ঢাকা, ০৯ আগস্ট- ১৯৯০-এর দশকের অন্যতম শ্রেষ্ঠ নায়ক সালমান শাহ। তাঁর প্রকৃত নাম শাহরিয়ার চৌধুরী ইমন। টেলিভিশন নাটক দিয়ে তার অভিনয় জীবন শুরু হলেও পরে তিনি চলচ্চিত্রে একজন জননন্দিত শিল্পী হয়ে উঠেন। ১৯৯৩ সালে তার অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত কেয়ামত থেকে কেয়ামত মুক্তি পায়। একই ছবিতে নায়িকা মৌসুমী ও গায়ক আগুনের অভিষেক হয়। জনপ্রিয় এই নায়ক নব্বইয়ের দশকের বাংলাদেশে সাড়া জাগানো অনেক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন। তিনি সর্বমোট ২৭টি চলচ্চিত্র অভিনয় করেন এবং সবকয়টিই ছিল ব্যবসাসফল। তিনি ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর অকালে রহস্যজনক ভাবে মৃত্যুবরণ করেন। সালমান শাহ এর মৃত্যুর পর তার মা নীলা চৌধুরী ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলাও করেছিলেন। এতে সামিরা ছাড়াও আসামি ছিলেন চলচ্চিত্র প্রযোজক আজিজ মোহাম্মদ । রাবেয়া সুলতানা রুবি ছিলেন ওই মামলার ৭ নম্বর আসামি। রুবি সালমানের মামী শাশুড়ি। মৃত্যুর ২১ বছর পর ফের অভিনেতা সালমান শাহের মৃত্যু নিয়ে শুরু হয়েছে চাঞ্চল্য। সোমবার (৭ আগস্ট) হঠাৎ আলোচিত এ মামলার অন্যতম আসামি রুবির ভিডিও বার্তার কারণে বিষয়টি হয়ে ওঠে টক অব দ্য কান্ট্রি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রুবির ভিডিও বার্তাটি ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি সবার নজরে আসে। সেখানে দাবি করা হয় সালমান শাহকে খুন করা হয়েছে। এর কিছু সময় পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে রুবির বক্তব্য সমর্থন করে স্ট্যাটাস দেন সালমান শাহর মা নীলা চৌধুরী। অন্য দিকে রুবিকে মানসিক রোগী বলেন, সালমান শাহের শ্বশুর (শফিকুল হক হীরা)। শফিকুল হক হীরা বলেন, ভিডিও প্রকাশকারী রুবিকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত বলে আমি মনে করি। ভিডিওটি আমিও দেখেছি। এটা খুবই হাস্যকর লেগেছে আমার কাছে। আমি জেনেছি রুবি তার স্বামীর সাথে নেই। তাদের ডিভোর্স হয়েছে। শেষ বয়সে অর্থকড়ির ঝামেলায় আছেন হয়তো। কারণ ডিভোর্সের সময় স্বামীর কাছ থেকে টাকা নিতে পারেননি, তার ও ছেলের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে পারেননি। এজন্য মাথা হয়তো বিগড়ে গেছে। কিন্তু তার দায় তো দেশ ও জাতি নেবে না। তিনি বলেন, রুবি নিঃস্ব অবস্থায় আছেন। তাই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে যা খুশি তাই করছেন। হয়তো সালমানের মা তাকে টাকার লোভ দেখিয়ে থাকতে পারেন। সেজন্যই একটা পুরনো ইস্যুকে নতুন করে রঙ মাখিয়ে হাজির করেছেন। এসব বিষয় নিয়ে লন্ডনে বসবাসরত সালমান শাহের মা নীলা চৌধুরীর বলেন, কেউ বিশ্বাস করবে সামিরার বাবা আমার ছেলেকে প্রতি মাসে ৬০-৭০ হাজার টাকা দিতেন? একটা মানুষ কতটা নিচু হলে এমন কথা বলতে পারেন? নীলা চৌধুরী বলেন, রুবির স্বীকারোক্তির পর হীরার বক্তব্য প্রমাণ করে তিনি এটিকে ভিন্ন দিকে নিয়ে যেতে চান। আমি দেশের সবার কাছে অনুরোধ করব সালমান হত্যা মামলার সব আসামিকে আইনের আওতায় আনা হোক। তিনি বলেন, রুবি সালমান হত্যা মামলার আসামি, এত দিন পরে এসে তিনি নিজেই খুনের কথা স্বীকার করেছেন। কিন্তু গেলো একমাস আগেও এই রুবি আমাকে গালাগাল দিয়েছেন। আজ তিনি নিজেই কিভাবে সালমানকে হত্যা করা হয়েছে তা বলেছেন। কারা এর সাথে জড়িত সব স্বীকার করেছেন। এটিকে যেন প্রমাণ হিসেবে গ্রহণ করা হয়। সালমান শাহের মা বলেন, সত্য কখনো চাপা থাকে না। ২১ বছর পর আসামি নিজেই স্বীকার করেছেন সালমান খুন হয়েছে। তিনি এ মামলার আসামিদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান। একই সাথে সালমান হত্যায় যে অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে সেটিকে হত্যা মামলা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করারও দাবি জানান। এ বিষয়ে গতকাল মঙ্গলবার সালমান শাহ খুনের মামলার আইনজীবী ফারুক আহমেদ বলেন, আমরা আদালতের মাধ্যমে ইমিগ্রেশনে সতর্কতা জারি করার ব্যবস্থা করব। যাতে আসামিরা কেউ দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে না পারেন। তিনি বলেন, সালমান শাহ হত্যা মামলার অন্যতম আসামি রুবি। এতদিন পর তার এই স্বীকারোক্তি আলোচিত এ মামলার শক্ত একটি প্রমাণ। ফলে আসামিরা এখন দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে পারেন। তাই সীমান্ত ও বিমানবন্দরগুলোতে সতর্কতা জারির বিষয়ে আদালতের কাছে আদেশ চাইব। এই আইনজীবী বলেন, রুবির ভিডিও বার্তাটি আমরা এরই মধ্যে সংশ্লিষ্ট সবার নজরে এনেছি। মঙ্গলবার(৮ আগস্ট) দেশের সব গণমাধ্যমে এ বিষয়ে সংবাদ প্রচার হয়েছে। দুই-এক দিনের মধ্যে আমরা পত্রিকার কাটিংসহ বিষয়টি আদালতের নজরে আনব। তদন্ত কর্মকর্তা যেন এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করেন সেটিরও ব্যবস্থা করা হবে। এ দিকে (৮ আগস্ট) মঙ্গলবার ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে মানববন্ধন করেছেন সালমান ভক্তরা।
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2uF9bsU
August 09, 2017 at 08:57PM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন