কলম্বো, ১১ জুলাই- কদিন আগে বাংলাদেশের সঙ্গে টেস্ট হারের পর শ্রীলঙ্কার একটি প্রভাবশালী দৈনিক সেই দিনটিকে লঙ্কান ক্রিকেটের মৃত্যুদিন হিসেবে ঘোষণা করেছিল। সেবার টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-টুয়েন্টি তিন ফরম্যাটেই সিরিজ ড্র করে বাংলাদেশ। এবার অপেক্ষাকৃত আরো দুর্বল দল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ হেরেই বসল শ্রীলঙ্কা। তাও নিজেদের মাটিতে। সোমবার হাম্বানটোটায় শ্রীলঙ্কাকে ৩ উইকেটে হারিয়ে পাঁচ ম্যাচের সিরিজ ৩-২ জিতে নিল গ্রায়েম ক্রেমারের জিম্বাবুয়ে। চমকে দিল সবাইকে। শ্রীলঙ্কার জন্য দিনটি কি তবে আরো ঘোর অন্ধকারের হয়ে রইল না? সেটি হোক আর না হোক, জিম্বাবুয়ের জন্য দিনটি থাকলো এবং থাকবে আলোয় ভাস্বর হয়ে। শ্রীলঙ্কার মাটিতে প্রথম তো বটেই ২০০১-০২ মৌসুমের পর টেস্ট খেলুড়ে কোন দলের বিপক্ষে প্রথম সিরিজ জিতলো জিম্বাবুয়ে। এদিন সকালে টস জিতে শ্রীলঙ্কাকে আগে ব্যাটিংয়ে পাঠিয়েছিল জিম্বাবুয়ে। দুর্দান্ত বোলিংয়ে স্বাগতিকদের ৮ উইকেটে মাত্র ২০৩ রানে বেঁধে ফেলে জিম্বাবুয়ে। জবাব দিতে নেমে ১১.৫ বল বাকী থাকতেই জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় সফরকারীরা। সিরিজের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার দেওয়া ৩০০র বেশি টার্গেট তাড়া করে জিতে প্রথম চমক দিয়েছিল আফ্রিকার দলটি। ক্রিকেট থেকে পিছিয়ে পড়া ওই দলের কাছে হারের পর লঙ্কান একটি সংবাদপত্র লিখেছিল, আঁধার যুগে শ্রীলঙ্কা। এবার কি লিখবে তারা? বোলারদের তৈরি করে দেওয়া মঞ্চে ২০৪ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দারুণ খেলতে শুরু করেন জিম্বাবুয়ের দুই ওপেনার হ্যামিলটন মাসাকাদজা ও সলোমন মাইর। উদ্বোধনী জুটিতে ৯২ রান যোগ করেন এই দুজন। মাইর ৪৩ রান করে ফিরলেও মাসাকদজা থামেন ৭৩ রান করে। তার ৮৬ বলে ১ ছয় ও ৯ চারে সাজানো ইনিংসটিই দলীয় সর্বোচ্চ। মাসাকাদজা যখন ফিরলেন জিম্বাবুয়ের স্কোর তখন ২ উইকেটে ১৩৭। জিম্বাবুয়ের জয় যেন সময়ের ব্যপার তখন। কিন্তু চিত্রপট পাল্টাতে থাকে তখনই। একে এক সাঁঝঘরে ফিরতে থাকেন ক্রেইগ আরভিন (২), ওয়ালার (২), মুসাকানদা (৩৭)। লঙ্কান স্পিনার আলিকা ধনাঞ্জয়ার বোলিং ঘূর্ণিতে এক পর্যায়ে শ্রীলঙ্কার দিকেও জয়ের পাল্লা হেলে পড়ে। কিন্ত ৬ নম্বরে নেমে সিকান্দার রাজা ছিলেন দৃঢ় প্রত্যয়ী। ম্যাচ জিতিয়ে তবে মাঠ ছেড়েছেন। হাসারাঙ্গাকে শেষ বলে ছক্কা মেরে নোঙর করেছেন জয়ের বন্দরে। ২৭ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন তিনি। লঙ্কান বোলারদের মধ্যে ধনাঞ্জয়া নিয়েছেন সর্বোচ্চ ৪ উইকেট। এরআগে বোলিংয়েও শ্রীলঙ্কাকে অল্পরানে বেঁধে রাখতে নেতৃত্ব দিয়েছেন সিকান্দার রাজা। নিয়েছেন ৩ উইকেট। রাজার সঙ্গে নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেছেন অধিনায়ক গ্রায়েম ক্রেমাররাও। সফরকারীদের সামনে এদিন শুরু থেকেই লঙ্কান ব্যাটসম্যানরা ছিল অসহায়। মাত্র ১৩ রানে ২ উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। টেন্দাই চাতারার বলে মাত্র ৩ রান করে ফিরেন আগের দুই ম্যাচে সেঞ্চুরি করা ওপেনার নিরোশান ডিকভেলা। অন্যদিকে ব্যাক্তিগত ১ রান করে সিকান্দার রাজার বলে ফিরে যান কুশল মেন্ডিস। চার নম্বরে নেমে উপুল থারাঙ্গাও খুব বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে পারেননি উইকেটে। ফিরে যান ব্যাক্তিগত ৬ রান করে। লঙ্কান ইনংসটা ২০৩ পর্যন্ত নিতে অবদান দানুশকা গুনাথিলাকা ও অ্যাসেলা গুনারত্নের। ৮৬ বলে ৫টি চারের সাহায্যে ৫২ রান করেন গুনাথিলাকা। অন্যদিকে ৫৯ রানে অপরাজিত ছিলেন গুনারত্নে। শেষ উইকেটে দুশমন্ত চামিরার সঙ্গে তার অপরাজিত ৫০ রানের জুটিই লঙ্কানদের স্কোরটাকে ভদ্রস্ত করেছিল। ম্যাচ সেরা হয়েছেন সিকান্দার রাজা। সিরিজ সেরা হ্যামিলটন মাসাকাদজা। আর/১২:১৪/১১ জুলাই
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2uaXzCp
July 11, 2017 at 06:46AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন