ঢাকা, ২০ জুলাই- দেশের অন্যতম জনপ্রিয় জুটি ও তারকা দম্পতি তাহসান-মিথিলার বিচ্ছেদ নিয়ে শোবিজ অঙ্গনে ঝড় বইছে। সুখী তারকা দম্পতি হিসেবে পরিচিত এই জুটির ডিভোর্সের ঘটনায় হতবাক হয়ে গেছেন অনেক ভক্ত। সেই ২০০৩ সালে প্রেম শুরু। ২০০৬ সালে এসে বিয়ে। এরপর দীর্ঘ সাত বছর পর ২০১৩ সালে ঘর আলো করে আসে কন্যা সন্তান (আইরা তেহরীম খান)। উপচে পড়া সুখই ছিল তো বলা যায়। তবে কেন এই বিচ্ছেদ? বিচ্ছেদের কথা আসতেই তাহসান-মিথিলার প্রেমের কথাই বার বার মনে পড়ছে অনেকের। শুরুটা কীভাবে হয়েছিল তাদের? প্রেমের শুরু বিক্রমপুরের ছেলে তাহসান আর ঢাকার মেয়ে মিথিলার প্রেম হয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়েই। ২০০৩ সালের শুরুর দিকে মিথিলার বিদেশফেরৎ এক বন্ধু তার কাছে বায়না ধরেছিলেন তাহসানের বাসায় যাবেন। তার ছোট ভাইয়ের জন্য তাহসানের অটোগ্রাফ নেবেন। তাহসান তখন বেশ জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী। তার বেশ কিছু গানও শুনেছেন মিথিলা। এতো বড় ভক্ত ছিলেন না যে বাড়ি গিয়ে অটোগ্রাফ নেবেন। যদিও বন্ধুর বায়নায় তাহসানের বাসায় উপস্থিত হতেই হলো মিথিলাকে। মিথিলা তখন আর্টসেলের ফ্যান আর তাহসান ব্ল্যাক-এ। সে সময় এ দুই ব্যান্ডের সমর্থকদের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। তাহসানকে কাছে পেয়ে তাই আচ্ছামতো সমালোচনা করলেন মিথিলা। এ সময় তাহসান শুধু তাকিয়ে থেকে হেসে গেলেন। মিথিলার সঙ্গে মাত্র বিশ মিনিট কথা হলো তাহসানের। কিন্তু এই বিশ মিনিটই সম্ভবত তাহসানের জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান সময়। প্রথম দেখায় প্রেম যাকে বলে। তাই তাহসান সিদ্ধান্ত নেন এই প্রেমের কথা মিথিলাকে জানাতে। মিথিলাকে প্রেমপত্র পরিচয়ের পরদিনই চিঠি নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের গেটে হাজির তাহসান। খোঁজ নিয়ে জানলেন ঢাকা ইউনিভার্সিটির ছাত্রী মিথিলা। আর তখন কলাভবনে ক্লাস হচ্ছে। মোবাইল ফোন তখন অনেকটাই সহজলভ্য। কিন্তু তাহসান প্রেম নিবেদনটা করলেন চিঠির মাধ্যমে। অপেক্ষা করতে করতে মিথিলার সামনে পড়ে গেলেন। মিথিলাই কথা বললেন প্রথম, কী অবস্থা আপনি এখানে? তাহসান অনুরোধ করলেন, চলো হাঁটতে হাঁটতে কথা বলি। অনেক কথা হলো। একপর্যায়ে সাহস করে মিথিলার হাতে গুঁজে দিলেন খাম। যার মাঝে ছিল একটা গোটা গোটা অক্ষরের চিঠি। কাগজের এপিঠ-ওপিঠ পুরোটাই ইংরেজিতে। যার প্রথম বাক্যটা Some call it love at first sight, some call it infatution. I just ignore it. প্রথম প্রেমে চিঠি। বারবারই পড়লেন মিথিলা। ভালো লাগা তো হয়েই গেল। সঙ্গে ভালোবাসাটাও। চিঠির উত্তর দিয়েছিলেন ফোনে। যার প্রথম বাক্যটি ছিল এমন এই এটা কী লিখেছ? চিঠি লেখা প্রসঙ্গে তাহসান বললেন, যেহেতু আমার কবিতার প্রতি প্রেম, ভাবলাম ফোন করার আগে একটা চিঠিই লিখি। মিথিলার জন্য গান এরই মধ্যে মিথিলার জন্য গান লিখেছেন তাহসান। শিরোনাম বৃত্তালাপন। যার অন্তরাটা এ রকম ভালোবাসি না আমি তোমাকে, বলেছিলাম...; ভালোবাসি না আমি তোমাকে, কখনো না,ভালোবাসি না আমি তোমাকে, স্বপ্ন দেখে যাও, ভালোবাসি না আমি তোমাকে, একদমই না, তুমি আমার কে? তাহসান বলেন, আমাদের সম্পর্কটা খুব অল্প সময়ের মধ্যেই পরিণত হয়েছে। তার কারণ হতে পারে আমরা একই ইউনিভার্সিটি পড়তাম, প্রায়ই আমাদের দেখা হতো, কথা হতো। আর না চাইতেও কীভাবে যেন সবকিছু মিলে যেত। ব্যাপারগুলো অদ্ভুত লাগত তখন। খুনসুটি, কথাকাটাকাটি প্রেম করেই ২০০৬ সাল পর্যন্ত কেটে গেল দুজনের। দুই বছর তাদের মধ্যে ঝগড়া কিংবা খুনসুটি কি হতো না! তাহসান বলেন, প্রায় রাতেই ওর সঙ্গে কথা বলতাম। তবে সত্যি বলতে, ফোনে কথা বলতে আমার ভালো লাগে না। মিথিলা বলে নয়, কারো সঙ্গেই ফোনে বেশিক্ষণ কথা বলতে ভালো লাগে না। রাত জেগে কথা বলার সময় আমি যখন ফোন রাখতে চাইতাম, ও বলত এত তাড়াতাড়ি কেন? এসব নিয়ে সামান্য কথাকাটাকাটি যে হতো না, তা নয়। প্রেমের পরিণতি, বিয়ে ২০০৬ সালের ৩ আগস্ট এক সুতায় বাঁধা পড়লো তাহসান-মিথিলার জীবন। তার আগের ঘটনা শোনালেন মিথিলাআমরা এখানে- সেখানে ঘুরতাম। অনেকেই দেখতেন আর বাসায় প্রায়ই নালিশ আসত। প্রথমে স্বীকার করতাম না। কিন্তু একদিন আম্মুর এক বান্ধবী দেখে ফেললেন। তারপর আর না বলতে পারলাম না। আম্মু তো এসে বলে, তুমি কোন ছেলের সঙ্গে ঘোরো, ব্যান্ডে গান করে নাকি! যা হোক, দুই পরিবারই আমাদের তাড়া দিয়ে বিয়ে দিয়ে দিল। তখনই বিয়ে করার ইচ্ছে আমাদের ছিল না। তাহসান বলেন, বিয়ের সময় আমার বয়স মাত্র ২৬ বছর আর ওর ২৩। একবার মনে হচ্ছিল তাড়াহুড়া করেই কি বিয়ে করে ফেললাম! সব মেইনটেইন করতে পারব তো। তখন অনেকেই বুঝিয়েছিল, বিয়ে করলেই সব শেষ। বিয়ের পর আর এত জনপ্রিয়তা থাকবে না। মেয়ে ভক্তরা সব দূরে সরে যাবে। বিয়ের পরে দেখলাম সে রকম কিছুই হয়নি। আর/১৭:১৪/২০ জুলাই
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2gN4oEh
July 21, 2017 at 12:29AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন