অনুসন্ধানী প্রতিবেদন ::সিলেটের আদালতে লম্পট লন্ডনি কর্তৃক ধর্ষণ ঘটনায় লোমহর্ষক জবানবন্দি দিয়েছে ১২ বছরের ধর্ষিতা। মাত্র ১৭ দিনে কতবার তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে, তাও জানায় সে। তার মা-বাবার উপর ধর্ষক সারোয়ারের নির্যাতনের কথাও সে আদালতকে অকপটে বলে। এদিকে আদালতের নির্দেশে রিমান্ডে পাওয়া একমাত্র আসামি লম্পট সারোয়ার আহমদ ধর্ষণ ঘটনায় পুলিশের কাছে তেমন কিছু স্বীকার করেননি। তবে এ ঘটনার নেপথ্যে কী আছে, কারা আছে-তা নিয়ে নানা তথ্য দিয়েছে পুলিশকে।
বিয়ানীবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) চন্দন কুমার চক্রবর্তী জানান, রিমান্ডে সারোয়ারের দেয়া তথ্য যাচাই করছে পুলিশ। তবে বলেন, তদন্তের স্বার্থে এর বেশি কিছু বলা ঠিক নয়।
বিয়ানীবাজার থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত, বর্তমানে অন্যত্র বদলী) আবুল বাশার মো. বদরুজ্জামান জানান, ১৭ দিনে বহুবার শিশুটিকে ধর্ষণ করা হয়েছে। প্রতিদিন ২-৩বার ধর্ষণ করতো সারোয়ার আহমদ। হাত-পা টিপে দেয়ার কথা বলে তাকে বিছানায় নিয়ে আসতেন তিনি। এরপর কখনো জোর করে, কখনো লন্ডন নেয়ার নাম করে আবার কখনো যৌনশক্তিবর্ধক ঔষধ সেবন করিয়ে শিশুটিকে পাশবিক নির্যাতন করা হতো।
মামলার তদন্ত সূত্র জানায়, শিশুটি তার মায়ের কাছে ধর্ষণের কথা জানালে বিষয়টি সারোয়ারের মা ও স্ত্রীকে জানানো হয়। এ নিয়ে পারিবারিক কলহ শুরু হয়। সারোয়ার স্ত্রীকে শ্বশুরবাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। এরপর সে শিশুটিকে রেখে দেয় তাঁর নিজ ঘরে। শিশুটিকে নিয়ে তাঁর বাবা-মা বাড়ি চলে যেতে চাইলে তাদের ওপর নির্যাতন চালায় সারোয়ার।
সবশেষ নির্যাতনের মাত্রা এতটাই প্রকট হয় যে, মেয়েটিকে রেখেই পালিয়ে আসেন তাঁর বাবা-মা। এর আগে একই বিষয় নিয়ে নিজের স্ত্রীকেও বেদম মারধর করে লম্পট সারোয়ার। তাঁর স্ত্রীর শরীরেও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
শিশু ধর্ষণের ঘটনায় তাঁর পিতা বাদি হয়ে সারোয়ার আহমদকে একমাত্র আসামি করে মামলা দায়ের করেন। র্যাব কর্তৃক গ্রেফতারকৃত ওই আসামিকে আদালতে প্রেরণ করা হয়। ধর্ষিতার মেডিকেল পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। শিশুটি বর্তমানে তার মা-বাবার জিম্মায় রয়েছে।
জানা গেছে, ধর্ষিত এক শিশুকে বিচার পাইয়ে দেয়ার আশ্বাসে আটকে রেখে তার ওপর আবারও যৌন নির্যাতন চালায় লম্পট লন্ডন প্রবাসী সারোয়ার আহমদ।
সারোয়ার বিয়ানীবাজার উপজেলার কুড়ারবাজার ইউনিয়নের দেউলগ্রামের লতই মিয়ার ছেলে। কানাইঘাট উপজেলার এরালিগুল গ্রামের এক দরিদ্র পিতার ১২ বছর বয়সী ধর্ষিতা মেয়েটি আগেও গণধর্ষণের শিকার হয়। ধর্ষিতার বড় ভাই একটি হত্যা মামলায় গ্রেফতার হওয়ার পর গ্রামের প্রভাবশালীরা তাদের গ্রামছাড়া করেন।
এ সময় নির্যাতনের শিকার মেয়েকে বড় ভাইয়ের কাছে রেখে স্ত্রী ও অপর আরেক সন্তানকে নিয়ে গ্রাম ছেড়ে চলে যান হতভাগা ওই পিতা। স্ত্রী ও সাথে থাকা শিশু সন্তানটিকে নিয়ে বিয়ানীবাজার উপজেলার দেউলগ্রামের লন্ডন প্রবাসী সারোয়ার আহমেদের বাড়িতে আশ্রয় নেন।
আক্ষেপ করে ধর্ষিতার বাবা জানান, যার কাছে আশ্রয় নিলাম, সেই সারোয়ার কয়েক দিন পর আমার এই মেয়ের ওপরই পাশবিক নির্যাতন শুরু করে।।
from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2teXmuw
July 02, 2017 at 09:55PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন