ঢাকা, ০৮ আগস্ট- মাঠের মাশরাফি বিন মুর্তজাকে তো সবাই চেনেন। কঠিন সব পরিস্থিতির বিরুদ্ধে বুক চিতিয়ে লড়াই করা এক টাইগার তিনি।বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের (ওয়ানডে ও টিটোয়েন্টি) অধিনায়ক মাশরাফি খেলার বাইরে মানুষ হিসেবে কেমন? সেটাই বোঝার জন্য একবার কথা হয়েছে নড়াইল এক্সপ্রেসের মাবাবার সঙ্গে, কথা হয়েছে মাশরাফির সঙ্গেও। মাশরাফির জীবনে সবচেয়ে প্রভাব ফেলা মানুষটি তাঁর নানি খালেদা রহমান। অনেকে বলে, মায়ের চেয়ে সন্তানকে বেশি ভালোবাসে যে, সে ডাইনি। ওটা আসলে ভুল ধারণা। কেউ যে মায়ের চেয়েও তার সন্তানকে বেশি ভালো বাসতে পারে, সেটা আমি কৌশিকের নানিকেই দেখেছি। বললেন হামিদা মুর্তজা। পনারা কি সব সময় অনুভব করেছেন যে মাশরাফি একটু অন্য রকম ছেলে? এবার মুখ খোলেন বাবা। সে একজন কঠিন দেশপ্রেমিক মানুষ। সেটা আমি এতখানি জানতাম না। এবার বিশ্বকাপে নিউজিল্যান্ডের নেলসনের মাঠে সেটা কিছুটা টের পেয়েছি। অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডিলেডে গিয়েও তা আরেকবার বুঝেছি। সে খুব ধর্মপরায়ণ, দেশপ্রেমিক, সৎ একটা ছেলে। অন্যের জন্য একটু উপকার করতে পারলে ওর মুখ খুশিতে ভরে ওঠে। দেশপ্রেমের কথা বলছেন, বাংলাদেশের চেয়ে প্রিয় জায়গা ওর আর নেই কোথাও। হামিদা মুর্তজা বলেন, ওর তো কোনো দিনই কোনো চাহিদা ছিল না। শীতকালে যদি সোয়েটার না থাকত, ও পাঁচছয়টা শার্ট একবারে পরে নিত। লুঙ্গি ছিঁড়ে গেলেও কাউকে কিছু বলত না। বরং মজা করে আমাকে বলত, আম্মা, বলো তো কয়টা শার্ট গায়ে দিয়েছি? আর জানেন, কোনো ম্যাচে জিতলে আমাকে ফোন করে বলবে, আম্মা তুমি খুশি? আর জিততে না পারলে ঘরে বসে থাকবে একা একা। কারও সঙ্গে কথা বলবে না। বউবাচ্চার সঙ্গেও কথা বলবে না। ও নিজের কষ্টটা কাউকে জানতে দিতে চায় না। ও কোনো দিন কারও কাছে কিছু চায়নি। এরপরে যখন মাশরাফিকে ফোন করি, তখন তিনি মিরপুর স্টেডিয়ামে ফুটবল খেলছেন। ক্রীড়া সাংবাদিক তারেক মাহমুদ সেখানে অপেক্ষা করেন ক্যাপ্টেনের কথা বলিয়ে দেওয়ার জন্য। হাঁপাতে হাঁপাতে কথা বলেন মাশরাফি। আমরা নড়াইলে আপনাদের বাড়িতে গিয়েছিলাম। আপনার প্রিয় খাবার কী, জিজ্ঞেস করেছিলাম মাকে। তিনি কী বললেন, বলতে পারবেন? আলুভর্তা, ডাল আর ভাত। আপনার পছন্দের মাছমাংস? কই মাছ আর গরুর মাংস। দেখলাম নড়াইলে আপনাদের মাঠে ক্রিকেট টুর্নামেন্ট চলছে। এলাকার লোকেরাই আয়োজন করেছে। আপনারা তো জানেন, ওদের আর্থিক অবস্থা ভালো না। আমরা যখন খেলতাম, তখন ভালো ছিল। কিন্তু সবাই তো ছড়িয়েছিটিয়ে গেছে। তাই এখন ওদের জন্য খেলা কঠিন হয়ে গেছে। টানা কয়েক বছর ধরে নড়াইলে তো লিগও হয় না। আমার যারা স্পনসর তাদের মাঝে মাঝে বলি সাহায্য করতে। পাইলট ভাই একসময় ব্যাটপ্যাড দিয়ে সাহায্য করেছেন। মুশফিক করেছে। টুকটাক করে চালিয়ে দিচ্ছি একাডেমিটা। নড়াইলে যার সঙ্গেই কথা বলেছি, সেই আপনাকে নিয়ে মুগ্ধ। কেমন লাগে মানুষের এই ভালোবাসা? এটাই আমার জীবনের বড় পাওয়া। মানুষ আমাকে অনুভব করে, এর চেয়ে বড় আর কী হতে পারে।
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2vIj9hl
August 08, 2017 at 05:32PM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন