ঢাকা, ২৫ আগষ্ট- গত ২১ আগস্ট না ফেরার দেশে চলে গেছেন বাংলাদেশের কিংবদন্তি নায়করাজ রাজ্জাক। সদ্যপ্রয়াত এই মহাতারকাকে নিয়ে তার কাছের মানুষদের রয়েছে নানা গল্প, নানা স্মৃতি। অবিভক্ত ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় ১৯৪২ সালের ২৩ জানুয়ারি রাজ্জাকের জন্ম। টালিগঞ্জের খানপুর হাইস্কুলে পড়ার সময় নাটকের মধ্যে দিয়ে অভিনয় শুরু। কলেজে পড়ার সময় রতন লাল বাঙালি নামে একটি সিনেমার অভিনয় করেন তিনি। অভিনেতা হওয়ার মানসে ১৯৬১ সালে কলকাতা থেকে মুম্বাইয়ে পাড়ি জমালেও সেখানে সফল না হওয়ায় টালিগঞ্জে ফেরেন রাজ্জাক। কিন্তু কলকাতায়ও পরিস্থিতি অনুকূল না হওয়ায় ১৯৬৪ সালে ঢাকায় চলে আসেন। ১৯৬৪ সালে বর্তমান বাংলাদেশ টেলিভিশনের যাত্রা শুরু হলে সেখানে অভিনয়ের সুযোগ নেন রাজ্জাক। তখন ধারাবাহিক নাটক ঘরোয়ায় অভিনয়ের মাধ্যমে দর্শকদের কাছে পরিচিত হয়ে ওঠেন। কিন্তু তার লক্ষ্য ছিল চলচ্চিত্রে অভিনয় করা। আবদুল জব্বার খানের মাধ্যমে চলচ্চিত্রে কাজ করার সুযোগ পান তিনি তবে নায়ক হিসেবে নয়। সহকারী পরিচালক হিসেবে। সেই সময়ের সংগ্রামের কথা রাজ্জাক নিজেই বলে গেছেন এভাবে- আমি আমার জীবনের অতীত ভুলি না। আমি এই শহরে রিফিউজি হয়ে এসেছি। স্ট্রাগল করেছি, না খেয়ে থেকেছি। যার জন্য পয়সার প্রতি আমার লোভ কোনোদিন আসেনি। অভিনয়ের জন্য রাজ্জাক পেয়েছেন রাষ্ট্রীয় পুরস্কারসহ অনেক সম্মাননা। ২০১৩ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের আসরে আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয় তাকে। ২০১৫ সালে তিনি পান রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ সম্মান স্বাধীনতা পুরস্কার। বদনাম, সৎ ভাই, চাপা ডাঙ্গার বউসহ প্রায় ১৬টি চলচ্চিত্র পরিচালনা করেছেন রাজ্জাক। তার মালিকানার রাজলক্ষ্মী প্রোডাকশন থেকে বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রও নির্মিত হয়। অভিনয় জীবনের বাইরে জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিলের শুভেচ্ছা দূত হিসেবেও কাজ করেছেন নায়করাজ রাজ্জাক। তবে নায়করাজ রাজ্জাক আর নেই। আর কখনোই গুলশানের লক্ষ্মীকুঞ্জে তাকে দেখা যাবে না। তবে লক্ষ্মীকুঞ্জের আনাচে কানাচে রেখে গেছেন তার ছোঁয়া। করিডোর থেকে থাকার ঘর-এখন হাহাকার করছে নায়করাজের স্মৃতিচিহ্ন নিয়ে। আর তার স্মৃতিচিহ্নগুলো ধরে রাখতে নায়করাজের শোবার ঘরটি ব্যবহার না করার উদ্যোগ নিয়েছে তার পরিবার। নায়করাজের শোবার ঘরটি সংরক্ষণ করা হবে বলে জানিয়েছেন তার ছোট ছেলে চিত্রনায়ক ও নির্মাতা সম্রাট। নায়করাজের স্মৃতিচিহ্নগুলো নিয়ে জাদুঘর করার কথা ভাবছেন কিনা জানতে চাইলে সম্রাট বলেন, তেমন কোনো ভাবনা এখনো ভাবিনি। বাবা তো মাত্র প্রয়াত হলেন। তবে তার শোবার ঘরটি আমরা সংরক্ষণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ওই ঘরে বাবা আর মা থাকতেন। বাবা নেই, মাকে আর ওই ঘরে একা রাখতে চাই না। মাকে আমাদের ঘরে নিয়ে যাব। আর বাবার স্মৃতি ধরে রাখতে তার ঘরটি সংরক্ষণ করব। তবে এখনই নয়। আরও কিছুদিন যাক, তারপর। গত ২১ আগস্ট সন্ধ্যায় না ফেরার দেশে পাড়ি জমান নায়করাজ রাজ্জাক। ২৩ আগস্ট বনানী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2wuyF15
August 26, 2017 at 12:43AM
এতে সদস্যতা:
মন্তব্যগুলি পোস্ট করুন (Atom)
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন