কুয়েত সিটি, ০২ আগস্ট-কয়েক বছর আগেও এ দেশের অধিবাসীদের (কুয়েতি) প্রধান খাবার ছিল রুটি। দেখতে অনেকটা ঢাকাইয়া তন্দুরের মতো রুটির সঙ্গে জয়তুনের তেল মিশিয়ে খাওয়াই ছিল তাদের প্রধান খাবার। কিন্তু আজ তাদের সেই ঐতিহ্যে অনেকটাই পরিবর্তন এসেছে। ঐতিহ্যবাহী রুটির পাশাপাশি তাদের খাবার তালিকায় পশ্চিমা ছাড়াও ভারতীয় খাবারের কদর বেড়েছে ব্যাপকভাবে। এ ছাড়া ভাতও খান তারা। এখন প্রায় ভাত না খেলে তাদের চলেই না। কুয়েতিদের কথা থাক। এখানে যারা প্রবাসী বাংলাদেশি আছেন তাদের কথা বলি। মাছে ভাতে বাঙালি এ কথাটির যথার্থতা আপনি তখনই বুঝবেন, যখন এ দুটির কোনো একটা মেলাতে আপনাকে বেগ পেতে হবে। যেহেতু কুয়েতিরাও ইদানীং ভাত খাওয়া শুরু করেছে তাই খাদ্যসামগ্রী বিক্রির যেকোনো দোকানে গেলেই চাল পাওয়া যায়। এই চাল ভারত বা পাকিস্তান থেকে আমদানি করা। কিন্তু মাছ? মাছও পাবেন, একেবারে নদীর মাছ! তবে দাম পড়বে বাংলাদেশের তুলনায় অনেক বেশি। দোকানিরা মাছগুলো বাংলাদেশের বলে বিক্রি করেন। তাহলে তো আর কোনো কথাই থাকে না। খাঁটি বাঙালির ঐতিহ্য তাহলে প্রবাসে এসেও ধরে রাখা গেল! তবে সারা দিন খাটুনি শেষে রুমে এসে ভাতের সঙ্গে খানিকটা মাছ লোকমা তুলে মুখে দিতেই মনটা খারাপ হয়ে যাবে। মাছ এমন লাগছে কেন? একেবারে পানসে। স্বাদহীন। কেউ হয়তো বলতেই পারেন, আরে ভাই, এ রকম তো হতেই পারে। দীর্ঘদিন ধরে মাছগুলো হয়তো ফ্রিজে ছিল। তাই স্বাদ কিছুটা নষ্ট হয়ে গেছে আর কি! কিন্তু না। বাংলাদেশের মিঠা পানির মাছ ভেবে আপনি যা কিনে এনেছেন তা কিন্তু মোটেও দেশীয় মাছ নয়। যদিও দোকানদার বিক্রি করার সময় বলেছিলেনএকেবারে দেশি রুই ভাই...মেঘনার, আমরা নিজে ইমপোর্ট করে আনছি। কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার, প্যাকেটজাত মাছগুলোর গায়ে লেখা, দেশি মিঠা পানির মাছ, প্রোডাক্ট অব মিয়ানমার! সত্যিই মনটা খারাপ হয়ে যায় তখন। যখন দেখি, আমাদের দেশের ব্যবসায়ীদের ব্যর্থতার সুযোগ নিয়ে অন্য একটি দেশ বাংলাদেশের নাম ভাঙিয়ে বিপুল পরিমাণ মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা হাতিয়ে নেওয়া ছাড়াও নিম্নমানের পণ্য সরবরাহ করে আমাদের দেশের ভাবমূর্তি কীভাবেই না নষ্ট করছে! কুয়েতের বর্তমান জনসংখ্যা প্রায় ৪২ লাখ। এর মধ্যে প্রায় ১৩ লাখ দেশটির স্থায়ী অধিবাসী বা কুয়েতি। অবশিষ্ট ২৯ লাখই প্রবাসী। এই বিপুলসংখ্যক প্রবাসীদের মধ্যে কয়েক লাখ বাংলাদেশিও আছেন। বিপুলসংখ্যক এই প্রবাসী বাংলাদেশিরা প্রতিদিনই ধোঁকার বশবর্তী হয়ে এসব মাছ কিনছেন ও খাচ্ছেন। এসব মাছের স্বাদ দেশীয় মিঠাপানি মাছের ধারে কাছেও না। অথচ এই দেশটিতে রয়েছে বাংলাদেশি মাছের বিশাল এক সম্ভাবনাময় বাজার। বাংলাদেশি ব্যবসায়ীরা তথা সরকার যদি মধ্যপ্রাচ্যের এসব দেশে দেশীয় মাছ রপ্তানির ব্যবস্থা করতে পারেন, তাহলে আমাদের দেশের মাছ চাষে আরও বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে। পাশাপাশি অর্জিত হবে বিপুল পরিমাণ মূল্যবান বৈদেশিক মুদ্রা। *খান লোকনাথী: সোবহান শিল্প এলাকা, কুয়েত। এমএ/ ০৯:০২/ ০২ আগস্ট
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2f8Oe7I
August 03, 2017 at 03:02AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন