পথে যেতে ৩০ মিনিট, তবুও চিঠি গেল ১৩ দিনে

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে সড়ক পথে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার নামো রাজারামপুর গ্রামে যেতে সময় লাগে প্রায় ৩০ মিনিট। অথচ ‘ডাক বিভাগের কল্যাণে!’ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের একটি সরকারি চিঠি গ্রাহকের হাতে পৌচেছে ১৩ দিন পর। জেলা প্রশাসনের অফিস সহকারী কাম কম্পিটার মুদ্রাক্ষরিক পরীক্ষার প্রবেশ পত্রটি পরীক্ষার নির্ধারিত তারিখের একদিন পরে পৌছানোর কারণে পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ গ্রহণও করতে পারেননি। ডাক বিভাগের উদাসিনাতর শিকার যুবক হচ্ছেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর এলাকার নামো রাজারামপুর উপরপাড়া গ্রামের মো. আবুল হায়াতের ছেলে মো. নিয়ামাতুল্লাহ।
ভুক্তভোগী নিয়ামাতুল্লাহ জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের রাজস্ব প্রশাসনে ১৬ তম গ্রেডভুক্ত কর্মচারীর শূণ্যপদে লোক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেখে তিনি প্রায় ১ বছর আগে যথাযথ প্রক্রিয়ায় আবেদন করেছিলেন। অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পদে করা আবেদনের প্রেক্ষিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসনের রাজস্ব শাখা গত ২৪ জুলাই তার নামে ব্যবহারিক ও লিখিত পরীক্ষার স্থান ও সময়সুচি উল্লেখিত একটি প্রবেশ পত্র ইস্যু করে। ২৪ জুলাইয়ের ইস্যূ করা ওই প্রবেশ পত্রটি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৩০ জুলাই জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ডাকঘরে ‘পোস্ট’ করা হয়। পোস্ট করা ওই প্রবেশ পত্রে জানানো হয়, ১২ আগস্ট, ২০১৭ তারিখ দুপুর ১২.০০ থেকে ১২.৩০ মিনিট পর্যন্ত সময়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের বারঘরিয়াস্থ কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ব্যবহারিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু তার কাছে প্রবেশ পত্রের ডাকটি বিলি হয় ১৩ আগস্ট। পত্রের খামের উপর ডাক বিভাগের তিনটি সীলমোহরের মধ্যে একটিতে ৩১.০৭.১৭ এবং ‘ টেম্পোরারী পোস্ট অফিস কেএলএন-২০৫’ এর ঘরে ১৩ আগস্ট,১৭ উল্লেখ আছে।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে, শুধুমাত্র ব্যবহারিক পরীক্ষায় উর্ত্তিণ হওয়া প্রার্থীরা আগামী ২৬ আগস্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের গ্রীণভিউ স্কুলে দুপুর ১২.৩০ থেকে ২.৩০ সময় পর্যন্ত লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবেন। এক্ষেত্রে যারা ব্যবহারিক পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেননি তাদের লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেয়ার সুযোগ নেই।
নিয়ামাতুল্লাহ বলেন, ‘ যথাযথ প্রক্রিয়ায় আবেদন করে পরীক্ষায় অংশ নেয়ার জন্য অপেক্ষা করছিলাম অনেক দিন আগে থেকেই। কিন্তু সে আশায় ‘গুড়েবালি’ দিয়ে দিল ডাকবিভাগ। রাজারামপুর পোস্ট অফিসের লোক যখন চিঠিটি আমার হাতে দিল তখন একবুক আশা নিয়ে তার সামনেই চিঠিটি খুলে ছিলাম। কিন্তু খুলেই দেখি পরীক্ষার দিন একদিন আগেই শেষ হয়ে গেছে’। নিয়ামাতুল্লাহ অভিযোগ করেন, পোস্ট অফিসের যে লোক তাকে প্রবেশ পত্রের ডাকটি দিতে গিয়েছিল তিনি বলেছিলেন, ‘যেহেতু আগামী দু’দিন জন্মাষ্টমী ও শোক দিবসের ছুটি আছে সেহেতু একদিন আগে এসেই চিঠিটি দিয়ে গেলাম’। নিয়ামাতুল্লাহ বলেন, ‘ ডাক বিভাগের ওই লোকের কথানুযায়ী ওই চিঠিটি দু’ আগে দেয়া হল, তা না হলে হয়তো ওই চিঠিটি আসতো ১৬ আগস্ট’।
ভুক্তভোগি নিয়ামাতুল্লাহ জানান, বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট শাখায় যোগাযোগ করেও কোন লাভ হয়নি।
এব্যাপারে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ডাক বিভাগের রাজারামপুর পোস্ট অফিসের দায়িত্বে থাকা জিয়াউল হক বলেন, ‘ঘটনাটি দুঃখজনক। মানুষ আশা করে চাকরীর জন্য আবেদন করে। ছেলেটির আবেদনের প্রেক্ষিতে ওই চিঠিটি ৩০ জুলাই পোস্ট হয়েছিল। কিন্তু ভুল করে হয়তো অন্যদিকে চলে গেছিল। প্রধান ডাকঘর থেকে আমার কাছে ১৩ আগস্ট বিকেলে চিঠিটি এসেছে। আমি ওই দিন বিকেলেই গ্রাহকের কাছে পৌছে দিয়েছি’।  

চাঁপাইনবাবগঞ্জ নিউজ/ নিজস্ব প্রতিবেদক/ ১৪-০৮-১৭


from Chapainawabganjnews http://ift.tt/2uH2OGB

August 14, 2017 at 10:08PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top