কলকাতা, ২১ আগস্ট- থুতনিতে কালশিটে। শনিবার রাতে খুড়তুতো বোনকে হোয়াট্সঅ্যাপে নিজের সেই ছবি পাঠিয়েছিলেন মানিকতলার নন্দিতা সরকার বিশ্বাস। লিখেছিলেন, দ্যাখ, কীভাবে মেরেছে! আরেকটি ছবির সঙ্গে স্বামীর নাম করে লেখা, তন্ময় যেন জানতে না পারে, আমি পিক (ছবি) পাঠাচ্ছি! হোয়াট্সঅ্যাপে সেই ছবি পেয়ে আত্মীয়েরা ফোন করেন নন্দিতাকে! কিন্তু বেজে যায় ফোন। পরে শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁদের জানান, নন্দিতা আত্মঘাতী হয়েছেন। নন্দিতার স্বামী তন্ময় বিশ্বাস, শ্বশুর কানু এবং শাশুড়ি ঋতার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে ওই হোয়াট্সঅ্যাপ মেসেজ এবং মেয়ের উপর অত্যাচারের কিছু অডিও রেকর্ডিং (এবেলার কাছে রয়েছে) মানিকতলা থানায় জমা দিয়েছে নন্দিতার পরিবার। গ্রেফতার করা হয়েছে তন্ময়কে। রবিবার তাকে শিয়ালদহ আদালতে তোলা হলে আগামী ২৮ অগস্ট পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। নন্দিতার শ্বশুর, শাশুড়ি পলাতক। প্রসঙ্গত, সপ্তাহখানেক আগে মধ্যমগ্রামের শ্রাবন্তী মিত্রও দিদিকে হোয়াট্সঅ্যাপে নিজের নিঃসঙ্গতার কথা জানিয়েছিলেন। পরে তিনি আত্মহত্যা করেন। শনিবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ মানিকতলার ২১/৫৫ ক্যানাল ইস্ট রোডের বাড়ি থেকে নন্দিতার দেহ উদ্ধার করে মানিকতলা থানার পুলিশ। ওই বাড়ির দোতলার ঘরে সিলিং থেকে ঝুলছিল গলায় ওড়নার ফাঁস লাগানো নন্দিতার দেহ। তদন্তকারী এক আধিকারিক এদিন বলেন, থানায় হাজির হয়ে তন্ময় নিজেই স্ত্রীয়ের মৃত্যুর খবর জানান। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে এলে বিষয়টি স্পষ্ট হবে। নন্দিতার দেহে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গিয়েছে বলে জানান তিনি। মৃতার মা শেফালি সরকারের অভিযোগ, নন্দিতাকে প্রায়ই মারধর করত ওরা। ও আর অত্যাচার নিতে পারছিল না। তাঁর দাবি, শ্বশুরবাড়ির অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে এর আগেও আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন নন্দিতা। মায়ের কথায়, একবার ওকে জিআরপি আটক করেছিল। ও নাকি রেললাইনে ঝাঁপ দিতে গিয়েছিল। একবার তো বাড়িতেই আত্মহত্যার চেষ্টা করে। আমরা সেই সময় মানিকতলা থানায় মৌখিক অভিযোগও করেছিলাম। নন্দিতার শ্বশুরবাড়ির তরফে পাল্টা দাবি, ছোটখাটো ঝামেলা হলেই আত্মহত্যার চেষ্টা করতেন নন্দিতা। আর শনিবার রাতে গ্রেফতার হওয়ার আগে এবেলার কাছে তন্ময়ের দাবি, কাজ থেকে ফিরে দেখি, মায়ের সঙ্গে ওর ঝগড়া হচ্ছে। আমায় দেখেই বাড়ি থেকে দৌড়ে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। আমি বাধা দিতে গেলে ও সিঁড়িতে প়ড়ে যায়। তখনই থুতনিতে লেগেছিল। কেউ ওকে মারেনি। আগেও আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে ও। ইদানীং এক মনস্তত্ত্ববিদ দেখছিলেন নন্দিতাকে। নন্দিতার পিত্রালয় বাঁকুড়ার পাত্রসায়রে। সেখানেই একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়ে তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয় তন্ময়ের। বিয়ে হয়েছিল বছরখানেক আগে। তন্ময়ের বক্তব্য, গত রবিবার সিঙ্গাপুর থেকে ফিরলাম দুজনে। বুধবার আমার জন্মদিনে নিজে পায়েস রেঁধে খাইয়েছে। সেই পায়েস খাওয়ানোর ছবি দেখিয়ে তাঁর মন্তব্য, জীবনটা এত দ্রুত বদলে যাবে ভাবতে পারিনি।
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2vR2xUg
August 21, 2017 at 09:10PM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন