্যরা নিরাপদ জায়গায় চলে যেতে পারলেও তীব্র স্রোতের মধ্যে গ্রামে আটকে পড়েন বেশ কিছু বাসিন্দা। পুলিশ সূত্রে প্রকাশ, জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সদস্যরা হরিসিংহপুর ও প্রতাপপুরে পৌঁছাতে পারেননি। সেজন্য দুর্গতদের উদ্ধারে কোলকাতা পুলিশের সাহায্য চায় পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশ। রাজ্য সচিবালয় নবান্ন থেকে দুর্গতদের উদ্ধারের জন্য বিমানবাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। এরপরই ব্যারাকপুর থেকে ঘাটালে উদ্ধার কাজে শামিল হয় বায়ুসেনার এমআই ১৭-ভি ৫ হেলিকপ্টার। নবান্নে সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্রসচিব বলেন, বন্যা পরিস্থিতিতে এখন পর্যন্ত ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। হাওড়ায় ২টি, হুগলিতে ৬টি, বাঁকুড়ায় ৪টি এবং বর্ধমানে ১টি ব্লক প্লাবিত হয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় দক্ষিণবঙ্গের জেলাজুড়ে মোট ৪৪ হাজার ৫৪২ টি ত্রাণশিবির খোলা হয়েছে। গতকালই বন্যা পরিস্থিতির জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে দায়ী করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল এমপিরা সংসদেও এ নিয়ে সোচ্চার হন। আজও কার্যত সেই কথারই পুনরাবৃত্তি করেছেন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। বীরভূমের লাভপুরে আজ বিকেলে বন্যা পরিস্থিতি দেখতে গিয়ে তিনি বলেন, ম্যানমেড বন্যা। দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন (ডিভিসি) ড্রেজিং করে না। সময়মতো পানি ছাড়ে না। সেজন্যই বন্যা হয়। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে এ সংক্রান্ত সমস্ত রিপোর্ট আছে বলেও ফিরহাদ হাকিম বলেন। রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতি সম্পর্কে গতকাল মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার যদি দয়া করে ডিভিসির ড্যামগুলোর সংস্কার করে, পলি সরায় তাহলে আর এ পরিস্থিতি তৈরি হয় না। মমতা বলেন, এ সমস্যা আজকের নয়। দীর্ঘদিন এ পরিস্থিতি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে বলা হচ্ছে। চিঠি দেয়া হয়েছে, নিজে দেখা করেও দাবি জানিয়েছি। সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংকেও সেসময় জানিয়েছি। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেও বলেছি। কিন্তু কিছুই সুরাহা হয়নি। তিনি বর্তমান বন্যা পরিস্থিতিকে ম্যান মেড বলেও অভিহিত করেন। আর/১২:১৪/২৯ জুলাই
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2uJSRc4
July 29, 2017 at 06:35AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন