ঢাকা, ৩০ জুলাই- সুবর্ণা মুস্তাফা। তিনি বাংলাদেশের একজন সুপরিচিত অভিনেত্রী। সুপরিচিত তো অবশ্যই, তার পাশাপাশি তিনি অভিনয় জগতে এবং দর্শক হৃদয়ে একটা সম্মানজনক জায়গায় অধিষ্ঠিত হয়ে আছেন। অভিনয় জগতে যখন পদার্পণ করেন, তখন তিনি পড়তেন নবম শ্রেণিতে। অবশ্য তার আগে ছোট বেলায় মায়ের হাত ধরে এসেছিলেন বেতার নাটকে। তখন সুবর্ণা মুস্তাফার বয়স মোটে পাঁচ কি ছয় হবে। তার মা তখন পাকিস্তান রেডিওতে প্রযোজক হিসেবে কাজ করতেন। মুক্তিযুদ্ধের আগ পর্যন্ত সুবর্ণা মুস্তাফা কাজ করতেন শিশু শিল্পী হিসেবেই। সম্প্রতি বিবিসি বাংলাকে একটি সাক্ষৎকার প্রদান করেন সুবর্ণা মুস্তাফা। সেখানেই উঠে আসে তার জীবনের নানা দিক। উত্তর দেন নিজের নিজের একেবারেই ব্যক্তিগত কিছু প্রশ্নের। তার জীবনের বিয়ে, বিচ্ছেদ ও নতুন সম্পর্কের বিষয়েও কিছু প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন বিবিসিকে। অভিনয়ের শুরুর দিকে সুবর্ণা মুস্তাফাকে ঘিরে তৎকালীন অভিনেতাদের নিয়ে রোমান্টিক সম্পর্কের গুঞ্জনের খবর বেরুতো পত্রিকার পাতায়। রাইসুল ইসলাম আসাদকে ঘিরেও ছিল এমন গুঞ্জন। কিন্তু সেসব গুঞ্জন কী আদৌ রোমান্টিক পরিণতির দিকে যাচ্ছিল? বিবিসির এমন প্রশ্নের পরিস্কার কোনও জবাব দেননি তিনি। একপ্রকার হঠাৎ করেই হুমায়ূন ফরীদি ও সুবর্ণা মুস্তাফা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন। ২২ বছর সংসার করেছেন তারা। ২০০৮ সালে ঘটে বিবাহ বিচ্ছেদ। বিচ্ছেদের কথা অবশ্য মিডিয়াকে জানিয়েছিলেন স্বয়ং সুবর্ণা মুস্তাফাই। অতঃপর আলোচনা শুরু হয়ছিলে সুবর্ণার দ্বিতীয় বিয়ে প্রসঙ্গে। বিচ্ছেদের দীর্ঘদিন পর নির্মাতা বদরুল আলম সৌদের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি। সৌদ বয়সে সুবর্ণা মুস্তাফার চেয়ে কনিষ্ঠ। সৌদকে বিয়ে করার সময় নিজের সঙ্গে কতটা বোঝাপড়া করতে হয়েছিল? বিবিসির এই প্রশ্নের উত্তরে সুবর্ণা বলেছেন: কোনও বোঝাপড়া করতে হয়নি। কারণ যখন সিদ্ধান্ত নিলাম আমি আর ফরীদি একসাথে থাকবো না, থাকিনি। যখন সিদ্ধান্ত নিলাম আমি আর সৌদ বিয়ে করবো, করেছি। এত দ্বিধা-দ্বন্দ্বে পড়ার বয়স তো অনেক আগেই পার হয়ে গেছে। আমার ব্যক্তিগত জীবন সবসময়ই ব্যক্তিগত রাখতে পছন্দ করি। সুবর্ণা মুস্তাফা আরও বলেছেন হুমায়ূন ফরীদি আর আমি যখন বিয়ে করেছি তখন তো দর্শকদের অনুরোধে করিনি। তাহলে বিচ্ছেদের সময় দর্শকদের অনুমতি নিতে হবে বা কাউকে স্যরি বলতে হবে কেন? অবশ্য দর্শকদের কৌতুহলকে সম্মান দেখিয়ে বলেছেন, তবে হ্যাঁ একজন পাবলিক ফিগার হিসেবে আমি জানি একধরনের কৌতুহল দর্শকদের থাকবেই। তাই চেষ্টা করেছি সম্পর্কগুলো সম্পর্কে ওপেন থাকতে। আমি নিজেই বিচ্ছেদ এবং দ্বিতীয় বিয়ের খবর মিডিয়াকে জানিয়েছি কারণ আমি তো প্রচলিত আইনের বিরুদ্ধে কিছু করছি না। আর দ্বিতীয় বিয়ে যে পৃথিবীতে এই প্রথম ঘটলো তা নয়, আর কণের চেয়ে বরের বয়স কম এটাও প্রথম ঘটনা নয়। সুবর্ণা মুস্তাফা ব্যক্তি জীবনে সামাজিকভাবে অনেক প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছিলেন। তবে সেসবে তিনি পাত্তা দেননি মোটেও। তিনি বলেন- আমি এসব পাত্তা-টাত্তা দেইনা। আর হুমায়ূন ফরীদির ডিভোর্সের পর আমাদের বিয়ে হয়েছিল। তখন যদি বিয়ের দুবছর পর আমাদের বিচ্ছেদ হতো সেটা একটা কথা হতো। ২২ বছর একটি লম্বা সময়। ২২ বছর কোনও ফাজলামি না। ২২ বছর তো অনেকের আয়ুও হয়না। সুতরাং এটা নিয়ে আর কথা বলার কিছু আছে বলে মনে হয় না। তবে যেকোনো বিচ্ছেদই দু:খের অবশ্যই। হুমায়ূন ফরীদির সঙ্গে কেন তার বিয়েটি টেকেনি? সুবর্ণা বিবিসিকে বলেন- পারস্পরিক সম্মান, বন্ধুত্ব বিয়েতে খুব জরুরি। ভালোবাসা কিন্তু থাকে। কিন্তু বন্ধুত্ব আর সম্মানের জায়গাটুকু যদি নড়বড়ে হয়ে যায় তখনই ওই বিয়ের আর কোনও মানে হয়না। হুমায়ূন ফরীদি যেহেতু বেঁচে নেই তাই তার সম্পর্কে খুব বেশি কিছু বলতে চাননি সুবর্ণা মুস্তাফা। শুধু বলেছেন- এখন হুমায়ূন ফরীদির কাজ নিয়ে কথা বলতে চাই, ব্যক্তি ফরীদি সম্পর্কে আমি খুব অল্পই বলবো যতটুকু বলতে চাই। কারণ তিনি তো নেই তার স্বপক্ষ সমর্থন করতে বা দ্বিমত প্রকাশ করতে। তাই তাকে নিয়ে কথা বলাটা অশোভন। তার সাথে ২২ বছর ছিলাম একসাথে। আর থাকার মত পরিস্থিতি ছিলনা, তাই ছিলাম না। তবে যে বিষয়টি আমাকে ভাবায়, হুমায়ূন ফরীদির মত এত বড় মাপের একজন অভিনেতা কেন মারা যাবে এত অল্প বয়সে?
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2hduhxj
July 30, 2017 at 07:01PM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন