আমেরিকা ::যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার ফ্রেসনো’তে ব্যাকটেরিয়াযুক্ত দুই কোটি মশা ছাড়বে একটি শীর্ষ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান। এই ঘটনায় অবশ্য ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই বলে আশ্বস্ত করেছে প্রতিষ্ঠানটি।
এই প্রকল্পে অংশ নিয়েছে কনসোলিডেইট মসকিউটো অ্যাবেইটমেন্ট ডিসট্রিক্ট। এই সংস্থার জেলা ব্যবস্থাপক স্টিভ মুলিগান বলেন, মশার সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে ব্যাকটেরিয়া আক্রান্ত পুরুষ মশা ও স্বাভাবিক পুরুষ মশার অনুপাত অন্তত ৭:১ হওয়া উচিৎ। ভেরাইলি তিনশ’ একরের দুটি এলাকায় প্রতি সপ্তাহে ১০ লাখ করে ২০ সপ্তাহ ধরে মশা ছাড়ার পরিকল্পনা করছে।
শুক্রবার শুরু হওয়া এই প্রচারণা মার্কিন প্রযুক্তি জায়ান্ট অ্যালফাবেট-এর ভেরাইলি লাইফ সায়েন্সেস বিভাগের একটি পরিকল্পনার অংশ। বিশেষায়িত এই পুরুষ মশাগুলোর শরীরে একটি ব্যাকটেরিয়া যুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। এই মশাগুলো মানুষের জন্য ক্ষতিকর নয়। এগুলো বন্য স্ত্রী মশার সঙ্গে প্রজননের পর বংশবিস্তারে সক্ষম নয় এমন ডিম সৃষ্টি করবে। এর মাধ্যমে মশার সংখ্যা ও এগুলোর মাধ্যমে রোগের সংক্রমণও কমবে বলে আশা করা হচ্ছে, বলা হয়েছে ব্লুমবার্গ-এর প্রতিবেদনে।
এক্ষেত্রে লক্ষ্য হিসেবে নেওয়া হয়েছে এডিস ইজিপ্টি মশাকে। এ মশা জিকা, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার ভাইরাস বহন করে।
ভেরাইলি লাইফ ২০১৫ সালে অ্যালফাবেট-এর একটি একক বিভাগে পরিণত হয়। এরপর দ্রুত উন্নত হয়ে বিভাগটি কয়েকটি স্বাস্থ্য প্রযুক্তি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। ওষুধ শিল্পের সঙ্গে চুক্তি করেছে ও সিঙ্গাপুরভিত্তিক বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান টেমাসেক হোল্ডিংস-এর কাছ থেকে ৮০ কোটি ডলার তহবিল সংগ্রহ করেছে। এর মধ্যে ডিবাগ নামের মশা প্রকল্প থেকে এখনই কোনো আয় হবে না। এই প্রকল্প হচ্ছে স্বাস্থ্য প্রযুক্তি খাতে নিজেদের কারিগরি সক্ষমতা প্রদর্শনে প্রতিষ্ঠানটির একটি সুযোগ, বলা হয় প্রতিবেদনটিতে।
ভেরাইলি’র প্রধান প্রকৌশল কর্মকর্তা লিনাস আপসন গুগলের ক্রোম ব্রাউজার বানাতে সহায়তা করেছিলেন। বর্তমানে তিনি ডিবাগ প্রকল্পের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
তিনি বলেন, “আমরা যদি দেখাতে পারি যে এই কৌশল কাজ করছে, আমার বিশ্বাস আমরা এটিকে একটি টেকসই ব্যবসায় পরিণত করতে পারব। কারণ এই মশার বোঝাটা বিশাল।”
ভেরাইলি মশাগুলোর জীনগত কোনো পরিবর্তন আনেনি। এগুলো ওলব্যাকিয়া নামের প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট একটি ব্যাকটেরিয়ায় আক্রান্ত। এই আক্রান্ত পুরুষ মশাগুলো যখন বন্য স্ত্রী মশার সঙ্গে মিলিত হবে, তারা বাচ্চা জন্মদানে অক্ষম ডিম সৃষ্টি করবে। এর ফলে সময়ের সঙ্গে মশার সংখ্যা কমে আসবে। এক্ষেত্রে বাড়তি সুবিধা হচ্ছে পুরুষ মশা মানুষকে কামড়ায় না। এর ফলে ফ্রেসনো’র অধিবাসীদের মশার কামড় খাওয়া এই গ্রীষ্মে অন্যান্য সময়ের তুলনায় কমে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের ফ্রেসনো এলাকায় প্রকল্পটি পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।
রোগ নিয়ন্ত্রণে এই ব্যাকটেরিয়া আক্রান্ত মশা ব্যবহার ভেরাইলি-ই প্রথম করছে না। বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো এক দশকেরও বেশি সময় ধরে পোকামাকড় নিয়ে এমন কাজ করছে। পরীক্ষামূলকভাবে ইন্দোনেশিয়া ও ব্রাজিলে বিভিন্ন প্রকল্পও চালানো হচ্ছে।
বংশবিস্তারের অক্ষম এমন মশা ছাড়ার ক্ষেত্রে ফ্রেসনো’র এই প্রকল্প এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বড় বলে দাবি ভেরাইলির।
from যুক্তরাজ্য ও ইউরোপ – দ্যা গ্লোবাল নিউজ ২৪ http://ift.tt/2umXif2
July 16, 2017 at 11:52AM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন