ঢাকা, ২৩ আগস্ট- ক্যামেরার সামনে আর দাড়াবেন না বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেতা নায়করাজ রাজ্জাক। করবেন না অভিনয়। রাজ্জাক ভক্তরা আর নতুন করে দেখবেন না তাদের প্রিয় অভিনেতার মুখ। চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন বাংলা চলচ্চিত্রের দিকপাল, মুকুটহীন সম্রাট নায়করাজ রাজ্জাক। বুধবার সকাল সোয়া ১০টা ২০ মিনিটে বনানী কবরস্থানে তার দাফন সম্পন্ন হয়। রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে সোমবার সন্ধ্যা ৬টা ১৩ মিনিটে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন রাজ্জাক। সেখান থেকে মঙ্গলবার সকালে তার মরদেহ শেষবারের মতো নিয়ে যাওয়া হয় গুলশানের বাসভবন লক্ষ্মীকুঞ্জ-তে। মরদেহ সেখানে পৌঁছতেই স্বজনদের কান্না-আহাজারিতে ভারি হয়ে ওঠে আশপাশ। সেখান থেকে বেলা ১১টায় মরদেহ নিয়ে আসা হয় তার প্রিয় কর্মস্থল এফডিসিতে। শেষবারের মতো নায়করাজের এফডিসিতে আগমনে শোকার্ত পরিবেশের সৃষ্টি হয়। আগত শিল্পী-কলা-কুশলীরা ক্ষণে ক্ষণে কেঁদে ওঠেন। এফডিসি থেকে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নিয়ে আসা হয় রাজ্জাকের মরদেহ। তার অনেক আগেই সেখানে আসতে শুরু করেন রাজ্জাকের ভক্ত-অনুরাগীরা। হাজার হাজার মানুষ ফুল হাতে অপেক্ষা করতে থাকেন তাদের প্রিয় অভিনেতাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে। সেখানে শ্রদ্ধা জানানো শেষে গুলশানের আজাদ মসজিদে তার দ্বিতীয় নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সেখান থেকে আবারও তার লাশ রাখা হয় হাসপাতালের হিমঘরে। তার মেঝ ছেলে বাপ্পির জন্য অপেক্ষা করা হয়। বুধবার তার ছেলে কানাডা থেকে দেশে ফেরার পর বুধবার সকাল ১০টা ২০ মিনিটে বনানী কবরস্থানে রাজ্জাকের দাফন সম্পন্ন হয়। উল্লেখ্য, রাজ্জাক পশ্চিমবঙ্গের (বর্তমান ভারতের) কলকাতার টালিগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। কলকাতার খানপুর হাইস্কুলে সপ্তম শ্রেণীতে পড়ার সময় স্বরসতী পূজা চলাকালীন সময়ে মঞ্চ নাটকে অভিনয়ের জন্য তার গেম টিচার রবীন্দ্রনাথ চক্রবর্তী তাঁকে বেছে নেন নায়ক অর্থাৎ কেন্দ্রীয় চরিত্রে। শিশু-কিশোরদের নিয়ে লেখা নাটক বিদ্রোহীতে গ্রামীণ কিশোর চরিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়েই নায়ক রাজের অভিনয়ে সম্পৃক্ততা। তিনি ১৯৬৪ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে পাড়ি জমান। প্রথমদিকে রাজ্জাক তৎকালীন পাকিস্তান টেলিভিশনে ঘরোয়া নামের ধারাবাহিক নাটকে অভিনয় করে দর্শকদের কাছে জনপ্রিয় হন। নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে তিনি আব্দুল জব্বার খানের সাথে সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করার সুযোগ পান। সালাউদ্দিন প্রোডাকশন্সের তেরো নাম্বার ফেকু ওস্তাগড় লেন চলচ্চিত্রে ছোট একটি চরিত্রে অভিনয় করে সবার কাছে নিজ মেধার পরিচয় দেন রাজ্জাক। পরবর্তীতে কার বউ, ডাক বাবু, আখেরী স্টেশন-সহ আরও বেশ কটি ছবিতে ছোট ছোট চরিত্রে অভিনয়ও করে ফেলেন। পরে বেহুলা চলচ্চিত্রে তিনি নায়ক হিসেবে ঢালিউডে উপস্থিত হন সদর্পে। তিনি প্রায় ৩০০টি বাংলা ও উর্দু চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। পরিচালনা করেছেন প্রায় ১৬টি চলচ্চিত্র। ১৯৯০ সাল পর্যন্ত বেশ দাপটের সাথেই ঢালিউডে সেরা নায়ক হয়ে অভিনয় করেন রাজ্জাক। এর মধ্য দিয়েই তিনি অর্জন করেন নায়করাজ রাজ্জাক খেতাব। অর্জন করেন একাধিক সম্মাননা। এছাড়াও, রাজ্জাক জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিলের শুভেচ্ছা দূত হিসেবে কাজ করছেন।



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2wD14ln
August 23, 2017 at 05:03PM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top