নিউ ইয়র্ক, ১৯ সেপ্টেম্বর- জাতিসংঘের চলতি ৭২তম অধিবেশনে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতা হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্থানীয় সময় রোববার বিকেল ৪টায় নিউইয়র্ক জেএফকে এয়ারপোর্টে বিপুল অভ্যর্থনা জানাবে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগে ও সহযোগী সংগঠন। এজন্যে এয়ারপোর্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতিও নিয়ে রাখা হয়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬ টায় নিউইয়র্কে টাইমস স্কোয়ারের মেরিয়ট মারকুইস হোটেলের বলরুমে ৫৫ ফুট দীর্ঘ নৌকার ওপর তৈরি মঞ্চে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রীকে ঐতিহাসিক গণসংবর্ধনা দেওয়া হবে। বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য উপস্থাপনের সময় বাইরে শান্তি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে এসংক্রান্ত সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান স্থানীয় সময় শনিবার জ্যাকসন হাইটসে পালকি পার্টি সেন্টারে এক জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান। জাতিসংঘের ৭২তম সাধারণ অধিবেশনে যোগদানে যুক্তরাষ্ট্রে আগমন উপলক্ষে প্রবাসী নাগরিক সংবর্ধনাসহ প্রধানমন্ত্রীর সফর কর্মসূচি অবহিত করতে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। সংবাদ সম্মেলনে ড. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সফরকালে বিক্ষোভ প্রদর্শনের নামে যদি কেউ অশালীন অসম্মানজনক আচরণ করতে চায়, তাহলে প্রচলিত আইন অনুযায়ী এসবের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ পদক্ষেপ নেবে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। ড. সিদ্দিকুর রহমান জানান, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের অবিস্মরণীয় গান পরিবেশনের মাধ্যমে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান শুরু হবে। গান পরিবেশন করবেন কণ্ঠযোদ্ধা রথীন্দ্রনাথ রায়, ফকির আলমগীর ও শহীদ হাসান। মঞ্চের পেছনের স্ক্রিনে ৬ দফার প্রতীক রাখা হবে। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনার নের্তৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়নের একটি তথ্য-চিত্র প্রদর্শিত হবে। বিএনপি-জামাতের ধ্বংসযজ্ঞ থেকে রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নের্তৃত্বে সমৃদ্ধির পথে বাংলাদেশ শীর্ষক ১৮ থেকে ২০ মিনিটের এ ডক্যুমেন্টারিটি তৈরী হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সার্বিক নির্দেশনায়। অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আগামী জাতীয় নির্বাচনের প্রচার ও প্রবাসী বাঙালীদের উদ্বুদ্ধ করে দেশে নির্বাচনী কর্মকান্ডে অংশগ্রহণের একটি আবহ তৈরী করা হবে। যা অন্যান্য বারের তুলনায় এক ভিন্নমাত্রা যোগ করবে। নাগরিক সংবর্ধনা সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী তনয় ও আইটি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় কীনোট স্পীকারের বক্তব্য দেবেন। সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি আকতার হোসেন, মাহাবুবুর রহমান, সৈয়দ বসারত আলী. আবুল কাশেম, সামসুদ্দিন আজাদ ও লুৎফুল করিম, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদ, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক নিজাম চৌধুরী, যুগ্ম সম্পাদক আইরিন পারভিন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফারুক আহমেদ, মহিউদ্দিন দেওয়ান, আব্দুল হাসিব মামুন, আব্দুর রহিম বাদশা ও চন্দন দত্ত, দপ্তর সম্পাদক প্রকৌ: মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী, উপদেষ্টা ডা. মাসুদুল হাসান, কোষাধ্যক্ষ আবুল মনসুর খান, প্রচার সম্পাদক হাজি এনাম (দুলাল মিয়া), মুক্তিযোদ্ধা বিষযক সম্পাদক মোজাহিদুল ইসলাম চৌধুরী, জনসংযোগ সম্পাদক কাজী কয়েস, ত্রাণ ও পূনর্বাসন সম্পাদক জাহাঙ্গির হোসেন, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক আশরাফুজ্জামান, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক এম এ করিম জাহাঙ্গির, আইন বিষয়ক সম্পাদক শাহ বখতিয়ার, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ড. আবদুল বাতেন এমডি, আন্তর্জজাতিক বিষয়ক সম্পাদক দেওয়ান বজলু, মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক মিসবাহ আহমেদ, যুব বিষয়ক সম্পাদক মাহাবুবুর রহমান টুকু, শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক ফরিদ আলম, উপ দপ্তর সম্পাদক আবদুল মালেক, জহিরুল ইসলাম, তৈয়বুর রহমান টনি, নিউইয়র্ক স্টেট আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি একেএম আলমগীর, রফিকুল ইসলাম, শেখ আতিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক শাহীন আজমল, উপদেষ্টা কফিল চৌধুরী, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের কার্যকরী সদস্য হিন্দাল কাদির বাপ্পা, আশরাফ মাসুক, সামছুল আবেদীন, খেরশেদ খন্দকার, শরীফ কামরুল আলম হীরা, আবদুল হামিদ, নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকারিয়া চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ চৌধুরী, সেচ্ছাসেবক লীগের সহ আন্তর্জাতিক সম্পাদক শাখাওয়াত বিশ্বাস, যুক্তরাষ্ট্র স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নুরুজ্জামান সর্দার, যুক্তরাষ্ট্র মহিলা লীগের সভাপতি শাহনাজ মমতাজ, যুক্তরাষ্ট্র যুবলীগের আহবায়ক তারিকুল হায়দার চৌধুরী, সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক শেখ জামাল হোসাইন, যুগ্ম আহবায়ক মো. সেবুল মিয়া, হুমায়ুন চৌধুরী প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ, মহিলা লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, যুবলীগ, শ্রমিক লীগ ও ছাত্রলীগের নের্তৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে ড. সিদ্দিকুর রহমান বলেন, এবারের জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭২তম অধিবেশন একটি বিশেষ তাৎপর্য্যপূর্ণ। কেননা সারা বিশ্বের দৃষ্টি বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের জননন্দিত নেতা মাদার অব হিউম্যনিটি হিসেবে অভিহিত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ঘিরে। তিনি বলেন, যখন পার্শ্ববর্তী দেশ মায়ানমারের আরাকান ও রাখাইন প্রদেশে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের ইতিহাসের নির্মম ও বর্বর হত্যাকান্ড, ধর্ষন, বাড়ী-ঘরে অগ্নিসংযোগসহ দেশত্যাগে বাধ্য করা হচ্ছে। সে সময়ে বাংলাদেশ মাত্র দুসপ্তাহে চার লক্ষাধিক শরনার্থীকে আশ্রয় প্রদান, খাদ্য, বস্ত্র ও চিকিৎসা সেবা দিয়ে বিশ্বে অনন্য নজীর স্থাপন করেছেন। হাজার হাজার নারী, পুরুষ, শিশু ও বৃদ্ধ- বৃদ্ধা নিরিহ নাগরিক জীবন বাঁচাতে নদী ও সমুদ্রপথে বাংলাদেশের বর্ডার পার হয়ে মানবেতরভাবে আশ্রয় নিচ্ছে। ১৬ কোটি মানুষের ক্ষুদ্র দেশ বাংলাদেশে প্রায় ৭ লক্ষ শরনার্থীর আশ্রয় দিয়ে বিশ্ববাসীর কাছে এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। সংবাদ সম্মেলনে জানান হয়, জাতিসংঘের এবারের সাধারণ পরিষদে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ব নের্তৃবৃন্দের সামনে মিয়ানমারের তথাকথিত নোবেল শান্তি পদকপ্রাপ্ত নেতা অং সাং সূকী-র মানবতা বিরোধী অপরাধ শাস্তি দাবী এবং সংখ্যালঘু ধর্মীয় জাতি গোষ্ঠি নিশ্চিহ্ন করায় এর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণে জোরাল বক্তব্য তুলে ধরবেন বলে আশা করা যাচ্ছে। সংবাদ সম্মেলনে তিনি সরকারের নানামুখি উন্নয়নের কর্মকান্ড তুলে ধরে বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা তার তিন টার্ম শাসন কালে গণতান্ত্রিক সুশাসন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, অর্থনীতি, তথ্যপ্রযুক্তি, যোগাযোগ ব্যবস্থায় বিস্ময়কর উন্নতি বাংলাদেশকে আজ একটি নিন্মমধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তরীত করেছে। যা আগামী ২০২১ এ মধ্যম আয়ের দেশ ও ২০৪১ এ উন্নত দেশের তালিকায় অন্তর্ভূক্ত হবে বলে বিশ্বসূচকে বাংলাদেশ একটি সম্ভাবনার দেশের তালিকায় যুক্ত হয়েছে। ড. সিদ্দিক বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার সন্ত্রাস দমনে জিরো টলারেন্স নীতি এবং বাংলাদেশের ভূখন্ডের এক ইঞ্চি জমিও কোন সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ব্যবহার করতে না দেয়ার ঘোষনা আঞ্চলিক সন্ত্রাসবাদসহ অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাস নির্মূলে ব্যাপক সাফল্য অর্জিত হয়েছে। বিশ্বের পরাশক্তিসমূহ সহ উন্নত দেশগুলোর সাথে সফল কূটনৈতিক সম্পর্কসৃষ্টি ও বাংলাদেশে বিনিয়োগে বড় বড় আন্তর্জাতিক কোম্পানীর প্রধান আকর্ষণীয় কেন্দ্রবিন্দু এখন বাংলাদেশ। লক্ষ লক্ষ কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও যুব সমাজকে এন্টারপ্রেনিউর হিসেবে আত্মপ্রকাশ আজ বাংলাদেশকে একটা ভিন্ন মাত্রা দিয়েছে। যার কৃতিত্ব প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের উদ্ভাবনী ডিজিটাল প্রকল্পসমূহ। সংবাদ সম্মেলনে ড. সিদ্দিকুর রহমান আরও জানান, আগামী শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী নিউইয়র্ক থেকে ভার্জিনিয়ায় যাবেন। এদিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ব্যাপক অভ্যর্থনা জানানো হবে। আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর ওয়াশিংটন ডিসিতে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের এক কর্মীসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মিলিত হবেন বলে আশা পোষন করছি। সে সময় সাংগঠনিক ও আগামী জাতীয় নির্বাচনে প্রবাস থেকে কীভাবে সহায়তা দিতে পারি, তা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সাথে খোলামেলা আলোচনার চেষ্টা করবো। নিউইয়র্ক ও ওয়াশিংটন ডিসির এসকল অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্য থেকে দলে দলে নেতা কর্মীরা যোগদান করে অন্যান্যবারের ন্যায় সফল ও আনন্দঘন করে তুলবেন। এ উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বিভিন্ন প্রকাশনা বিতরণ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যুক্তরাষ্ট্র সফর সফল করতে মিডিয়ার সার্বিক সহযোগীতা কামনা করেন তিনি। আর/১৭:১৪/১৯ সেপ্টেম্বর



from First Bangla interactive newspaper - Deshe Bideshe http://ift.tt/2xuA7Rd
September 20, 2017 at 12:48AM

0 মন্তব্য(গুলি):

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

 
Top