দিসপুর, ০৩ আগস্ট- দুর্গতদের সাহায্য নয়, নেতাদের প্রকৃত উদ্দেশ্য এই পরিস্থিতিতেও ভোট কুড়ানো। এমন অভিযোগই তুলছেন অসমের বানভাসি মানুষরা। অসমে একে একে নৌকো ভাসিয়েছে হাত থেকে পদ্ম। বিস্তর সমালোচনার পর মুখ বাঁচাতে সদ্য অসমে সফরে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্যাকেজ ঘোষণা করে দুর্গতদের পাশে আছি আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি। মোদি গেলেন আর রাহুল যাবেন না এমনটা হতে পারে? ভয়, বুঝি বা হাতছাড়া হয় ভোট ব্যাঙ্ক। তাই বৃহস্পতিবার বন্যাপীড়িতদের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে অসমে হাজির রাহুল গান্ধী। এদিন সকালে অসমের লখিমপুরে পৌঁছান রাহুল গান্ধী। সেখান থেকে স্থানীয় কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে ওই জেলার বন্যা কবলিত এলাকাগুলি পরিদর্শন করেন কংগ্রেসের উপ-সভাপতি। প্রসঙ্গত, দুদিন আগেই অসম সফরে এসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দুর্গতদের সাহায্যে অসম-সহ উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলির জন্য ২ হাজার কোটি টাকার আর্থিক সাহায্যে ঘোষণা করেন তিনি। তবে দুর্গতদের পাশে দাঁড়াতে দেরি করায় সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে তাঁকে। অভিযোগ ওঠে, গুজরাটে আক্রান্তদের সাহায্য করতে তৎপরতা দেখালেও অসমের বেলায় সেই উদ্যোগ দেখা যায়নি। গুজরাটের জন্য ৫০০ কোটি টাকার বিশেষ আর্থিক প্যাকেজের বন্দোবস্ত করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। আর এতেই ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন অসমের মানুষ। অভিযোগ উঠেছিল, উত্তর-পূর্ব বলেই বিমাতাসুলভ আচরণ করছে কেন্দ্র। অসমের মানুষের বক্তব্য, মোদি তো শুধু গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী নন, দেশের প্রধানমন্ত্রী। তাই সব রাজ্যের দিকে সমান নজর দেওয়া উচিত। বন্যাত্রাণে বিতরণ নিয়ে এভাবেই নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে তোপ দেগেছিলেন মায়াবতী, রাহুলরা। ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন অসমের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈও। উল্লেখ্য, অসমের ৩২টি জেলার মধ্যে এখন ২৯টিই বন্যা কবলিত। প্রভাবিত কয়েক লক্ষ মানুষ। এখনও পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ৭৭ জন। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ২০০০ কোটি টাকারও বেশি। তবে সব থেকে বেশি প্রভাবিত হয়েছে চিরাং, বঙাইগাঁও, শোণিতপুর, মরিগাঁও, মাজুলি, জোরহাট, লখিমপুর, গোলাঘাট, কাছার, ধেমাজি, বিশ্বনাথ, করিমগঞ্জ ও শিবসাগর জেলা। তবে সব থেকে বেশি দুরবস্থা বরাক উপত্যকার করিমগঞ্জ জেলার। ওই জেলায় প্রভাবিত প্রায় ১ লক্ষ ৬০ হাজার মানুষ। তারপরই রয়েছে ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার লখিমপুর। এছাড়াও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ৮ হাজার হেক্টর কৃষিজমির ফসল। জল থেকে বাঁচতে এবার লোকালয়ে চলে আসছে বন্য জন্তুরা। তৈরি হয়েছে নতুন সমস্যা। বাড়ছে চোরাশিকারিদের সক্রিয়তা। লোকালয়ে চলে আসার ফলে বন্য পশুদের শিকার সহজ হচ্ছে বলে জানাচ্ছে বনদপ্তর। কাজিরাঙ্গা অভয়ারণ্যের ডিরেক্টর জানাচ্ছেন ইতিমধ্যেই মারা গিয়েছে তিনটি এক শৃঙ্গ গন্ডার, ৪৫টি হরিণ, বেশ কয়েকটি বুনো মোষ। যাই হোক না কেন, অনেকে বলছেন বানভাসিদের সাহায্যের থেকেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে রাজনৈতিক তরজা। আর এই মাতামাতির মধ্যেই বানের জলে সর্বস্ব হারিয়ে চোখের জলে দিন গুনছেন বাস্তুহারা মানুষরা।
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2vldspV
August 03, 2017 at 11:04PM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন