ঢাকা, ১৭ জুলাই- বাংলা চলচ্চিত্রের চাইনিজ ভিলেন। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে ইন্ডাস্ট্রিতে তিনি চাইনিজ হিসেবেই পরিচিত। তা আসল নামের সাথেও যুক্ত হয়ে গেছে চাইনিজ নামটি। ওস্তাদ জাহাঙ্গীর আলম এই নাম তাঁকে দেন। মিডিয়ার লোকজনও তাকে চাইনিজ নামেই চেনে, এ নামেই তিনি বেশ স্বাচ্ছন্দবোধ করেন। চাইনিজের আসল নাম যুগান্তর চাকমা। ঢাকাই চলচ্চিত্রে তিনি খল চরিত্রে অভিনয় করেছেন প্রায় ৪০০ ছবিতে। অধিকাংশ ছবিতেই তিনি হয় স্মাগলার কিংবা মূল খল অভিনেতার সহযোগী হিসেবে থাকেন। অবশ্য স্মাগলার হিসবেই তিনি সিনেপ্রেমীদের নিকট বেশি পরিচিত। ১৯৮৪ সালে নির্মাতা নূর হোসেন বলাইয়ের ইন্সপেক্টর ছবির মাধ্যমে রুপালি পর্দায় অভিষিক্ত হন। ফিল্মে আসার বিষয়টি বেশ নাটকীয়। রাঙামাটি থেকে কিশোর যুগান্তর বাবার ইচ্ছাতে ঢাকায় আসেন ইন্টার পড়তে। এর আগে এসএসসি পাশ করেন রাঙ্গুনিয়া পাইলট উচ্চবিদ্যালয় থেকে। সেটা ১৯৮৩ সালের ঘটনা। ঢাকায় এসে ইন্টারে ভর্তি হন মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজে। ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে কলেজের একটি নাটকে খান সেনার ভূমিকায় অভিনয় করেন যুগান্তর চাকমা। সে সময় চোখে পড়েন সহকারী পরিচালক বাচ্চু আহমেদের। তার হাত ধরেই আসেন এফডিসিতে। যুগান্তর চাকমা বলেন, প্রথম ছবিতে আমাকে অভিনয় করতে হয় একজন সিঙ্গাপুরের নাগরিকের ভূমিকায়। আমাকে ব্রিফকেস হাত বদল করতে হবে। ব্রিফকেস হাতবদল করে নেওয়া হয় এটিএম শামসুজ্জামানের কাছে। প্রথম ছবিতে অভিনয় করে এতো আনন্দ পেয়েছি যে ফিল্মকেই আমি ধানজ্ঞান করে ফেললাম। এরপর অভিনয় করেছি প্রায় ৪০০ ছবিতে। ১৯৯০ সালে আমি মার্শাল আর্টে ব্ল্যাকবেল্ট প্রাপ্ত হই। আমার ওস্তাদ ছিলেন ওস্তাদ জাহাঙ্গীর আলম। পরে তার সহকারী ছিলাম। যুগান্তর চাকমা অভিনয় করেছেন শাকিব খানের সাথেও। মায়ের হাতের বালা ছবিতে শাকিবের সাথে কাজ করেন তিনি। তার অভিনয় করা উল্লেখযোগ ছবি অনেক হলেও। ইনস্পেক্টর, লড়াকু, সন্ত্রাস, মায়ের হাতের বালাকেই উল্লেখযোগ্য মনে করেন তিনি। অভিনয়ের পাশাপাশি যুগান্তর ফাইট ডিরেক্টর হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন। ফাইট ডিরেক্টর হিসবে কাজ করা উল্লেখযোগ্য ছবি হলো- মা তোকে সালাম, খুনি শিকদার, দেনমোহর, লেডি ইনস্পেক্টর, বিশাল হাঙ্গামা, ডাকু রানি ইত্যাদি। শাকিব খানের সাথে বেশ কয়েকটি ছবিতে কাজ করেছেন। শাকিবের সাথে সর্বশেষ কাজ করা ছবি হচ্ছে খুনি শিকদার। শাকিবকে মেধাবী অভিনেতা হিসেবে উল্লেখ করে যুগান্তর বলেন, শাকিব খান আসলে অনেক মেধাবী অভিনেতা। প্রথম থেকেই পরিশ্রম করে আসছে। খুনি শিকদার ছবিতে আমি তার সাথে ফাইট ডিরেক্টর হিসেবে কাজ করেছি। আমি নিজেই অবাক হয়েছি তার পারফরম্যান্স দেখে। আয়ত্ত করা তার কাছে খুব সহজ কাজ বলেই মনে হয়েছে। যুগান্তর বর্তমানে একজন চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবে কাজ করছেন। চারটি ছবি নির্মাণ করছেন। এরমধ্যে দুটি ছবির নির্মাণ সম্পন্ন হয়েছে। চায়না মামা, নবীন বাই দ্য টাইগার, সুপার হিরো, ওস্তাদজি। চায়না মামা, নবীন বাই দ্য টাইগার ছবির কাজ শেষ হয়েছে। চায়না মামা ছবির মূল ভূমিকায় রয়েছেন যুগান্তর চাকমা নিজেই। তার নায়িকা হিসেবে অভিনয় করেছেন নতুন প্রজন্মের মিথিলা। এছাড়া খল চরিত্রে রয়েছেন শানু শিবা। নবীন বাই দ্য টাইগার ছবিতে অভিনয় করেছেন, নবাগত সালমান, নবাগতা মেহবুবা ও যুগান্তর নিজেই। যুগান্তর সামনে নিজেকে একজন যোগ্য পরিচালক হিসেবে পরিচিত করতে চান। তিনি বলেন, ভালো ভালো ছবি নির্মাণ করার পরিকল্পনা রয়েছে আমার। ভিন্ন ডাইমেনশনের ছবি নির্মাণ করবো। চেষ্টা করছি। নায়ক হিসেবে শাকিব খানকেও নিজের ছবিতে চুক্তিব্দধ করাতে চান যুগান্তর। তিনি বলেন, আমার প্রযোজক যদি চান অবশ্যই আমি শাকিবকে নেবো। শাকিবকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে তারপরেও নেবেন? এই প্রশ্নের জবাবে যুগান্তর চাকমা বলেন, আসলে আমি সেই ১৯৮৪ সাল থেকেই দেখে আসছি চলচ্চিত্রে বিভক্তি। এখন সঙ্কটময় সময় চলছে। সব ঠিক হয়ে যাবে। আমরা আম্রা-নিজেদের মধ্যে বিভক্তি বেশি সময় থাকে না। যুগান্তর চাকমার গ্রামের বাড়ি রাঙামাটির দেবাশীষ নগরে। রাঙ্গুনিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করে ঢাকা চলে আসেন। বাবা রাঙ্গামাটি সদর হাসপাতালের ফার্মাসিস্ট হিসেবে কর্মরত ছিলেন। আর/১৭:১৪/১৭ জুলাই
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2tx2mJi
July 18, 2017 at 12:38AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন