নিজস্ব প্রতিবেদক : নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার শাহ আরেফিন টিলায় ফের গর্ত করে পাথর উত্তোলনকালে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে গর্তধসে মোস্তাকিন মিয়া (২২) নামের এক শ্রমিক গুরুতর আহত হন। হাসপাতালে নেওয়ার পথে সন্ধ্যায় তিনি মারা যান। তবে পুলিশের ভাষ্য, মোস্তাকিন দুর্ঘটনায় মারা গেছে।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি আলতাফ হোসেন জানান, মোস্তাকিন গর্তধস বা পাথরচাপায় নয়, ট্রাক থেকে লাফ দিয়ে গর্তে নামতে গিয়ে আহত হয়ে মারা যান। তবে মারা যাওয়ার কারণ নিয়ে মতভিন্নতা থাকায় এ ব্যাপারে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করে ঘটনা সম্পর্কে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে বলে ওসি জানিয়েছেন।
ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে টিলা এলাকার আশপাশের বাসিন্দারা বলেন, বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে নারায়ণপুরের আবদুল হান্নান নামের এক পাথর ব্যবসায়ীর পুরোনো একটি গর্ত থেকে পাথর উত্তোলন চলছিল। মোস্তাকিনসহ সাত-আটজন গর্ত শ্রমিক সেখানে খোঁড়াখুঁড়ি করে পাথর তুলছিলেন। বিকেলে উত্তোলন করা পাথর ট্রলি দিয়ে সরানোর সময় গর্তের একটি পাড় ধসে পড়ে। এ সময় ট্রলিসহ পাথর গর্তের নিচে পড়ে যায়। মোস্তাকিন গর্তের নিচে ট্রলিসহ পাথরচাপা পড়ে আহত হন। অচেতন অবস্থায় তাঁকে সিলেটের এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।
মোস্তাকিনের বাড়ি মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মুন্সিবাজারের সুনন্দাপুর গ্রামে। বাবা ওয়াজিদ মিয়া শ্রমজীবী। সপরিবারে শাহ আরেফিন টিলার পাশের বসতি নারায়ণপুর গ্রামে বাস করেন।
শাহ আরেফিন টিলা কেটে অবৈধভাবে পাথর উত্তোলন করতে গিয়ে গত ২৩ জানুয়ারি গর্তধসে পাঁচজন শ্রমিক নিহত হয়েছিলেন। এ ঘটনার প্রায় দুই সপ্তাহ পর ১১ ফেব্রুয়ারি একই জায়গায় ফের গর্তধসে নিহত হন আরেক শ্রমিক। এরপর ২ মার্চ তৃতীয় দুর্ঘটনায় ইয়াকুব আলী (৩০) নামের একজন পাথর ব্যবসায়ী নিহত হন। এসব ঘটনায় গর্তের মালিকদের বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে হত্যা মামলা করে।
প্রায় সাড়ে তিন মাস পর গর্তধসে শ্রমিক নিহতের চতুর্থ ঘটনা ঘটল গত বৃহস্পতিবার। মোস্তাকিন যে গর্তে কাজ করার সময় মারা গেছেন, সেই গর্তটি নারায়ণপুরের আবদুল হান্নান খুঁড়েছিলেন। গত ৩ ফেব্রুয়ারি জেলা প্রশাসনে দাখিল করা সিলেটের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের তদন্ত প্রতিবেদনে যে ৪৭ জন ‘পাথরখেকো’র নাম আছে, সে তালিকার ৩০ নম্বর নামটি হচ্ছে আবদুল হান্নানের।
from Sylhet News | সুরমা টাইমস http://ift.tt/2vw2H1i
July 22, 2017 at 09:45PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন