মো. আবুল কাশেম, বিশ্বনাথ সিলেট থেকে :: পূণ্যভূমি সিলেট একসময় পরিচিত ছিলো দিঘীর শহর হিসেবে। কালের বিবর্তনে এখন দিঘীর শহর পরিচয় বিলীনপ্রায়। হাতে গোনা কয়েকটি দিঘী, আর হারিয়ে যাওয়া অন্য দিঘীগুলোর শুধুমাত্র নাম- অতীত স্মৃতি বয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছে। সেই ঐতিহ্যের স্মারক দিঘীগুলোর একটি ধোপাদিঘী।
এটিকে পুন:খননের মাধ্যমে নতুনরূপে সাজাতে দরপত্র আহ্বান করেছে সিলেট নগরভবন কর্তৃপক্ষ। এটির উপরই নির্মিত হবে সিলেটে কোন দিঘীর উপর প্রথমবারের মতো ভাসমান রেস্টুরেন্ট। সারাদেশের মধ্যে এটি প্রথম কিনা সেটি নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
ঐতিহ্যবাহী কাজীদিঘী, লালাদিঘী, ধোপাদিঘীসহ আরো কয়েকটি দিঘী ছাড়া বাকিগুলো ভরাট করে নির্মাণ করা হয়েছে স্থাপনা। বন্দরবাজারের লালদিঘীতে হয়েছে মার্কেট, চারাদিঘীতে হয়েছে মসজিদ ও বিদ্যালয়। ধোপাদিঘীর একাংশে নির্মিত হয়েছে মসজিদ। সাগরদিঘী, মাছুদিঘী, নগরীর চৌকিদেখি সংলগ্ন মজুমদারীর এলাকাকার মজুমদারবাড়ির দিঘী, রামেরদিঘীরও নেই অস্থিত্ব। কালের গর্ভে বিলীন হয়েছে সিলেটের দিঘীগুলো।
দখল আর স্থাপনার দাপট থেকে বেঁচে যাওয়া ধোপাদিঘী রক্ষায় নজর দিয়েছে সিলেট সিটি কর্পোরেশন (সিসিক)। আধুনিকতার মিশেলে ফিরিয়ে আনা হবে ধোপাদিঘীর অতীত রূপ। নতুন করে আবার খনন করা হচ্ছে দিঘীটি। দিঘীর চারপাশে জায়গাগুলো সঠিকভাবে চিহ্নিত করে সেখানে নির্মাণ করা হবে পায়ে হাটার পথ।
এ কাজ ইতোমধ্যে অনেকদূর এগিয়েছে। আর্থিক সংস্থাপনসহ দরপত্র আহ্বানও সম্পন্ন করেছে নগরভবন। শিগগিরই এ কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে। দিঘীর চারদিকে ওয়াকওয়ে নির্মাণ করে ঠিক মাঝখানে নির্মাণ করা হবে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্পন্ন একটি ভাসমান রেস্টুরেন্ট।
সিলেটে এর আগে থেকে ভাসমান রেস্টুরেন্ট প্রথা চালু থাকলেও নগরীর প্রাণকেন্দ্রে কোন দিঘীর উপর এটিই হবে প্রথম রেস্টুরেন্ট। ব্যস্ত নগরবাসীর বিনোদনে সেটি নি:সন্দেহে ভিন্নমাত্রা যোগ করবে- মনে করেন নগরীর বিভিন্ন ওয়ার্ডের জনপ্রতিনিধিরা।
সিসিকসূত্রে জানাগেছে- সম্প্রতি ভারতীয় সরকার সিলেট নগরীর উন্নয়নে ২১ কোটি ৮৫ লক্ষ ১৬ হাজার টাকা অনুদান প্রদান করেছেন। সিসিকের উন্নত পরিবেশ ও শিক্ষার মান উন্নয়নে সিটি কর্পোরেশন এলাকার অবকাঠামো নির্মাণ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় ধোপাদিঘীর উন্নয়ন কাজেও সেই টাকা থেকে অর্থ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে সিসিক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী
বলেন- ‘ভারত সরকারের অনুদানের টাকায় ধোপাদীঘি পুন:খনন, চারদিকে ওয়াকওয়ে নির্মাণ, মাঝখানে ভাসমান রেস্টুরেন্ট করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। দরপত্র আহবান সম্পন্ন হয়েছে। শিগগিরই দিঘীতে কাজ শুরু হবে।
ধোপাদিঘীতে একাজ শেষ হলে দীঘির শোভাবর্ধন হবে এবং কর্মব্যস্ত নগরবাসী অবসরে স্বস্তির নি:শ্বাস নিতে পারবেন বলে মনে করেন মেয়র অারিফুল হক চৌধুরী।
from সিলেট – দ্যা গ্লোবাল নিউজ ২৪ http://ift.tt/2gkWFNL
August 29, 2017 at 11:30AM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন