ঢাকা, ০৬ জুলাই- মামলার ধার্য তারিখের আগের দিন আমার কথা মনে পড়ে সানীর। এর আগে আমার কথা তার মনে পড়ে না। জাতীয় দলের ক্রিকেটার আরাফাত সানীর স্ত্রী নাসরিন সুলতানা এসব কথা বলেছেন। বৃহস্পতিবার আরাফাত সানীর বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে দায়ের করা মামলার জামিনের মেয়াদ শেষ দিন ছিল। এদিন আরাফাত সানী আদালতে আত্মসমর্পণ করে ফের জামিনের মেয়াদ বাড়ান। আদালতে আসেন আরাফাত সানীর স্ত্রী ও মামলার বাদী নাসরিন সুলতানাও। সেখানে এ প্রতিবেদককে উল্লিখিত কথাগুলো বলেন নাসরিন সুলতানা। নাসরিন সুলতানা বলেন, কোনো সময় আমার কথা মনে পড়ে না আরাফাত সানীর। যখন মামলার ধার্য তারিখ চলে আসে, ঠিক তার আগের দিন আমার কথা মনে পড়ে তার। এতদিন পর গতকাল (বুধবার) তার সাথে আমার দেখা হয়েছে। এক মাসের মধ্যে সে আমার সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করেনি। তিনি আরো বলেন, চার মাস আগে আরাফাত সানী জামিন নিয়ে কারামুক্ত হয়। সে আমার সাথে সমঝোতা করতে চেয়েছিল। এজন্য আমি তার জামিনের বিরোধিতা করিনি। এরপর যখন সে জামিনে মুক্ত হয়, তারপর থেকে আমার সাথে যোগাযোগ করে না। যখন মামলার তারিখ চলে আসে, তার ঠিক আগের দিন সে আমার সাথে যোগাযোগ করে। জামিনের বিরোধিতার বিষয়ে নাসরিন সুলতানা বলেন, আরাফাত সানী আমার সাথে সমঝোতা করবে এমন কথা বলেছিল। এজন্য আমি তার জামিনের বিরোধিতা করিনি। গত দুই মাস ধরে আমি তার জামিনের বিরোধিতা করছি। কারণ, সে আমার সাথে কোনো ধরনের সমঝোতা করছে না। ধার্য তারিখের আগের দিন ছাড়া আমার সাথে দেখা পর্যন্ত করে না। ধার্য তারিখ আসলেই তার আমার কথা মনে পড়ে। এদিকে আদালত আজ আরাফাত সানী এবং তার স্ত্রী নাসরিন সুলতানার মধ্যে আগামী ১০ দিনের মধ্যে সমঝোতার নির্দেশ দিয়েছেন। সমঝোতা না হলে আরাফাত সানীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়ে দেন আদালত। চতুর্থ দফায় আরাফাত সানীর জামিনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে বৃহস্পতিবার। অন্তর্বর্তীকালীন জামিন শেষ হতে যাওয়ায় ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোল্লার আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন আরাফাত সানী। আদালত আরাফাত সানীকে আগামী ১০ জুলাই পর্যন্ত জামিন মঞ্জুর করেন এবং ওই তারিখের মধ্যে তাদের মধ্যে সমঝোতার নির্দেশ দেন। প্রসঙ্গত, গত ১ ফেব্রুয়ারি ঢাকার ৪ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলাটি করেন সানীর স্ত্রী নাসরিন সুলতানা। ওই দিন আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণের পর মোহাম্মদপুর থানাকে অভিযোগ তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। গত ৮ ফেব্রুয়ারি মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জামাল উদ্দীন মীর মামলাটি এজাহার হিসেবে রেকর্ড করে ঢাকা সিএমএম আদালতে নথি পাঠান। এরপর আদালত মামলাটির তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন। মামলায় বলা হয়, সাত বছর আগে পরিচয়ের সূত্র ধরে উভয়ের ঘনিষ্ঠতা হয়। ২০১৪ সালের ৪ ডিসেম্বর অভিভাবকদের না জানিয়ে তারা বিয়ে করেন। কিন্তু বিয়ের তিন বছরেও আরাফাত সানী দুই পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে নাসরিন সুলতানাকে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘরে তুলে নেননি। নাসরিন সুলতানা বারবার এ বিষয়ে চাপ দিলেও তিনি কালক্ষেপণ করেন। এর পর গত বছরের ১২ জুন রাত ১টা ৩৫ মিনিটে নাসরিন সুলতানা (Nasrin Sultana) নামের একটি ভুয়া ফেসবুক আইডি থেকে নাসরিন সুলতানার আসল ফেসবুক মেসেঞ্জারে সানী-নাসরিনের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের কিছু ছবি পাঠানো হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে তথ্য প্রযুক্তি আইনে মোহাম্মদপুর থানায় মামলা করেন নাসরিন সুলতানা। ওই মামলায় আরাফাত সানী রিমান্ডে থাকা অবস্থায় গত ২২ জানুয়ারি তার মা নার্গিস আক্তার থানার সামনে বাদীকে মারধর করেন। এ বিষয়ে ওই দিন থানায় অভিযোগ করলেও পুলিশ কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় আদালতে মামলা করেন নাসরিন সুলতানা। আরাফাত সানীর বিরুদ্ধে নাসরিন সুলতানা নারী নির্যাতনের মামলা ছাড়াও যৌতুক আইনে একটি মামলা এবং তথ্য-প্রযুক্তি আইনে আরেকটি মামলা দায়ের করেছেন। ওই মামলায় গত ২২ মার্চ আদালতে চার্জশিট দাখিল করেছে পুলিশ। চার্জশিটে আরাফাত সানীর সাথে যে নাসরিন সুলতানার বিয়ে হয়েছিলে চার্জশিটে তা উল্লেখ করেন তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদপুর থানার এসআই মো. ইয়াহিয়া। আর/১০:১৪/০৬ জুলাই
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2uuyWNG
July 07, 2017 at 05:01AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন