মো. আবুল কাশেম, বিশ্বনাথ :: পরিবারের বড় মেয়ে রিমা’র (ছদ্মনাম) বয়স যখন চৌদ্দ, তখন তার প্রতি লোলুপ দৃষ্টি পড়ে আপন চাচাতো ভাই সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার দৌলতপুর ইউপি সদস্য ইরন মিয়ার। রিমার পিতা প্রবাসে থাকার সুবাধে অভিভাবকের ছলে তাদের ঘরে অবাধে যাতায়াত শুরু করে সে। সপ্তম শ্রেণীতে পড়–য়া রিমাকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে গড়ে তুলে শারীরিক সম্পর্ক। এভাবেই টানা নয় বছর সম্পর্ক চলে তাদের। এর মধ্যে একবার গর্ভবতীও হয়ে পড়ে রিমা। ইরনের চাপে গর্ভপাত করে সে।
ঘটনাটি জানাজানি হওয়ায় আত্মহত্যার চেষ্টা করেও ভাগ্যক্রমে বেঁচে যাওয়া রিমা ইরনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে থানা পুলিশের দারস্থ হয়। পুলিশ উল্টো তাকে আটকের ভয় দেখিয়ে ফিরিয়ে দেয়।
সর্বশেষ, গতকাল মঙ্গলবার (১৯সেপ্টেম্বর) বিয়ের দাবীতে অনশন করেও ফল না পেয়ে ইরনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ নিয়ে ফের থানার দারস্থ হয়েছে সে।
সরজমিন বুধবার (২০সেপ্টেম্বর) দুপুরে ইউপি সদস্য ইরনের গ্রামের বাড়ী দৌলতপুরের পূর্বনোয়াগাঁও গ্রামে গেলে তাদের ঘরের মূল দরজা বন্ধ পাওয়া যায়। তবে, ভেতরে থাকা তার ভাবীর সাথে কথা হলে তিনি জানান, তার দেবর বাড়ীতে নেই। ইরনদের পাশের ঘরেই রিমাদের বসবাস থাকায় কথা হয় তার (রিমা) মা রিনা বেগমের সাথে। তিনি জানান, রিমার বাবা দীর্ঘদিন প্রবাসে থাকার সুবাধে বিদেশ থেকে পাঠানো টাকা-পয়সা তার চাচাতো ভাই, ইউপি সদস্য ইরনের মাধ্যমে আমাদের কাছে আসত। এ জন্যে আমার ঘরে প্রায়ই তার আসা যাওয়া ছিল। এই সুযোগে আমার বড় মেয়ে রিমার সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলে সে (ইরন)। প্রথমে ঘটনাটি আঁচ করতে পারিনি। যখন আঁচ করতে পারি, তখন সে (রিমা) ৫মাসের অন্তঃসত্ত্বা। বর্তমানে গ্রামের আরেকটি মেয়ের সাথে সে (ইরন) শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তুলেছে।
এ প্রতিবেদকের সাথে কথা হয় রিমা’র। সে জানায়, ২০০৯ সালে সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী থাকাবস্থায় আমাদের ঘরে যাওয়া আসার সুবাধে নানা প্রলোভন দেখিয়ে চাচাতো ভাই ইরন প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলেন। তার কথামত আমি লেখাপড়াও বন্ধ করে দিই। বিয়ের প্রতিজ্ঞা করাতে এক সময় সেটা শারীরিক সম্পর্কে গড়ায়। গত বছরের শেষের দিকে আমি অন্তঃস্বত্ত্বা হয়ে পড়ি। ২০১৭ সালের ২২ শে মার্চ পাঁচ মাসের অন্তঃস্বত্ত্বা থাকাবস্থায় তার চাপে আমি গর্ভপাত করি। এরপর তিনি আমাকে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানালে চলতি বছরের ১৩ আগস্ট আমি বিষপান করি। এযাত্রায় ভাগ্যক্রমে বেঁচে গিয়ে ২০ আগস্ট ইরনের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে থানায় যাই। থানার এসআই রফিক আমাকে আটকের ভয় দেখিয়ে ফিরিয়ে দেন। গতকাল বিয়ের দাবীতে তার ঘরে অনশন করি। পরে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আমাকে থানায় নিয়ে আসে। রিমার একটাই দাবি ‘আমি ইরনের স্ত্রীর মর্যাদা চাই’।
থানার এসআই রফিক জানান, মেয়েটি (রিমা) যখন থানাতে এসেছিল, সে তখন অসুস্থ ছিল। তাকে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে থানাতে আসতে বলেছি।
এব্যাপারে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য ইরন মিয়া বলেন, আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ মিথ্যা।
ইউপি সদস্য ইরন মিয়ার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা স্বীকার করে বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইন চার্জ শামসুদ্দোহা পিপিএম বলেন, এ ঘটনায় তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
from সিলেট – দ্যা গ্লোবাল নিউজ ২৪ http://ift.tt/2hfDNjW
September 21, 2017 at 01:13AM
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন