ঢাকা, ০৯ জুলাই- বেশ কিছুদিন ধরে গুঞ্জন উঠছে সঙ্গীতশিল্পী হাবিব ওয়াহিদ ও তানজিন তিশার মধ্যে প্রণয়ঘটিত কিছু একটা চলছে। এমনকি মাঝে কয়েকটি অনলাইন পোর্টালে খবর হয় যে, হাবিব এবং রেহানের বিচ্ছেদের কারণ মডেল-অভিনেত্রী এই তানজিন তিশা। বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে হাবিবের সাবেক স্ত্রী রেহানের বরাত দিয়ে এ ধরনের খবরও প্রকাশ করে। এবার এ গুঞ্জনকে বেগবান করতে বলতে গেলে বিচ্ছেদের অনুঘটক হিসেবে পরোক্ষভাবে তানজিন তিশার দিকে অভিযোগের আঙ্গুল তুললেন রেহান। আগুনে ঘি ঢালার মতো তিনি এ অভিযোগটি করেছেন তার ফেসবুক ওয়ালে। সম্প্রতি ইয়াবা ডন কার্লোসকে ঘিরে তারকাপাড়ার কয়েকজনের নাম খুব জোরেশোরে উচ্চারিত হচ্ছে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে যে, কার্লোসের সঙ্গে বিশেষ বান্ধবী হিসেবে সম্পর্ক ছিল পিয়া বিপাশা, পিয়াসা, সাবিনা ও মিথিলার। আর এই ইস্যুকে সামনে এনে বৃহস্পতিবার রাতে হাবিবের সাবেক স্ত্রী রেহান একটি স্ট্যাটাস দেন। সেখানে তিনি লেখেন, পিয়া বিপাশা আমাকে হার্ট করেছিলে। দেখো, বছর হয়নি দুইবার তোমার নাম আসলো তোমার নষ্ট কুকর্ম নিয়ে। এখন তানজিন তিশা তোমার পালা। আসবে ভেরি সুন। তার এ স্ট্যাটাসকে ঘিরে নানা রকম মুখরোচক গল্প উচ্চারিত হচ্ছে মিডিয়াপাড়ায়। এ স্ট্যাটাসের আদি-অন্ত জানতে যোগাযোগ করা হয় রেহানের সঙ্গে। তিনি বলেন, বলতে পারেন বুকের ভেতর জমে থাকা ক্ষোভ থেকে এ স্ট্যাটাস লিখেছি। আমার আর হাবিবের সংসার ভাঙার পেছনে টনিক হিসেবে কাজ করেছে পিয়া বিপাশা ও তানজিন তিশা। পিয়া বিপাশা তার কুকুর্মের ফল পাওয়া শুরু করেছে। এবার তিশার পালা। ঠিক বুঝলাম না, একটু পরিস্কার করে বলবেন কী? রেহান বলেন, ডিভোর্সের আগে থেকে হাবিবের সঙ্গে তিশার যোগাযোগ, বলতে লজ্জা নেই লিভ টুগেদার করতো। সেই অবস্থা এখনো বিরাজমান। কেউ কেউ তো এটাও বলছে তারা নাকি বিয়েও করে ফেলেছে। মুখের কথা থামিয়ে এবার বলতে হলো, বিয়েও যদি করেও থাকে সমস্যাটা কোথায়? আপনি তো এখন ডিভোর্সড। এবার রেহান বলেন, জ্বী আপনার কথা ঠিক আছে। কিন্তু ওই যে বললাম ডিভোর্সের আগে থেকেই তাদের মধ্যে পরকীয়া ছিল। এক কথায় বলতে গেলে আমাদের বিচ্ছেদের যতগুলো কারণ ছিল তার মূলে ছিল তিশা। সে আমাকে হুমকি-ধামকি দিয়ে ভাইভার-মেসেঞ্জারে মেসেজ পাঠিয়েছে এবং এখনো পাঠাচ্ছে। ডিভোর্সের পরও হাবিবকে এ বিষয়টি বলেছি। রেহানের এ অভিযোগ জানতে চাইলে তিশা বলেন, দেখুন হঠাৎ করে এসব আলোচনা কেন উঠলো তা আমার বোধগম্য নয়। যে-যাই বলুক না কেন হাবিব আর আমার কোনো ইস্যু নিয়ে কথা বলতে চাই না। এটা একান্তই আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার। তার মানে সত্যিই আপনারা লিভ টুগেদার করছেন? তিশা বলেন, উত্তর একটাই। পার্সোনাল বিষয়ে কেন কথা বলবো? তারপরও একটি কথা না বললেই নয়। রেহানের সঙ্গে আমার কোনো যোগাযোগ নেই। ও এখন হাবিবের পাস্ট। ওর মতো সাধারণ একটি মেয়ে হঠাৎ করে এসব কথাবার্তা বলে আলোচনায় আসতে চাচ্ছে। কিন্তু আমরা তো সেটা পারবো না। সমাজে আমাদের একটা অবস্থান তৈরি হয়েছে। বিনে পয়সায় প্রচারণা পেতে রেহান এসব করে বেড়াচ্ছে। রেহান যদি এসব কথা বলে থাকে তাহলে তাকে প্রমাণ করতে বলুন। রেহানের কাছে জানতে চাওয়া হয়, তিশা তো আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করছে না। তাহলে হঠাৎ কেন এ আলোচনা? এবার রেহান বলেন, তিশা মিথ্যা বলেছে। গত ৫ জুলাই তারিখেও সে ফোন করেছে। কিন্তু ইচ্ছে করে সেদিন ফোন ধরিনি। ফোন ধরলেই উল্টো-পাল্টা কথা বলে আমার সঙ্গে। ডিভোর্সের আগেও তিশা আমাকে বহু মেসেজ পাঠিয়েছে। যা এখনো সংরক্ষিত আছে। আপনারা চাইলে সেগুলোর স্ক্রিনশট প্রকাশ করতে পারি। এমনকি আমার নামে বেশ কয়েকটি ফেক অ্যাকাউন্টও চালাচ্ছে তিশা। আর মানুষকে বোঝাচ্ছে আমি নাকি এসব কাজ করে থাকি। একটি কথা শুধু বলতে চাই, ওর কর্মের ফল খুব শীঘ্রই উন্মোচন হবে সবার সামনে। সাবেক স্বামীর আচরণ নিয়ে নিজের মধ্যে জমে থাকা অভিমানও লুকালেন না রেহান। তিনি বলেন, এ হাবিবই একসময় বলতো মিস ওয়ার্ল্ডকে পেলেও আমাকে সে ছাড়বে না। সে কী না এখন অন্যের কথায় উঠছে-বসছে। ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস! আমাকে বিভিন্ন ধরনের মেসেজ পাঠানো হয় আমি নাকি আলিমকে (হাবিব-রেহানের সন্তান) দিয়ে হাবিবকে মানসিকভাবে ব্ল্যাকমেইল করি। বোঝাই যায় এ মেসেজগুলো কে পাঠাচ্ছে। অন্যদিকে ফোনে হুমকির অভিযোগ প্রত্যাখান করে তিশা বলেন, রেহান সব মনগড়া কথা বলছে। আমি কেন ওকে হুমকি-ধামকি থ্রেট করবো। উল্টো সে আমাকে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। আমার কাছে প্রমাণও আছে। যখন আইনি পদক্ষেপ নেবো তখন সবাই জানবে। তাছাড়া ওকে যদি কখনও ফোন করেও থাকি সেটা অন্য কোনো কারণে, হয়তো অনেক আগে। আর আমি নই, রেহানই আমার নামে উল্টো-পাল্টা আইডি চালাচ্ছে। এমনকি হাবিবকেও এ বিষয়ে জানিয়ে রেখেছি। চাইলে সে আইডির স্ক্রিনশট পাঠাতে পারি। ওই অ্যাকাউন্টে আমাকে আর হাবিবকে নিয়ে যা লেখা হয়েছে তা পড়লেই বোঝা যাবে এগুলো কার লেখা। আর ৫ জুলাই যদি ফোন পেয়েও থাকে ভুলে প্রেস পড়ে গিয়েছিল। এ বিষয়ে ইতিমধ্যে তাদের সাথে আমার কথা হয়েছে। ফেক আইডি নিয়ে আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছেন না কেন? এবার তিশা বলেন, আপাতত আইনি পদক্ষেপ নেয়ার ইচ্ছে নেই। বেশ কিছুদিন আগে অনেকগুলো আইডি বন্ধ করেছিলাম। তাছাড়া, সমস্যা মনে হলে আমার পরিবারই উপযুক্ত পদক্ষেপ নেবে। আমার পরিবারেরও একটা স্ট্যাটাস রয়েছে। আসলে রেহান চাচ্ছে এরকম কিছু একটা হোক যাতে সে ফ্রিতে পাবলিসিটি পায়। তিশা আরও বলেন, মনে হচ্ছে রেহান মানসিক অসুস্থতায় ভুগছে। না হলে, সে কীভাবে বলতে পারে অন্য একজন সেলিব্রেটি এবং আমার সঙ্গে তার স্বামীর সম্পর্ক ছিল ও আছে। সবচেয়ে বড় কথা, তার উচিত হাবিবের বর্তমান নিয়ে ঘাটাঘাটি না করা। কারণ সে তো এখন পাস্ট। তার উচিত পাস্টেই থাকা। এক কাজ করতে পারেন, বিষয়টি নিয়ে হাবিবকেই জিজ্ঞেস করুন। তাহলে হয়তো আরও পরিষ্কার হয়ে যাবে এই ইস্যুটি। রেহান তাদের বিচ্ছেদের জন্য অনেকের দিকেই আঙ্গুল তুলেছেন। বিশেষ করে আমার দিকে। এটা বোঝা উচিত, শুধু একটা মেয়ের জন্য বিচ্ছেদ হয় না। আরও অনেক কারণ থাকতে পারে। আশা করবো রেহানও যেন পাস্ট নিয়ে আলোচনা না করে। এদিকে কনসার্ট করতে অস্ট্রেলিয়ায় অবস্থান করছেন হাবিব। এ বিষয়ে মন্তব্য নিতে বেশ কয়েকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। রেহান নয়, এবার সংবাদকর্মী হিসেবে আমার প্রশ্ন হাবিবের সঙ্গে কোনো সম্পর্কে জড়িয়েছেন? তিশা বলেন, দেখুন, আগে দুই বার বলেছি। আবারও বলছি। মিডিয়ায় যারা কাজ করে তাদেরও ব্যক্তিগত লাইফ বলে কিছু রয়েছে। এসব নিয়ে আর কথা বলতে চাই না। অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ শেষে নিজের কাছে প্রশ্ন রাখলাম, পাবলিক ফিগার হয়ে গেলে সমাজের কাছে দায়বদ্ধতা থাকে। তখন নেতিবাচক অথবা ইতিবাচক যা-ই হোক না কেন বিষয়টিকে পরিষ্কার রাখাই শ্রেয়, তাই নয় কি?
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2t0GN3B
July 09, 2017 at 06:49PM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন