কুমিল্লার বার্তা রিপোর্ট ● লাকসাম উপজেলায় পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কামার শিল্পিরা। দম ফেলারও যেন সময় পাচ্ছে না তারা। রাতদিন টুং টাং শব্দে মুখরিত হচ্ছে হাট-বাজারসহ কামার বাড়ীতে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে ইউনিয়নের হাট-বাজার গুলোতে মুদাফরগঞ্জ , বিজরা, বাকই, হরিশ্চর, কামড্ডা, মাওলানা, শ্রীয়াং, ইছাপুরা, খিলা, আজগরা, হেসাখাল, নরপাটি, পূর্ব লাকসাম, দৌলতগঞ্জ, জংশন বাজারসহ উপজেলা বিভিন্ন বাজারে কামারদের বাড়ীতে কোরবানীর ঈদকে সামনে রেখে দা, বটি, চাকু, চাপাতিসহ সান ও মেরামত তৈরী করছেন কামাররা। তারা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কাজ করছে, কাজের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ফিরে তাকানো সময় নেই তাদের।
উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে কোরবানি পশু জবাই থেকে শুরু করে চামড়া ছিলানো এবং মাংস কাটার জন্য দা, বটি, ছুরি, চাপাতি সান করার কাজে নিয়োজিত কারিগররা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কারিকররা কাঁদে করে সান মেশিন নিয়ে বাড়ীতে বাড়ীতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এখন আর কোরবানী পশুর মাংস কাটার কাজে যন্ত্রপাতি সান দেয়ার জন্য কষ্ট করে কামারীর কাছে নিতে হয় না। এসব ব্যবহার্য জিনিস স্থানীয় চাহিদা মিটানো পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন স্থানে পাইকারী ব্যবসীরা নিয়ে যাচ্ছেন। স্থানীয় বাজার থেকে লোহা কিনে সেগুলো পুড়ে দা, বটি, চাপাতি, চাকুসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র তৈরী করছেন কামাররা।
এবার ঈদে বটি, দা, ছোট-বড় ছুরি ও ধামা তৈরীতে ৩ থেকে ৪’শ টাকা করে মুজুরী নেয়া হচ্ছে। আর তৈরী করা ওইসব সামগ্রী বিক্রি হচ্ছে ৫ থেকে ৬’শ টাকায়। গরু কাটার ছোট ছুরি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১২০ টাকায়। তবে গরু কাটার ছোট ছুরির চাহিদা একটু বেশী রয়েছে। ওইসব তৈরী করতে যেসব মালামাল প্রয়োজন তা বাজারে উচ্চ মূল্যে বিক্রি হওয়ায় তৈরীকৃত ওইসব মালামাল বিক্রি করতে হচ্ছে বেশি দামে। আগের মত এখন আর নতুন করে মানুষ ওইসব মালামাল কিনতে চায়না। ঘরে থাকা পুরানো দা, বটি, ছুরি ও ধামা গুলো পুনরায় শান দিয়ে ধারালো করে নিয়ে যাচ্ছে বর্তমানে আধুনিক যন্ত্রাংশের প্রভাবে কামার শিল্পের দুর্দিন চললেও পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে জমে উঠেছে এ শিল্প।
দৌলতঞ্জ বাজারের কামার শিল্পি রমেশ কর্মকার জানান, একসময় কামারদের যে কদর ছিলো বর্তমানে তা নেই। মেশিনের সাহায্যে বর্তমানে আধুনিক যন্ত্রপাতি তৈরী হচ্ছে। ফলে আমাদের তৈরী যন্ত্রপাতির প্রতি মানুষ আকর্ষন হারাচ্ছে। হয়তো বা একসময় এ পেশা আর থাকবে না। তবে কোরবানী ঈদের সময় আমরা একটু আশাবাদী হই।
কামার শিল্পী বাসুদেব বলেন আমাদের পূর্ব পুরুষরা এ কাজ করে আসছেন। সারা বছর তেমন কোন কাজ না থাকলেও কোরবানীর সময় আমাদের কাজের চাহিদা বেড়ে যায়। তিনি আরও বলেন এ পেশায় আমরা যারা আছি তারা খুবই অবহেলিত। গ্রামের লোকজন গরু, মহিষ, ছাগল জবাই ও মাংস কাটার কাজের জন্য কামারদের কাছে প্রয়োজনীয় ধারানো চাকু, বটি, কাটারী ও ছুরি তৈরীর আগাম ফরমায়েশ দেওয়া শুরু করেছে। কামারদের দোকানে ও বাড়ীতে টুং টাং শব্দে এখন মুখরিত হয়েছে এ এলাকায়।
The post লাকসামে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কামার শিল্পিরা appeared first on Comillar Barta.
from Comillar Barta http://ift.tt/2wua1gD
August 20, 2017 at 11:39PM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন