জলপাইগুড়ি, ০৪ আগস্ট- চিরকুটে আছে হিসাব লেখা, তাই দেখে দেখে ঠিকানাটা শেখা। মানে, যার যা চাহিদা, যে যেমন মূল্য ফেলবে, তার কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে তেমন ছেলে বা মেয়ে। কিশোর-কিশোরী বা শিশু। সেটা কিন্তু পকেটে রাখা চিরকুট মিলিয়েই। মেয়ের মূল্য বেশি, পঁচিশ হাজার। ছেলে হলে দশ হাজার। পাচারের দাম। পাচারকারীর পকেট থেকে পাওয়া হিসাব খাতার সেরকম একটি ছেঁড়া পাতা দেখে রীতিমতো চমকে উঠেছেন জলপাইগুড়ি রোড স্টেশনে কর্তব্যরত আরপিএফ কর্মীরা। ছেলে বা মেয়ে পাচারকারীরা মাঝে মধ্যেই জালে পড়ে। উদ্ধার করা হয় পাচার হতে চলা শিশু-কিশোরদের। কিন্তু তাদের দাম লেখা চিরকুট নিয়ে যে পাচারকারীরা হিসাব মেলায় তা দেখে চক্ষু চড়কগাছ অবস্থা পুলিশের। বুধবার রাতে স্টেশনচত্বর থেকে ওই দুই পাচারকারীকে গ্রেফতার করে আরপিএফ। উদ্ধার করে তিন যুবতী, এক কিশোরী-সহ মোট চারজনকে। উদ্ধার চারজনেরই বাড়ি চা বাগিচা এলাকায়। দুজন করলাভ্যালি আর দুজন ডামডিম চা বাগানের বাসিন্দা। রোড স্টেশনের আরপিএফ থানার দায়িত্বে থাকা আদিত্য কুমার মিনা জানান, অনেক রাতে স্টেশন চত্বরে এক কিশোরী এবং তিন যুবতীকে উদ্দেশ্যহীনভাবে ঘুরতে দেখে সন্দেহ হয় তাদের। দূরে দাঁড়িয়ে থাকা দুই যুবককে এদের উপর নজর রাখতে দেখে সন্দেহ আরও বাড়ে। সকলকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই জানা যায় দিল্লি যাবে বলে ব্রহ্মপুত্র মেলের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে ছিল তারা। কি কারনে দিল্লি যাত্রা? প্রশ্ন করতে মেয়েরা জানায়, দিল্লিতে ভালো মাইনের কাজ দেবে বলে তাদের নিয়ে এসেছেন এই দুই যুবক। কি কাজ? কোথায় কাজ? সেই প্রশ্নের উওর দিতে পারেনি দুই যুবক। তল্লাশি চালাতেই এক যুবকের পকেট থেকে পাওয়া যায় একটি কাগজ। তাতে হিন্দিতে লেখা, এক লেড়কি ২৫ হাজার, এক লেড়কা ১০ হাজার। আদিত্য মিনা জানান, এ থেকে পরিস্কার চা বাগানের ওই চার মেয়েকে বিক্রি করে দেওয়ার উদ্দেশ্যেই নিয়ে যাচ্ছিল এরা। ধৃত দুই যুবকের মধ্যে এক জন বাবলু সাহু। বাড়ি বিহারের মধুবনি এলাকায়। দ্বিতীয় জন ডুয়ার্সের ডামডিম চা বাগানের বাসিন্দা। নাম চন্দ্র কুমার। এই চন্দ্র কুমারকে কাজে লাগিয়ে চা বাগান থেকে কাজের প্রলোভন দিয়ে মেয়ে যোগার করতো বাবলু। নিয়ে গিয়ে অন্য রাজ্যে এদের বিক্রি করেদিত। গত এপ্রিল মাসেও এভাবেই কাজের প্রলোভন দিয়ে এখান থেকে ছেলে মেয়েদের নিয়ে গিয়ে অন্য রাজ্যে পাচার করেছে এরা। জেরায় সেকথা স্বীকারও করেছে ধৃত দুজন। উদ্ধার চারজনের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করার পাশাপাশি ধৃত দুই পাচারকারীকে বৃহস্পতিবার ময়নাগুড়ির জিআরপি থানার পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে আরপিএফ।



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2vz8KWi
August 05, 2017 at 01:27AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top