শিলিগুড়ি, ১৪ আগস্ট- অবশেষে জেদের পাহাড়ে ফাটল। প্রবল চাপের মুখে পিছু হটল গুরুংবাহিনী। অনশন তুলে নেওয়ার কথা ঘোষণা করে বিবৃতি দিল যুব মোর্চা। পৃথক রাজ্য বা গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে প্রায় দুমাস ধরেই অশান্ত ছিল পাহাড়। যে পাহাড় এই কদিন আগেও বাঙালির কাছে যেন হাসিমুখে ধরা দিয়েছিল, তাইই অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। লাগাতার বনধ। পুলিশকর্মীদের উপর আক্রমণ। সরকারি অফিস জ্বালিয়ে দেওয়া। রীতিমতো বিপর্যস্ত ছিল পাহাড়। পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে কড়া ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী নিজে গিয়ে পাহাড়ের পরিস্থিতি সামাল দিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি ফিরতেই ফের বেহাল হয় পাহাড়। লাগাতার আন্দোলনে জেরবার হতে থাকেন পাহাড়বাসী। অভিযোগ ওঠে, প্রতিবেশী কোনও কোনও দেশ থেকেইও এই আন্দোলনে ইন্ধন এসেছে, মদত জুগিয়েছে উত্তর পূর্বের জঙ্গি গোষ্ঠীগুলিও। গুরংয়ের ডেরায় তল্লাশি করেও সেরকম ইঙ্গিত মিলেছিল। সরকারের পক্ষ থেকে বারবার আন্দোলন প্রত্যাহারের আবেদন জানানো হয়েছিলেন। কিন্তু প্রত্যাখ্যান করেছিলেন বিমল গুরুং। উলটে রক্তক্ষয়ী আন্দোলনের দিকেই ঠেলে দিয়েছিলেন পাহাড়বাসীকে। মোর্চার তরফে গোপনে দিল্লির সঙ্গেও যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু কৌশলী কেন্দ্র এ ব্যাপারে কোনও একটি পক্ষ নেয়নি। বরং সম্প্রতি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনশন প্রত্যাহারেরই আরজি জানান। এরপরই দেওয়াললিখন পড়তে পারে আন্দোলনকারীরা। পরিস্থিতি অন্যদিকে গড়ালে তার দায় যে গুরুংয়ের ঘাড়েই পুরোপুরি বর্তাবে, তা বুঝতে অসুবিধা হয়নি। আর তারপরই অনশন প্রত্যাহার করল যুব মোর্চা। জিএমসিসি-র চিঠি দেয় বিমল গুরুংকে। অনশন প্রত্যাহারের আবেদন মঞ্জুর করেন মোর্চা সুপ্রিমো। চাপে পড়েই প্রায় ষাটদিনের আন্দোলন থেকে পিছু হটল মোর্চা। যদিও মোর্চা নেতাদের বক্তব্য, দেশের স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর আরজি মেনে নেওয়াই উচিত। অনশন তুলে নেওয়া বনধ প্রত্যাহারের দিকেই আরও এক পদক্ষেপ বলে মত বিশেষজ্ঞদের। তাঁদের ধারণা হুট করে বনধ প্রত্যাহার করে নিলে বিমল গুরুংকে পাহাড় থেকে ছুড়ে ফেলে দিতেন ভূমিপুত্ররা। তাই ধাপে ধাপে সেদিকে এগোচ্ছেন মোর্চা প্রধান। পাহাড়ের অন্যান্য দলগুলির সঙ্গে অহিনকুল সম্পর্ক হলেও, স্রেফ গোর্খাল্যান্ডের জন্য একজোট হয়েছিল মোর্চা। বিমল গুরুংদের এই পিঠটান বাকি দলগুলিকে অক্সিজেন জোবাবে কিনা, সে প্রশ্নও ঘুরছে পাহাড়ে। তবে এই সিদ্ধান্তে পাহাড় যে আবার স্বাভাবিক ছন্দে ফিরবে, এমনটাই প্রত্যাশা রাজ্যবাসীর।



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2uCnljx
August 14, 2017 at 11:00PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top